শিরোনাম
◈ দে‌শে রাজ‌নৈ‌তিক শূন‌্যতা তৈ‌রির ল‌ক্ষ্যে জাতীয় পার্টির স‌ঙ্গে বিরো‌ধে যায় এনসিপি: বি‌শ্লেষক‌দের অ‌ভিমত ◈ আজ সন্ধ‌্যায় প্রী‌তি ম‌্যা‌চে ভুটানের বিরু‌দ্ধে মা‌ঠে নাম‌ছে বাংলা‌দেশ, দেশের মাটিতে হামজা চৌধুরীরর অভিষেক ◈ জাতীয় দ‌লের ক্রিকেটার‌দের মনোবিদ দেখানোর পরামর্শ নান্নুর ◈ আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন  আর‌সি‌বি পে‌লো ২০ কোটি রু‌পি, রানার্সআপ পাঞ্জাব ১৩ কোটি ◈ বি‌সি‌বি থে‌কে ফারুক আহমেদকে অপসারণ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্টের রুল ◈ জাতীয় পার্টি-এনসিপি বিরোধের কারণ কী? ◈ ড. ইউনূসের ব্রিটেন সফর: রাজা চার্লসের হাত থেকে পুরস্কার, সম্ভাব্য বৈঠক কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ◈ শেষ পর্যন্ত স্বপ্নপূরণ! ১৮ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে কোহলির বেঙ্গালুরুর শিরোপা জয় ◈ শেখ মুজিবসহ চার শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল ◈ সংস্কারের প্রত্যাশার তুলনায় অন্তর্বর্তী সরকারের সময়সীমা যথোপযুক্ত না: আইন উপদেষ্টা

প্রকাশিত : ০২ জুন, ২০২৫, ০৭:২৫ বিকাল
আপডেট : ০৪ জুন, ২০২৫, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহার, সাশ্রয় হবে ৭ হাজার কোটি টাকা

মনজুর এ আজিজ : এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করার মাধ্যমে বছরে অন্তত ৭ হাজার কোটি সাশ্রয় হবে। ফলে ঘাটতি কমে আসবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। ঘাটতি সামাল দিতে এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের জন্য অনেকদিন ধরেই দেন দরবার চলে আসছিল।

জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরে ৮২ কার্গো এলএনজি আমদানি বিবেচনা করে গ্যাসে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয় ৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু গ্যাসের ঘাটতি সামাল দিতে গিয়ে ৯৮ কার্গো আমদানির পরিকল্পনা নেয় সরকার। এতে ঘাটতি ১৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যে কারণে ঘাটতি সামাল দিতে এলএনজি আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট (প্রাক্কলিত) ৭ হাজার কোটি টাকা প্রত্যাহারের দিকে তাকিয়ে ছিল পেট্রোবাংলা।

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, দেশীয় উৎস থেকে পাওয়া গ্যাসের গড় মূল্য ৬.০৭ টাকা, আর ২৫ শতাংশ চড়া দামে আমদানির পর দর দাঁড়াচ্ছে ২৯.৭২ টাকা। এদিকে গড় বিক্রয় দর রয়েছে ২২.৬৪ টাকা। ফলে ঘনমিটার প্রতি ৭ টাকা ৮ পয়সা হারে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। ২৫ শতাংশ আমদানি করতে গিয়েই দাম সামাল দেওয়া কঠিন হচ্ছে। এতে বাড়ছে বিপুল পরিমাণ ঘাটতির চাপ। সেই সাথে পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবিষ্যতে ৭০ শতাংশ আমদানি করতে গেলে বিপুল পরিমাণ ঘাটতিতে পড়বে দেশ। যা মোকাবেলা করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। 

সূত্র মতে, শেভরন বাংলাদেশকে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম দেওয়া হয় ২.৭৬ ডলার, আর তাল্লোর সঙ্গে চুক্তি রয়েছে ২.৩১ ডলার। বহুজাতিক কোম্পানির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ৩টি কোম্পানির কাছ থেকে গ্যাস কিনে থাকে পেট্রোবাংলা। সিলেট গ্যাস ফিল্ড কেম্পানি ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানিকে প্রতি হাজার ঘনফুটের দাম দেওয়া হয় ২৮ টাকার মতো, বাপেক্সকে দেওয়া হয় ১১২ টাকার মতো। অন্যদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে কাতার থেকে আমদানি করা এলএনজির দাম পড়েছে ১০.৬৬ ডলার ও ওমান থেকে আনা এলএনজির দাম পড়েছে ১০.০৯ ডলার।

এক সময় দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে ২৮০০ মিলিয়ন পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে। মজুদ কমে আসায় অনেক কূপেই উৎপাদন কমে গেছে। বর্তমানে ১৮৭০ মিলিয়নে নেমে এসেছে দেশীয় উৎপাদন। বিদায়ী বছরে ২৫ শতাংশ গ্যাস আমদানি করা হয়েছে, দেশীয় উৎস থেকে যোগান এসেছে ৭৫ শতাংশ। ২০৩০ সালে দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ ৩০ শতাংশে নেমে আসবে, আর আমদানির অনুপাত বেড়ে ৭০ শতাংশ হবে বলে মনে করছে পেট্রোবাংলা।

বাংলাদেশের গ্যাস সম্পদ নিয়ে এক সময় বলা হলো গ্যাসের ওপর দেশ ভাসছে, আবার আরেক সময় বলা হলো গ্যাস নেই আমদানি করতে হবে। এই রাজনৈতিক খেলার কারণে অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনও তিমিরেই রয়ে গেছে। শুধু রাজনৈতিক কথা চালাচালিতেই উঠানামা করছে দেশের গ্যাস সেক্টর। ১৯৯৫ সালের জ্বালানি নীতিমালায় বছরে ৪টি অনুসন্ধান কূপ খনন করার কথা বলা হয়। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারেনি কোনো সরকার। 

তবে অন্তবর্তীকালীন সরকার জ্বালানি খাতকে ব্যাপক গুরুত্ব প্রদান করেছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ খাতের বাজেট বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ খাতে ২ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, সরকার নিজস্ব উদ্যোগে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৭-২৮ অর্থবছরের মধ্যে বাপেক্স কর্তৃক জরিপকাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। মধ্যমেয়াদে বাপেক্সের রিগ দিয়ে ৬৯টি কূপ খনন ও ৩১টি কূপের ওয়ার্কওভারের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, এ বছরের মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো, ২০২৮ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ১৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কূপ খননের ওই পরিকল্পনা উচ্চাভিলাসী মনে করা হলেও বাস্তবায়ন জরুরি বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এখন থেকেই কূপ খননের মাধ্যমে দেশীয় গ্যাসের অনুসন্ধান কর্মযজ্ঞ না চালালে আমদানি নির্ভরতায় বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয়ের মাধ্যমে মারাত্নক ক্ষতির মধ্যে পড়বে বাংলাদেশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়