শিরোনাম
◈ রাজনীতি নিয়ে কোনো আলাপ করেননি ডোনাল্ড লু: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ রাবি ছাত্রলীগের চার নেতা বহিষ্কার ◈ র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টকে সুপারিশ করা হবে: ডোনাল্ড লু ◈ সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ◈ ঢাকার ২৬টি হোটেল-রেস্তোরাঁয় পুলিশ সদস্যদের জন্য মূল্য ছাড়  ◈ ‘জেনোসাইড জো’: যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভ বাইডেনের পুনর্নির্বাচনকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে ◈ গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড দেশের ওপর ঋণের বোঝা বাড়াচ্ছে: টিআইবি ◈ তাসকিনকে সহ অধিনায়ক করে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ঘোষণা ◈ আজ ঘরে ফিরবেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক ◈ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের কনডেম সেল নিয়ে  রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে রাষ্ট্রপক্ষ

প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১০:২৯ রাত
আপডেট : ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১০:২৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পুরো সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছে না ৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকার সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং

মনজুর এ আজিজ: [২] কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় ৯০ একরের বেশি জমির ওপর বাংলাদেশ ও চীনের জিটুজি প্রকল্পের আওতায় ৮ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ডাবল পাইপলাইনযুক্ত সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্প (এসপিএম)। কিন্তু দেশের শোধনাগারের সক্ষমতা না বাড়ানোয় এটিকে পূর্ণ ক্ষমতায় কাজে লাগানো যাচ্ছে না। নতুন স্থাপন করা এসপিএম এখনো তার ক্ষমতার ৬০ শতাংশও পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

[৩] বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) এক কর্মকর্তা জানান, এসপিএম প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রায় ৯ বছর সময় লেগেছে এবং বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটি কার্যকর করা হয়েছে। তবে চলতি বছরের জুনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হবে।

[৪] কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি এসপিএম প্রকল্প চালু হওয়ার পর এখন আমদানি করা পেট্রোলিয়াম মাদার ভেসেল থেকে স্টোরেজ ট্যাঙ্কে নিতে সময় লাগে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এসএমপি স্থাপনের আগে আমদানি করা জ্বালানি লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে পতেঙ্গা এলাকায় ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের তেলবাহী ট্যাংকারে আনতে ১১ থেকে ১২ দিন সময় লেগে যেত, যা ছিল অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমানে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পর বহির্ঘাটে নোঙর করা মাদার ভেসেল থেকে জ্বালানি বহনের জন্য কোনো লাইটারেজ প্রয়োজন হয় না। এখানে ১ লাখ ৮০ হাজার কিলোলিটার অপরিশোধিত তেল ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি ট্যাঙ্ক এবং ১ লাখ ৮ হাজার কিলোলিটার ফার্নিশড তেল ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি ট্যাংক রয়েছে।

[৫] কর্মকর্তারা জানান, দেশের একমাত্র তেল পরিশোধনাগার পতেঙ্গার ইস্টার্ন রিফাইনারির বর্তমান সক্ষমতা ৩০ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করার জন্য ইআরএল-২ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। কিন্তু গত ১৪ বছরেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) উদ্যোগ নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়নি। 

[৬] জানা গেছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে সই করা চুক্তির মাধ্যমে প্রস্তাবিত ইআরএল ইউনিট-২ এর জন্য ৩৭১ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ফ্রন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন (ফিড) তৈরি করতে স্বেচ্ছায় যুক্ত হওয়া ফরাসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি টেকনিপের কারিগরি প্রস্তাব বিবেচনা করছে বিপিসি। কিন্তু টেকনিপ চলে যাওয়ায় দেশি একটি কোম্পানি সরকারকে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে ইআরএল-২ প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজি করানোর চেষ্টা করছে। যদিও ওই বেসরকারি কোম্পানির এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের কোনো অভিজ্ঞতা নেই।

[৭] নতুন কোম্পানি থেকে ৩০ লাখ মেট্রিক টন যোগ করে কোম্পানির সক্ষমতা ৪৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করতে ২০১০ সালে ইউনিট-২ প্রকল্পটি হাতে নেয় বিপিসি। ১৯৬৮ সালে একই ফরাসি কোম্পানির স্থাপিত ইআরএলের ইউনিট-১ এর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন। এদিকে একটি ভারতীয় সংস্থা দাবি করেছে, ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আগামী তিন বছরের জন্য যুক্ত হবে।

[৮] কর্মকর্তারা জানান, ২০১০ সালে বিপিসি যখন ইআরএল ইউনিট-২ এর পরিকল্পনা গ্রহণ করে তখন প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার কোটি টাকা। এরপর সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ১৬ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। তবে এখন ব্যয় ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এদিকে বিপিসি ব্যয়ের পুনর্বিবেচনার জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের (ইএমআরডি) মাধ্যমে একটি নতুন উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে।  

[৯] উল্লেখ্য দেশে প্রায় ৬-৬.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন পেট্রোলিয়াম ব্যবহার হয়, যার মধ্যে ৪.৮ বা ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম হিসেবে আমদানি করা হয় এবং বাকি ১.২ বা ১.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল হিসেবে ইআরএল থেকে পরিশোধন করা হয়।

[১০] এ প্রসঙ্গে এসপিএমের প্রকল্প পরিচালক শরীফ হাসানাত বলেন, শোধনের জন্য অপরিশোধিত তেলের ঘাটতির কারণে প্রকল্পের ৩০-৪০ শতাংশ সক্ষমতা অব্যবহৃত রয়ে গেছে। তিনি জানান, প্রতি বছর প্রায় ৪৫ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত তেল এবং আরও ১৫ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল বিদেশ থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ। আমদানি করা তেল পরিশোধনের মাধ্যমে এসপিএম প্রকল্পটি এখন তার ক্ষমতার ৬০ শতাংশ ব্যবহার করতে পারছে। যদি আরও অপরিশোধিত তেল আমদানি করা হয় তবে এসপিএমের ব্যবহার আরও বাড়ানো যাবে বলেও জানান তিনি। সম্পাদনা: এল আর বাদল

এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়