শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৫ মে, ২০২৪, ০৫:০১ সকাল
আপডেট : ১৫ মে, ২০২৪, ০৫:০১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে রবীন্দ্রনাথকে বুঝবে, অন্ততঃ বোঝার চেষ্টা করবে, তার আশাবাদী না হয়ে উপায় নেই 

শামসুদ্দিন পেয়ারা

শামসুদ্দিন পেয়ারা: রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এক শ্রেণির বাঙালির এতো যে আনন্দউল্লাস ও হাহাকার, এত যে তারা উবাফাল পাড়ে সারা বৈশাখ মাস, আমার খুব জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করে এই বকরিগুলান, তোরা রবীন্দ্রনাথের কী দেখে, কী বুঝে, কী জেনে, চোখ বন্ধ করে মঞ্চে বসে মাথা দোলাস? রবীন্দ্রনাথের তোরা কী বুঝিস? তাঁকে অনুসরণ করিস? রবীন্দ্রনাথকে অনুসরণ করা মানে কি তা বুঝিস? তোদের জীবনে, সংসারে, শয়নে স্বপনে জাগরণে রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতি কতটুকু? সকাল বেলা উঠে দাঁত মাজার আগে সাগর সেন আর স্বাগতালক্ষ্মীর গাওয়া দুটো গান শুনে, গল্পগুচ্ছের কয়েকটা পাতা উল্টে আর সঞ্চয়িতার কয়েকটা কবিতা মুখস্থ করেই তুই ভাবছিস তুই বুঝি রবীন্দ্রনাথকে কবিগুরু, গুরুদেব বা বিশ্বকবি বলার যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেছিস? 

কেউ কেউ আবার রবিবাবু বলার মতো বেয়াদবিও দেখাস। অনেকটাই যেন বঙ্গবন্ধুকে টুঙ্গিপাড়ার মজিবর মেয়া বলা, আর কী। আমরা যদি প্রতিদিন নিয়মিত একটু একটু করে রবীন্দ্রনাথ পাঠ করি, হোক তা দিনে একটিমাত্র ছত্র বা পংক্তি, হোক তা তাঁর জীবনের অতি তুচ্ছ একটি ঘটনার বর্ণনা, তাঁর কষ্টের ও আনন্দের এক মুহূর্তের একটুকু ঝলক তা দিয়ে যদি নিজেকে সামান্য উজ্জ্বল করে তুলতে পারি, নিজের মনোরাজ্যের আঁধারকে এক পলকের জন্য বিতাড়িত করতে পারি, তাঁর কবিতার বোধিদ্রুমতলে এক মুহূর্তের জন্য আশ্রয় নিয়ে নিজেকে মহাজীবন ও মহাজগত সম্পর্কে সহস্র প্রশ্ন করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারি, তাঁর গানের স্নায়ুশীতলকরা সুরলহরীতে সাঁতার কেটে দেহমন জুড়িয়ে নিয়ে নিজের ছায়ার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করতে পারি, তুমি কে? 

আমার সাথে তোমার কীসের ও কতদিনের সম্পর্ক? তখন না হয় নিজেকে রবীন্দ্রসভায় বা তাঁর স্মরণবাসরে যাবার ও গিয়ে কথা বলার উপযুক্ত ভাবা যায়। তেমন লোকেরা কই? তাঁরা নিশ্চয় আছেন। অতীতকে ছিলেন। আগামিতেও হবেন। যে রবীন্দ্রনাথকে বুঝবে, অন্ততঃ বোঝার চেষ্টা করবে, তার আশাবাদী না হয়ে উপায় নেই। লেখক: মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়