শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৩:০৩ রাত
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৪:০৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজধানী থেকে চুরি মোটরবাইক যেভাবে বিক্রি হচ্ছে জেলা উপজেলায় 

ফাইল ছবি

মাসুদ আলম: রাজধানীতে প্রায় প্রতিদিনই চুরি হচ্ছে মোটরসাইকেল। এই চুরির সঙ্গে সক্রিয় রয়েছে আলাদা আলাদা চক্র। চক্রের সদস্যরা মাস্টার কি (চাবি) দিয়ে একটি মোটরসাইকেল ৩ থেকে ৪ সেকেন্ডের মধ্যেই চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর এসব মোটরসাইকেল বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও গ্রামে ৩০-৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়।  গ্রাম এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কম থাকায় লাইসেন্স ছাড়াই অনেকে মোটরবাইক চালাতে পারে। সেই সুযোগে বাইকগুলো কমদামে গ্রামে বিক্রি করে চক্রটি। এর সঙ্গে বাইক ব্যবসায়ীরাও জড়িত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পরও বন্ধ হচ্ছে না বাইক চুরি। 

সম্প্রতি ১২টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ খালেক হাওলাদার ওরফে সাগর আহম্মেদ নামে এক চোরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের উত্তরা বিভাগ। খালেক গত ১৫ বছরে এক হাজার মোটরসাইকেল ঢাকা থেকে চুরি করেছে। এর আগে একই চক্রের কাছ থেকে গত মাসে আরও ৪০টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে ডিবি।

গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর আজিমপুর কবরস্থানের সামনে এক ব্যক্তি নীল রঙের একটি মোটরসাইকেল রেখে নিকটাত্মীয়ের দাফন করতে যান। এক ঘণ্টা পর ফিরে এসে তিনি মোটরসাইকেলটি নেই। পরে গত জানুয়ারি মাসে ১০টি বাইকসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে লালবাগ থানা পুলিশ। চক্রটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বাইক চুরি করে নিয়ে যায়।  এছাড়া গত মাসে ৩টি বাইকসহ চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে মিরপুর থানা পুলিশ। চক্রের প্রধান বাইক জসিম ১০ বছরে ৫ শতাধিক বাইক চুরি করে। 

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানায়, বাইক চুরি হওয়ার পর কয়েক হাত বদল হয়ে তা চলে যায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সে ক্ষেত্রে প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করা আরও কঠিন। সক্রের সদস্যরা গ্রেপ্তার হলেও আবার জেল থেকে বেরিয়ে একইভাবে চুরির কাজ করে। তাদের জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্যও আলাদা লোক থাকে। চক্রের কোন সদস্য জেলে থাকলে তার পরিবারের ব্যয়ও বহন করে চক্রের প্রধান। বাইক ভাল করে লক করা  ও  সিসিটিভির আওতায় রাখার পরামর্শ দেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। 

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, চোরাই মোটরসাইকেল যার কাছে পাওয়া যাবে তাকেই চোর হিসেবে সাব্যস্ত এবং গ্রেপ্তার করা হবে। কাগজপত্র নেই এমন মোটরসাইকেল কেনা অবৈধ। গত মাসে তুরাগ এলাকা থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালিয়ে খালেককে গ্রেপ্তার করা। তার তথ্য মতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার পূর্ব বাজারের একটি গ্যারেজ থেকে ১২টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। 
তিনি আরো বলেন, ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল চুরির পর ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও হাওর অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কম দামে বিক্রি হয়। এসব চোরাই মোটরসাইকেল কাগজপত্র না থাকলেও কিনে নিচ্ছেন অনেকে। যে দোকানে ডুপ্লিকেট (নকল) চাবি বানানো হয় তারাও চোরচক্রের সঙ্গে জড়িত। 

হারুন অর রশীদ বলেন, কষ্টের টাকায় কেনা মোটরসাইকেল যার চুরি হয় সেই বোঝেন। তাই আমি অনুরোধ করবো, গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল চুরি হলেই তাৎক্ষণিক নিকটস্থ থানায় জিডি করুন। এরপর জিডির কপিটি নিয়ে ডিবির টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মোটরসাইকেল উদ্ধারে চেষ্টা করতে পারবো। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়