আজিজুল ইসলামঃ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে শেষ পর্যন্ত দুইজন প্রার্থীকে ধানের শীষের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। সোমবার বিকেলে বাঘারপাড়া উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব হোসেন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর আসনটিতে দলের চূড়ান্ত প্রার্থী নিয়ে তৈরি হওয়া দীর্ঘদিনের ধোঁয়াশা আরও ঘনীভূত হলো।
বিকেল সাড়ে চারটায় বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ভুপালি সরকারের কাছে নিজের মনোনয়নপত্র হস্তান্তর করেন টিএস আইয়ুব। এর আগেই দলের দ্বিতীয় প্রার্থী হিসেবে অভয়নগরের মতিয়ার রহমান ফারাজি একই আসনে ধানের শীষের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মনোনয়ন নিয়ে অভ্যন্তরীণ নাটকীয়তা যশোর-৪ আসনে বিএনপি শুরুতেই দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুবকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল। তবে পরবর্তীতে নাটকীয়ভাবে অভয়নগরের মতিয়ার রহমান ফারাজিকেও দলীয় মনোনয়নপত্র প্রদান করা হয়। দলের এই দ্বৈত সিদ্ধান্তের ফলে বাঘারপাড়া, বসুন্দিয়া ও অভয়নগর এলাকার নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল।
টিএস আইয়ুবের সমর্থকদের অভিযোগ, একটি পক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার প্রার্থিতা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আসছিল। তবে সোমবার সশরীরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে তিনি সেই সব আলোচনার জবাব দিয়েছেন বলে মনে করছেন তার অনুসারীরা।
বাবার বিপক্ষে ছেলে ও জামায়াত প্রার্থী এই আসনে রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাজিদ হোসেনের মনোনয়ন দাখিল, যিনি টিএস আইয়ুবের নিজের ছেলে। এছাড়া এই আসন থেকে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে গোলাম রসুলও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সব মিলিয়ে যশোর-৪ আসনে এখন পর্যন্ত মোট চারজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা পড়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নির্বাচনী সমীকরণ ও পরবর্তী ধাপ একই আসনে একটি দল থেকে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার কৌশলটি বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই গ্রহণ করে থাকে, যা মূলত ‘ডামি’ বা বিকল্প প্রার্থী হিসেবে পরিচিত। তবে শেষ পর্যন্ত কার মনোনয়ন বৈধ হবে বা কে প্রতীক পাবেন, তা চূড়ান্ত হবে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের শেষ দিনে।
ততদিন পর্যন্ত যশোর-৪ আসনের রাজনীতিতে টিএস আইয়ুব বনাম মতিয়ার ফারাজির এই দ্বৈরথ এবং পিতার বিরুদ্ধে পুত্রের অবস্থান আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।