শিরোনাম
◈ গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে দুর্বৃত্তের আগুন ◈ তিতাস গ্যাস ফিল্ডে ওয়েলহেড কম্প্রেসর স্থাপন, জাতীয় গ্রিডে বাড়ল ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ◈ দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণে হতাহত, ভারতের পাশে থাকার বার্তা বাংলাদেশের ◈ প্রবাসীদের বড় সুখবর দিল ওমান সরকার ◈ জেদ্দায় স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ–সৌদি হজ চুক্তি: ৭৮ হাজার ৫০০ জনের কোটা নির্ধারণ ◈ ৪৯তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ ◈ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর পেলেন ‘সি’ গ্রেড: গ্লোবাল ফাইন্যান্সের মূল্যায়ন ◈ স্বর্ণের দাম আবারও বাড়ল: দেশে ২২ ক্যারেটের ভরি এখন ২ লাখ ৮ হাজার টাকার বেশি ◈ সীমান্ত পাড় হওয়ার চেষ্টা, পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গুলি করা সেই দুই শুটার গ্রেপ্তার ◈ ২২ বিচারপতিকে স্থায়ী নিয়োগ

প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:৩১ রাত
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০২৫, ০১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাত্র ৪ মিনিটে পেট্রোল ঢেলে বাসে আগুন, সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করলো পুলিশ

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ভালুকজান এলাকায় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এতে দেখা গেছে, দাঁড়িয়ে থাকা বাসে পেট্রোল ঢেলে প্রথমে বাসের সামনে আগুন ধরানো হয়। পরে একটি লাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বাসের ভেতর।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ কাজে জড়িত ছিলেন তিন ব্যক্তি। এতে বাসটি ঘটনাস্থলে এসে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে আগুন লাগানো সময় লেগেছে মাত্র চার মিনিট।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সিসিটিভি উদ্ধারের বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিন বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম।

এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে ফুলবাড়ীয়া-কেশরগঞ্জ সড়কের ভালুকজান এলাকায় মেসার্স ইসলাম ফিলিং স্টেশনে আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় বাসচালক জুলহাস মিয়া (৩৫) নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার ভালুকজান গ্রামের আবদুল বারেক ও সাজেদা আক্তার দম্পতির ছেলে।

এ ছাড়া আগুনে দগ্ধ হয়েছেন বাসের ভেতরে থাকা দুজন। তারা হলেন উপজেলার চক রাধাকানাই গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও তার মা শারমিন সুলতানা। তারা দুজন ঢাকা থেকে ফিরেছিলেন। গভীর রাত হওয়ায় তারা বাড়িতে না গিয়ে বাসে ভোর হওয়ার অপেক্ষা করছিলেন। আগুন দেওয়ার পর মা ও ছেলে দগ্ধ অবস্থায় বাস থেকে নামেন। পরে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায়- বাসে আগুন দেওয়ার ওই ঘটনা ইসলাম ফিলিং স্টেশনের বিপরীত দিকে একটি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের শো-রুমের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।

এতে দেখা যায়, সোমবার রাত ৩টা ১০ মিনিটের দিকে বাসটি সেখানে এসে দাঁড়ায়। রাত ৩টা ১৩ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আলম এশিয়া পরিবহনের বাসের সামনে যান দুজন ব্যক্তি। একজনের মাথায় ছিল টুপি, অন্যজনের মুখ ও মাথা কাপড় দিয়ে বাধা। এর ৩১ সেকেন্ড পর পেছন দিক থেকে আসেন আরও এক ব্যক্তি। তাদের সঙ্গে ছিল একটি বোতল। ওই বোতলের তরল দাহ্য পদার্থ বাসটির সামনে ও ভেতরে চালকের আসনে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। প্রথমে বাসের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর একটি লাঠিতে আগুন ধরিয়ে সেটি বাসের ভেতরেও দেওয়া হয়। পরে দ্রুত ওই তিনজন চলে যান।

আগুন দেখে দ্রুত লোকজনকে খবর দেন ফিলিং স্টেশনটির ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আমাদের পাম্পের সামনে প্রায়ই বাস থাকে। এখান থেকেই তেল নেয়। সোমবার রাত ৩টার ১০ মিনিট আগে বাসটি এসে দাঁড়ায়। এর কিছু সময়ের মধ্যেই বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। পাম্পের ভেতরের দিকে এ ঘটনা ঘটলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেত।’

এদিকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে থাকা শো-রুমের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন তিনি। 

পরে পুলিশ সুপার বলেন, ১১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত আওয়ামী লীগ লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগ, অঙ্গসংগঠন ও এবং তাদের নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার রাত ৩টার পর মুখোশ পরা তিনজন অজ্ঞাত লোক পেট্রোল জাতীয় দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে বাসে আগুন দিয়েছেন।

কাজী আখতার উল আলম আরও বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি, কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এগুলো উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করছি। আমরা দ্রুত মামলা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেব।’

ফুলবাড়ীয়া শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বাবুল শিকদার বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা যদি হয়, তাহলে আমরা কিভাবে গাড়ি চালাবো? রাস্তায় গাড়ি রেখে চালক-হেলপার একটু ঘুমালে যদি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে কিভাবে চলবো। এ ঘটনার পর চালকরা আতঙ্কে আছেন। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই, আমরা নিরাপত্তা চাই।’

পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম বলেন, মালিক সমিতির লোকজনের সঙ্গে সভা হবে। পুলিশের পাশাপাশি তারা নিজেরাও যেন গাড়িগুলোর নিরাপত্তা দেন। এলোমেলোভাবে গাড়ি না রেখে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা প্রয়োজন। এসব বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে। 

সূত্র: ইত্তেফাক 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়