প্রমথ রঞ্জন সরকার,কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় দশম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ৩লক্ষ টাকায় মিমাংসা করার অভিযোগ উঠেছে এলাকার মাতুবরদের বিরুদ্ধে।
গত শনিবার (৮ নভেম্বর) সালিশ বৈঠক বসিয়ে তারা এ ঘটনার মিমাংসা করেন। তখন ধর্ষককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সালিশ নিয়ে মাতুবরদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সালিশ বৈঠকে অংশ নেওয়া মাতুববর সালিশ করার কথা স্বীকার করেছেন। ছাত্রীর পরিবার জরিমানার টাকা পাননি বলে জানিয়েছে।
গত ১নভেম্বর কোটালীপাড়া উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের নৈয়ারবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, নৈয়ারবাড়ি গ্রামের দশম শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাওয়া আসার পথে একই গ্রামের প্রশান্ত বৈদ্যের ছেলে প্রনয় বৈদ্য উত্ত্যক্ত করে আসছিল। গত ১ নভেম্বর সকাল ১০ টার দিকে ওই ছাত্রী বাড়ির সামনের রাস্তায় আসলে প্রনয় বৈদ্যসহ অন্যান্যরা জোর করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাকে ওই গ্রামের নিরঞ্জন বাড়ৈর বাড়িতে রেখে ধর্ষণ করে।
গত ৮ নভেম্বর বিকেলে নৈয়ারবাড়ি গ্রামের মাতুববর তমাল বৈদ্য, অতুল রায়, কমলেশ বৈদ্য, জয়ন্ত বাড়ৈ সহ অন্যান্যরা ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে সালিশ বৈঠক বসায়। সালিশে ধর্ষককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে আদায় করা হয়। এ বৈঠকের সিদ্ধান্ত দু’পক্ষের উপস্থিতিতে ৩শ’ টাকা মূল্যের নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত-পড়িত করা হয়। প্রভাবশালীরা ৩ লাখ টাকা আদায় করে শিক্ষার্থীর পরিবারের হাতে ২ লাখ টাকা ধরিয়ে দেয়। ১ লাখ টাকা মাতবররা হাতিয়ে নেয়। এ নিয়ে মাতবরদের প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হন। তাই এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান।
সালিশ বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করে মাতুববর অতুল রায় বলেন, বিষয়টি স্ট্যাম্পে লিখে সমাজিকভাবে মিমাংসা হয়েছে। ২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে বলে শুনেছি । লেনদেনের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না।
শিক্ষার্থীর মা মাতুবরদের কাছ থেকে টাকা পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তবে অভিযুক্ত প্রণয় বৈদ্যর বোন বিপাশা বৈদ্য বলেন, সালিশ বৈঠক শেষে জরিমানার ৩ লাখ টাকা মাতবরদের হাতে তুলে দিয়েছি। দু’ পরিবারে কাছে সালিশ বৈঠকের লিখিত স্ট্যম্প আছে।
কোটালীপাড়া থানার ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। সোমবার (১০ নভেম্বর) ঘটনা জানার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি।