জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর সম্প্রতি পুলিশি হামলার প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে লালমনিরহাট।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা লালমনিরহাট জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশনমোড় গোল চত্বরে এক বিশাল মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
প্রাথমিক বিূ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা দির্ঘদিন ধরে বেতন বৈষম্য নিরসনের জন্য আন্দোলন করে আসছেন। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকদের যে গ্রেড বৈষম্য রয়েছে, তা দূর করে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কাজের পরিধি বিবেচনায় দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করার দাবি তাদের।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরিতে সহকারী শিক্ষকরাই মূল ভূমিকা পালন করে আসছেন, অথচ আমরাই অবহেলিত। মানববন্ধনে শিক্ষকদের কণ্ঠ ছিল ক্ষোভে ভরা।
শিক্ষকরা আরও বলেন, তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ঢাকায় শিক্ষকদের ওপর যেভাবে লাঠিচার্জ, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে, তা নজিরবিহীন ও লজ্জাজনক।
লালমনিরহাটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক সহকারী শিক্ষক মোঃ আব্দুল জলিল তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন,জাতি গড়ার কারিগরদের উপর এমন বর্বরতা কোনো সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না। আমরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নির্মাতা। আমাদের সম্মান রক্ষা করতে যারা ব্যর্থ, তাদের বিচার চাই।
তিন দফা সুনির্দিষ্ট দাবি
মানববন্ধন থেকে লালমনিরহাট জেলার আন্দোলনের সমন্বয়ক জাহিদুল হাসান সমন্বয়ক, শামসুজ্জামান লিজু্ সহ অন্যান্য শিক্ষকরা সরকারের প্রতি দ্রুত তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দশম গ্রেড অবিলম্বে বাস্তবায়ন ও দ্রুত সহকারী শিক্ষকদের জন্য দশম গ্রেড ঘোষণা করা হোক। আহতদের সুচিকিৎসা ও পুলিশি হামলায় আহত সকল শিক্ষকের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হোক। হামলাকারীদের বিচার ও শিক্ষকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
শিক্ষক নেতারা আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার যদি অবিলম্বে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে না নেয় এবং হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিত না করে, তবে আগামীতে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি, যেমন- কর্মবিরতি বা বিদ্যালয় বর্জন করতে বাধ্য হবেন।