আজিজুল হক,বেনাপোল(যশোর) : যশোরের শার্শায় মানবাধিকার সংস্থা 'রাইটস যশোর' এর ত্রৈমাসিক তথ্য বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার(১০ নভেম্বর) সকালে শার্শা উপজেলা অডিটোরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাইটস যশোরের প্রোগ্রামার সরোয়ার হোসেনের সঞ্চলনায় সভায় প্রধান অতিথী ছিলেন, শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান।
এসময় বিশেষ অতিথী হিসাবে অংশ নেয়,বেনাপোল ইমিগ্রেশন,পোর্টথানা,সমাজ সেবা,উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও সাংবাদিক প্রতিনিধিরা।
সভায় নারী,শিশু পাচার ও বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ এবং হাফওয়ে শেল্টার হোমের নানান কার্যক্রম নিয়ে অতিথীরা মত বিনিময় করেন।
প্রধান অতিথী কাজী নাজীব হাসান বলেন, বেনাপোলে গঠিত হাফ ওয়ে শেল্টার হোমে নারী ও শিশুদের মানবাধিকার রক্ষায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা, ছেলেটারিং, মানসিক উন্নয়নমূলক খেলাধুলা এবং আয়ের উৎস তৈরিতে সহায়ক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।"মানবাধিকার বিষয়ে যেকোনো সহযোগিতায় সরকার সামনের দিনেও পাশে থাকবে।
সভায় অনান্যরা বলেন, অবৈধ প্রক্রিয়ায় বিদেশে যাওয়া মানুষগুলোই বেশি পাচারের শিকার হয়। সে কারণে বৈধ প্রক্রিয়ায়, কর্মদক্ষ হিসেবে মানুষকে বিদেশে যাওয়ার জন্য সচেতনতার কাজ জোরালো করতে হবে।
জানা যায়, মানব পাচারের শিকার নারী,শিশুদের প্রত্যাবাসনের পর নিজ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সাময়িক আশ্রয় প্রদানের লক্ষে রাইটস যশোর সীমান্তবর্তী বেনাপোলে একটি হাফওয়ে শেল্টার হোম স্থাপন করেছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত KOICA ও IOM
রাইটস যশোর ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৩ সালের ২১ মার্চ সমাজসেবা অধিদপ্তরে ও ১৯৯৮ সালের ২৬ অক্টোবর এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে নিবন্ধিত হয়। সংস্থাটি দীর্ঘ তিন দশক ধরে দেশের সীমান্তবর্তী ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মানব পাচার প্রতিরোধ, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধে কাজ করছে। রাইটস যশোরের কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে KOICA ও IOM এর কারিগরী সহয়তায় প্রক্লটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।শেল্টারহোমটিতে অবস্থান কালিন সময় ভারত থেকে প্রত্যাগত ও দেশে উদ্ধারকৃত মানব পাচারের শিকার নারী,শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়,সামাজিক, মনোসামাজিক সেবা ও পরিবারের সাথে পূর্ণ -একত্রিকরনে ভূমিকা রাখছে।
তথ্য আরো বলছে, KOICA ও IOM এ সংস্থার ভিশন হলো এমন একটি সমাজ গড়ে তোলা, যেখানে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল মানুষ সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে নিরাপদ থাকবে। নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংস্থাটি গঠন করেছে Counter Trafficking Women’s Forum (CTWF), যারা ট্রাফিকিং ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রাইটস যশোর বর্তমানে ৭৭ জন পূর্ণকালীন স্টাফ, ৪ জন পার্টটাইম অ্যাডভোকেট এবং ৩২০ জন স্বেচ্ছাসেবকের সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে। সংস্থার কার্যক্রম বর্তমানে ৬টি জেলায় পরিচালিত হচ্ছে এবং সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, লিবিয়া, লেবাননসহ বিভিন্ন দেশে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
প্রতিষ্ঠানটির সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে জরুরি আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা, মনোসামাজিক কাউন্সেলিং, শিশু ও নারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়, পুষ্টিকর খাবার, বিনোদনমূলক কার্যক্রম, আইনি সহায়তা ও সক্ষমতা উন্নয়ন।