শিরোনাম
◈ তোমার মাথার দাম ১০ কোটি, ফোন করে বলেছিল আমাকে : সালাউদ্দিন আম্মার ◈ এবার ভেনেজুয়েলায় অভিযান চালাতে সিআইএকে অনুমোদন ট্রাম্পের ◈ ইরানের নতুন ড্রোন 'আরশ-২' ইসরাইল-আমেরিকার যেকোনো ঘাঁটি ধ্বংসের সক্ষমতা! ◈ ‌দে‌শের রাজনী‌তি চল‌ছে কোন প‌থে,  নিরপেক্ষতার প্রশ্নে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি কি সরকারের মুখােমুখি? ◈ ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের বিরুদ্ধে মামলা, হতে পারে জেল ◈ ব্রা‌জিল নভেম্বরে সেনেগাল ও তিউনিশিয়ার বিরু‌দ্ধে প্রীতি ম্যাচ খেলবে ◈ আগামী বছরের টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি বিশ্বকাপের ২০ দল চূড়ান্ত, শেষ জায়গা দখল করলো কারা?  ◈ বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি একাই ছাড়িয়ে চলেছে ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও মরক্কোর মোট রপ্তানি ◈ ইসি’র পরিকল্পনা: বড় জেলায় একাধিক রিটার্নিং কর্মকর্তা, দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের হাতে ◈ জুলাই সনদ বাংলাদেশের জন্য একটা বিরাট মাইলফলক: খালেদা জিয়া

প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০২৫, ০৯:১৪ রাত
আপডেট : ১৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৮:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নাজিরপুরে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে ভূতু‌ড়ে ঋণের অভিযোগ

ম‌শিউর রহমান না‌জিরপুর, পিরোজপুর প্রতিনি‌ধিঃ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের (পূূর্ব নাম-একটি বাড়ি একটি খামার) প্রকল্পের সদস্যদের ভূতেরে ঋণের অভিযোগে পিরোজপুররে নাজিরপুর উপজেলা পল্লাী সঞ্চয় ব্যাংকে সদস্যরা। টাকা আত্মসাৎ ও ভুয়া ঋণ দেখিয়ে অর্থ লুটপাটের অভিযোগ নাজিরপুর শাখার মাঠ-সহকারীদের বিরুদ্ধে। এই প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে উপজেলায় ২ শত সমিতিতে সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার ৫শত ৮২ জন। প্রায় ১২ কোটি টাকার সরকারি ঋণ আছে এ উপজেলায়।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সামনে কয়েকজনের উপস্তিতি দেখে সাংবাদিকেরা সেখানে গেলে ভুক্তভোগীরা নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির কথা বলেন।

ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্য জানা যায়, এই উপজেলার পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের গ্রাহকদের পাস বই মাঠ সহকারীরা নিজেদের কাছে সংরক্ষিত রাখে। মাঠ সহকারীরা গ্রাহকের থেকে ঋণ ও সঞ্চয়ের টাকা উত্তোলনের সময় সাদা একটা কাগজে লিখে দিয়ে আসে, তা যদি গ্রাহকেরা হারিয়ে ফেলে ঋণ ও সঞ্চয়ের টাকার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।

পাকুরিয়া গ্রামের হাফিজ এসেছেন অফিসের বর্তমান ম্যানেজারের ফোনে। অফিসে এসে জানেন তার পরিশোধিত টাকার মাত্র ৪হাজার টাকার ডকুমেন্ট আছে। হাফিজ বলেন, কয়েকবার তিনি ঋণ নিয়েছেন কিন্তু শেষ বারে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন এবং ৪হাজার টাকা করে ৬টি কিস্তি দেন। অফিসে এসে দেখেন মাত্র ৪ হাজার টাকা জমা হয়েছে। বইও নেই তার কাছে। তার এলাকার মাঠকর্মী গৌতম মন্ডল তিনি অনেক আগেই শাস্তি স্বরুপ জেলা অফিসে বদলি হয়েছেন। কিন্তু সেখানেও যোগদান করেননি। গ্রহকের ১৯ লক্ষ টাকা আত্মসতের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

ষাটর্ধ অঞ্জলী ব্যানার্জী কেদে কেদে বলেন, শামচুকে আমি বলেছি আমার কিস্তির টাকা নেও না কেনো। কিন্তু ওর মনে যে এয়া ছিলো জানি না। অফিস আমার কাছে তিন হাজার টাকার মত পেত। দুই দিন আগে এক স্যারে বলে আমার নামে কিস্তি আছে ২০ হাজার টাকার। আমার বইও তারা নিয়ে আসছে।

২০ হাজার টাকা ঋণ বোঝা মাথায় নিয়ে আসা মুক্তা ব্যানার্জী নামের এক গৃহবধূ বলেন, আমার কোনো ঋণ ছিলো না। আমার বই পরিশোধ করা। ঋণ নিতে হলে আমার ও স্বামী ও একজন পরিচিতের স্বাক্ষর দরকার তা আমরা দি নাই। আমাকে ছাড়া আমার স্বামী কিভাবে টাকা উত্তলোন করেছে?

২০ হাজার টাকা ঋণ নেওয়া পুষ্পা দাশ কয়েকটি কিস্তি দিলেও অফিস এখনো তার কাছে ২০ হাজার টাকাই পাবে। ১৬০০ টাকা সঞ্চয় দেওয়া দিপালী দাশ কয়েকদিন আগে জানতে পারে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন তিনি। মাঠকর্মী সামছুল হক ঋণ দেওয়ার কথা বলে ১৬শত টাকা সঞ্চয় নিয়ে ৫-৭দিন অফিসে এনে ঘুড়িয়েছে। ঋণ টাকা তো দূরে কথা সঞ্চয়ই ফেরত দেননি তিনি।

রীনা বেপারী সঞ্চয় দিয়ে সামছুর পিছনে ঘুরছে দুই মাস। অফিসে এনে স্বাক্ষর রেখে দিয়ে সঞ্চয়ের টাকা বাড়িতে যেয়ে ফেরত দিয়ে আসে কিন্ত গত পরশু স্যার গেছে আমার নামে ১০ হ্জাার টাকার ঋণ আছে।

মাঠ-সহকারীদের অনিয়মের বিষয়ে আরো গ্রাহকরা বলেন, মাঠকর্মীরা আমাদের সঙ্গে সব সময় খারাপ আচরণ করে। তারা স্থানীয় ও দীর্ঘদিন উপজেলায় চাকরি করাতে কেউ প্রতিবাদ করে না। তারা সব সময় পাশ বই বিহীন কিস্তি ও সঞ্চয়ের টাকা উত্তোলন করেন। 

সাজ্জাদ নামের ও রাজীব মন্ডল নামের দুইজন বলেন, তাদের ঋণ পরিশোধ হওয়া বইতে উত্তোলন হওয়া শর্তেও আবার নতুন করে কিস্তি নিতে বাড়ি যাচ্ছেন মাঠকর্মী আবার ফোনও দিচ্ছেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে মাঠ-সহকারী সামছুল হক ও গৌতম মন্ডল এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টাও কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সামছুল হক শাস্তি বদলি হয়ে বরিশাল অফিসে আছেন তার জায়গায় আছেন পংকজ কুমার রায় তিনি জানান, মাঠে জানতে পারছি সামছু নানা সমস্যা আছে অনেক সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া, অনেক সময় সদস্যের নাম দিয়ে ঋণ নেওয়া অভিযোগ। পাশ বইয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে জানান, একশর মত বই তার কাছে আছে বাকিগুলো জানেনা। অডিট করার জন্য বই কাছে রাখছি। কিন্তু এক মাস অডিট শেষ হলেও এখনো বই জমা দিচ্ছেন না কেনো জানতে চাইলে অফিস থেকে বের হয়ে যান।

সামছুল হকের স্ত্রী একই অফিসে ক্যাশ-সহকারি পদে চাকরিরত রয়েছেন। তিনি জানান, তার চাকরির সময়ে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

নাজিরপুর উপজেলা শাখা ব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিন বলেন, আমার কাছে কোন গ্রাহক লিখিত অভিযোগ দিলে তা আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কয়েকজন অফিসে এসেছে তাদেও কাছ থেকে আজ লিখিত অভিযোগ নিয়ে তা তদন্ত শুরু করবো।  এই লোনগুলোর সময়ে আমি এখানে কর্মরত ছিলাম না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়