এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলেবাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় বস্তায় আদা চাষ কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলেছে। ছায়াযুক্ত উঠান, পুকুরপাড় বা বাড়ির পরিত্যক্ত জমিতে এই আধুনিক চাষপদ্ধতিতে কম খরচে ভালো ফলন ও লাভ হচ্ছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ১৬ ইউনিয়নের শতাধিক কৃষক এ পদ্ধতিতে যুক্ত হয়ে মৌসুমে প্রায় ১০ হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। কেউ কেউ একাই ২০০টির বেশি বস্তায় চাষ করছেন।
মোরেলগঞ্জে উমাজুরি গ্রামের আমেনা বেগম বলেন, ছোট জায়গায় কম খরচে আদা চাষ করে ভালো আয় হচ্ছে। এখন আশেপাশের অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
মোরেলগঞ্জে উমাজুরি গ্রামের সফল চাষী শাহজালাল বাবুজানান, বাড়ির পেছনে ৭০০টি বস্তায় আদা লাগিয়েছি। প্রতিদিন সামান্য পানি দিলেই পরিচর্যা তেমন লাগে না। ফলন ভালো হচ্ছে।
মোরেলগঞ্জে উমাজুরি গ্রামের আমেনা বেগম বলেন, আমি একাই ২০০টি বস্তায় আদা লাগিয়েছি। নিয়মিত পানি দিই ও কৃষি অফিসের পরামর্শ মেনে চলি। ফলন দেখে আশাবাদী। সকালে সামান্য পানি দিলেই হয়। এখন এই আয়ে সংসারের খরচ চালাতে পারছি।
জমি ছাড়াই এই চাষ সম্ভব। রোগবালাই কম এবং পরিচর্যার ঝামেলাও কম। কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ পাচ্ছি। বাগেরহাট রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির বলেন, কৃষককে সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন সীড কোম্পানি পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে সার ও বীজ দিয়ে গরীব কৃষকদের সহযোগিতা করতে হবে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বীজ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, বস্তায় আদা চাষে জমির মতো রোগবালাই হয় না। কীটনাশক, পানি ও সেচের প্রয়োজন অনেক কম। বাড়ির ছাদ, বারান্দা, উঠান বা ফাঁকা জায়গায়ও সহজে চাষ করা যায়।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, বস্তায় আদা চাষে জমির মতো রোগবালাই হয় না। কীটনাশক, পানি ও সেচের প্রয়োজন অনেক কম। বাড়ির ছাদ, বারান্দা, উঠান বা ফাঁকা জায়গায়ও সহজে চাষ করা যায়। চাষে উপকরণ সহায়তা প্রদান শীর্ষক উপপ্রকল্পের আওতায় ২শ জন চাষি ২০৫ হেক্টর জমিতে বস্তায় আদা চাষ করেছে। তাদের বীজ, রাসায়নিক সার প্রদানসহ পোকামাকড় দমনে নানা উপকরণ সহায়তা করা হয়েছে।
এই আধুনিক পদ্ধতিতে নারী ও তরুণদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃষকরা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে অন্যদেরও উৎসাহিত করছেন। কম খরচে অধিক লাভের এই পদ্ধতি মোরেলগঞ্জে কৃষকদের জীবনে পরিবর্তনের নতুন পথ দেখাচ্ছে।