হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের দাউদ বিশ্বাস (২৩) নামে এক যুবকের সাথে টিকটকের মাধ্যমে পরিচয়ে দেখা করতে এসে পাশ্ববর্তী সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের এক ৮ম শ্রেণী ছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পাশের ইউনিয়ন পরমেশ্বরদী গ্রামের একটি মেহগুনি বাগানে নিয়ে তিনজন মিলে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, এ ঘটনার পরেরদিন শনিবার মেয়ের দাদা বাদি হয়ে দাউদের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো দুইজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ২০০৩ এর ৯(৩)/১০ ধারায় মামলা করেন। মামলা হওয়ার দুই ঘন্টার মধ্যে পুলিশ দাউদ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। পরে দাউদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপর আসামি বোয়ালমারী উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের রাজ্জাক শেখের ছেলে মো. আতর আলী শেখকে (২৩) গ্রেপ্তার করে গতকাল রবিবার আদালতে পাঠানো হয়। এছাড়া ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছেন।
থানা এজাহার সূত্রে জানা যায়, টিকটকের মাধ্যমে জেলার বোয়ালমারী উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের ওসমান বিশ্বাসের ছেলে দাউদ বিশ্বাসের (২৩) সাথে পরিচয় হয় সালথা উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে। দাউদ তেলজুড়ি এলাকায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানায় ওই কিশোরীকে। আমন্ত্রণ পেয়ে ওই এলাকায় ঘুরাঘুরি শেষে ওইদিন সন্ধ্যার পর কিশোরীকে পরমেশ্বরদী গ্রামের ভদ্র মহাশয়ের মেহগনি বাগানে নিয়ে তিনজন মিলে ধর্ষণ করে। ওই ছাত্রী রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিরবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি একটি ফোনে টিকটকে দাউদের মোবাইল নম্বর পায়। দাউদকে ফোন দিলে প্রথম ফোন কেটে দেয়। পরে ফোন করে জানায় আধা ঘন্টার মধ্যে আপনাদের মেয়েকে পেয়ে যাবেন। সে অনুযায়ী মেয়ের বাড়ির লোকজন তেলজুড়ি আসার পথে ভ্যানে মেয়েকে পেয়ে সরাসরি বোয়ালমারী থানায় চলে যায়। থানা পুলিশ শুক্রবার কিশোরীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠিয়ে এ ঘটনায় পরেরদিন শনিবার মেয়ের দাদা বাদি হয়ে দাউদের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো দুইজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ২০০৩ এর ৯(৩)/১০ ধারায় মামলা করেন।
মামলা হওয়ার পরে প্রথমে পুলিশ দাউদ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। পরে দাউদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপর আসামি বোয়ালমারী উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের রাজ্জাক শেখের ছেলে মো. আতর আলী শেখকে (২৩) গ্রেপ্তার করে রবিবার আদালতে পাঠানো হয়। এছাড়া ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, বাদির লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলা নেওয়া হয়েছে। প্রথমে দাউদকে এবং পরে আতর আলীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ভিকটিম ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে চিকিৎসা নেয়। পলাতক অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে পুুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।