এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ও মৎস্যভাণ্ডার সুন্দরবনের উপকূলবর্তী বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি ফি মাত্র ৮ টাকা। কিন্তু সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা রোগীদের কাছ থেকে ২০ টাকা নিচ্ছেন—তাও কোনো রসিদ ছাড়াই। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি ফি সংক্রান্ত কোনো চার্ট ঝোলানো নেই। রসিদ না দিয়ে টাকা নেওয়ায় রোগীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হতে আসা বারইখালী গ্রামের হুমায়ুন কবির খান বলেন,
“এই স্বাধীনতার জন্য ছাত্ররা জীবন দিয়েছে, আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। অথচ আজও ভর্তি হতে দুর্নীতি করতে হচ্ছে। আমার জামাতা শাহাবুদ্দিন ফকির (২৬) ভর্তি করাতে গেলে জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসারের উপস্থিতিতে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (SACMO) মনিকা মল্লিক ২০ টাকা নেন। পরে রসিদ চাইলে কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি।”
সকাল থেকে টিকিট কেটে ৩ টাকায় চিকিৎসা নেওয়ার পর জরুরি বিভাগে ভর্তি রোগীদের কাছ থেকে একইভাবে ২০ টাকা করে নেওয়া হয়। অথচ নির্ধারিত ফি ৮ টাকা হওয়ায় রোগীপ্রতি অতিরিক্ত ১২ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
রোগীদের অভিযোগ, এর আগেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মনিকা মল্লিক বিভিন্ন সময়ে ভর্তি ও অপারেশন রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন। তবে অভিযোগ পেলেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে মনিকা মল্লিক বলেন, “আমি কখনো নির্ধারিত টাকার বাইরে টাকা নিইনি।”
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. আহাদ নাজমুল হাসান বলেন, “জরুরি বিভাগে ভর্তির জন্য ২০ টাকা নেওয়া হয়। ওই টাকার বাড়তি অংশ দিয়ে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়।”
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বর্তমানে ছুটিতে ঢাকায় আছেন। তিনি জানান, “জরুরি বিভাগে ভর্তি ফি ৮ টাকা নির্ধারিত। নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”