শিরোনাম
◈ ফরিদপুরে নতুন কর্মসূচি দিয়ে মহাসড়কের অবরোধ প্রত্যাহার, যানচলাচল স্বাভাবিক  ◈ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ইসির ৬১ কর্মকর্তার বদলি ◈ জাকসু নির্বাচন বর্জনের পর ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ◈ বরিশালে ছাত্রদল শিবির সংঘর্ষ আহত ২৫ ◈ হংকংয়ের বিরু‌দ্ধে জয় দি‌য়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের ◈ আসন্ন বিশ্বকাপের ম্যাচ অফিশিয়াল সবাই নারী, আছেন বাংলাদেশের জেসিও ◈ আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের পথরেখা নির্ধারণ করবে: প্রধান উপদেষ্টা ◈ পুলিশের স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত সরকারের ◈ এবার বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ফ্রান্স, গ্রেফতার ৪ শতাধিক ◈ সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জন বলতে কিছুই থাকবে না: সালাহউদ্দিন

প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৩:৪০ দুপুর
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জলাবদ্ধতা নিরসন ও কৃষি উন্নয়নে গেমচেঞ্জার পটিয়ার এলিভেটেড ড্যাম

এম আর আমিন, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম পটিয়া পাউবোর শ্রীমাই খালের ওপর নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম। এ প্রকল্পকে স্থানীয়রা দেখছেন কৃষি উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও পানি ব্যবস্থাপনায় একটি বড় অগ্রগতি।

পটিয়া পাউবোর মেগাপ্রকল্পে   বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের ১১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকার এ প্রকল্পের কাজ ৭ টি ভাগে ভাগ করে চলমান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ, সেচ অবকাঠামো, খাল পুন:খনন, বাঁধ নির্মাণ, নদী তীর সংরক্ষণ, ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ ও বাঁধ নির্মাণের জন্য  ভূমি অধিগ্রহণ। 

তাছাড়া, অন্য আরেক প্রকল্পের অধীনে শ্রীমাই খালের উপর নির্মিত হচ্ছে হাইড্রোলিক এলিভেটেড ড্যাম। এটি নির্মিত হলে জলরাশি সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রায় ১১০৮ হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে।এ কাজের জন্য প্রকল্প বরাদ্দ  ধরা হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকা। শ্রীমাই খালের ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য এ ইলেক্ট্রো-মেকানিকাল ড্যাম নির্মাণের মাধ্যমে বর্ষা মৌসুমে বিপুল পরিমাণ পানি সংরক্ষণ সম্ভব যা পরে শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহার করা যাবে। প্রতি বছরে বর্ষা মৌসুমে শ্রীমাই খাল দিয়ে পাহাড়ী ঢল নেমে খালের ভাঙ্গনে বাড়ী ঘর বিলীন সহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। 

বর্তমানে খালের দু’পাশে আরসিসি ব্লক দ্বারা তীর প্রতিরক্ষা করা হচ্ছে। ভাটিখাইন, ছনহরা,হাইদগাঁও ইউনিয়নে ৪.৪০ কিলোমিটার তীর প্রতিরক্ষা করা হচ্ছে, ইতোমধ্যে প্রায় ৩.৫০ কিলোমিটার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ব্লক স্থাপনের ফলে শ্রীমাই খালের ভাঙ্গন রোধ হবে আর ড্যাম নির্মাণের ফলে কৃষি, মৎস্য চাষ, যোগাযোগ ও ইকো ট্যুরিজুম অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। হাইড্রোলিক ড্যামের ৪০% শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২৬ জুনে নাগাদ প্রকল্প শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

পটিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের ৮টি রেগুলেটর নির্মাণ, ৩০.১০ কিলোমিটার খাল পুন:খননের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। 
এছাড়াও ১.৮০ কিলোমিটার নদীতীর প্রতিরক্ষা, ২.৭০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। 

চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেওয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনা হচ্ছে।১১৫৮ কোটির বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি ১১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। এ মেগা প্রকল্পের চলমান কাজের আওতায় রয়েছে ২৫.৫১ কিলোমিটার বাঁধ, ২৬টি রেগুলেটর নির্মাণ, ২.৯৫ কি:মি: প্রতিরক্ষা কাজ, ১টি ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ, ৩০.৫০ কি:মি: খাল খনন ইত্যাদি।

প্রকল্পের ভৌত কাজের প্রায় ৭০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে। ৩০ কি.মি খাল পুনঃখননের কাজ ১০০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে, গরুলুডা খালের ১০ কি.মি, শ্রীমাই খালের ৫ কি.মি, চানখালি খালের ৩.৫ কি.মি, আলম খাল, কাজির খালসহ আরও অন্যান্য খালের ১০ কি.মি খনন কাজ শেষ করা হয়েছে।নদীর তীর  সংরক্ষণ কাজ ২.৯৫ কিলোমিটার  ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

নাইখাইন গ্রামে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণকাজ ৩৫ শতাংশ শেষ হয়েছে এবং কাজ চলমান রয়েছে।  ৪.১০ কিলোমিটার ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ কাজ ৮০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে। বাকি কাজ চলমান রয়েছে।সেচ রেগুলেটর নির্মাণ (স্লুইস গেট) ২৬টির মধ্যে ইতোমধ্যে কাজ ৬০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে।

কাজের অগ্রগতি দেখেই স্থানীয় লোকজন অত্যন্ত খুশি।এলাকাবাসীরা জানান, আমাদের পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতা ও বন্যায় ধান নষ্ট হতো। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ১৭ ইউনিয়নের মানুষের সুফল আসবে, জানা যায়, দীর্ঘদিন পটিয়ায় অনেক কৃষিজমি অনাবাদি পড়েছিল। এ প্রকল্পের কারণে অনাবাদি জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হবে। জলাবদ্ধতারোধ,  এদিকে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। 

চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-১পওর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন,প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ দেয়াল নির্মাণ, বেড়িবাঁধ ও সিসি ব্লকের বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজসহ ভৌত কাজের ৭০ শতাংশ শেষ করা হয়েছে,সব ধরনের কাজ দৃশ্যমান হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন,পটিয়ায় অনেক কৃষিজমি অনাবাদি পড়ে আছে। এ প্রকল্পের কারণে অনাবাদি জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হবে। পটিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে উপজেলার  আশিয়া, হাবিলাসদ্বীপ, ধলঘাট, বড়লিয়া, দক্ষিণ ভূর্ষি, জঙ্গলখাইন, নাইখাইন, ভাটিখাইন, ছনহরা, কচুয়াই, হাইদগাঁও, কেলিশহর ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবে।পটিয়ায় ২ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য উৎপাদনসহ যোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।পাশাপাশি নদী ও খালের ভাঙন থেকে সুরক্ষা পাবে। লবণ পানির প্রবেশ রোধ হবে। বর্ষায় থাকবে না জলাবদ্ধতা, হবে না কৃষিজমির ধান নষ্ট। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পটি ২০২১ একনেক সভায় পাস হয় এবং ব্যয় ধরা হয়েছিল ১১শ কোটি ৫৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়