তপু সরকার হারুন, জেলা প্রতিনিধি শেরপুরঃ-‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা, গড়বে আগামীর শুদ্ধতা’ এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে শেরপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের ১৮৪তম গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর সোমবার দিনব্যাপী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ওই গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী।
দিনব্যাপী এ গণশুনানিতে জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের মোট ১২৮টি অভিযোগ উত্থাপন করা হয় এবং সেসব বিষয়ে আলোচনা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। জেলার ২৮টি দপ্তরের মধ্যে অভিযোগগুলোর বেশীরভাগ ছিলো সাবরেজিস্ট্রি অফিস, ভূমি অফিস ও জেলা সদর হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতিসংক্রান্ত।
মো. ইসমাইল হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, তার ক্রয়কৃত ১৬ শতাংশ জমির বিপরীতে সদর সাবরেজিস্টার অফিসে পরপর ৮টি জাল দলিল সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ জাল দলিল করেছেন সদর সাবরেজিস্টার খন্দকার মেহবুবুল ইসলাম। তাদের বিভিন্ন সোর্স রয়েছে। সোর্সের মাধ্যমে তারা ঘুষ নেন। স্বাভাবিক দলিল হলে ৮/১০ হাজার টাকা, আর অস্বাভাবিক দলিল হলে এক দেড়লাখ টাকা সরাসরি ঘুষ নেন সাবরেজিস্টার। তিনি আরও বলেন, সিসিটিভি অফিসের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হলেও টেবিলের নিচে তো লাগায় না। বাংলাদেশের কোথাও টেবিলের নিচে সিসিটিভি নাই। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে দুদক কমিশনার কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষের কি পরিমাণ খেদ থাকলে কতোটা বেদনা নিয়ে এভাবে আফসোস করে বলতে পারেন। তিনি যা বলেছেন একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কেন আটটা ভুয়া দলিল হবে। গরিব মানুষদের প্রতি একটু সদয় হন।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন, ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক তাজুল ইসলাম ভুঁইয়া, দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় জামালপুরের উপপরিচালক আবু সাঈদ, শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মিজানুর রহমান ভুঁঞা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। শুনানিকালে জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণসহ অভিযোগকারী ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।
দুদক জানায়, এ গণশুনানিকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে প্রচার-প্রচারণা চালায় দুদক জামালপুর সমন্বিত কার্যালয়। এতে জেলার বিভিন্ন দপ্তরের বিরুদ্ধে দেড় শতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে সেবার মান উন্নয়ন, সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি রোধ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে এই গণশুনানি ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য জেলাগুলোতে অনুষ্ঠিত হবে।