কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া গেছে এক নারীর হৃদয় বিদারক চিঠি। যে চিঠিতে তিনি তার সংসার ভাঙার আশঙ্কার কথা জানিয়ে দোয়া চেয়েছেন।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৭টায় খোলা হয় মসজিদের ১৩টি দানবাক্স। খোলার পর টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার আর বিদেশি মুদ্রার পাশাপাশি চোখে পড়ে অসংখ্য চিঠি। সেই চিঠিগুলোয় ভেসে ওঠে মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও হাহাকার। এর ভেতর পাওয়া ওই নারীর চিঠি সবার নজর কাড়ে।
সেখানে ওই নারী লিখেছেন—
‘আমি হিন্দু থেকে মুসলমান হয়েছি ১২ বছর হলো। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, তাহাজ্জুদও পড়ি, রোজা রাখি। তবুও দুইবার গর্ভের সন্তান হারিয়েছি। এখন আড়াই মাসের গর্ভবতী। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। যেন একটি সুস্থ সন্তানের মা হতে পারি। যদি এই আশাটা পূর্ণ হয় তবে সন্তানকে নিয়ে আমি এ মসজিদে একটি সোনার চাঁদ দান করব। না হলে আমাকে সংসার ছেড়ে চলে যেতে হবে।’
নারীটি আরও লিখেছেন, ‘আমার পাশে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। আমি অসহায়। সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য।’
এমন হৃদয়স্পর্শী চিঠি শুধু একটি নয়, প্রতি দানবাক্স খোলার সময় শত শত পাওয়া যায়। কখনও কেউ লিখে পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের আকুতি, কেউ চায় চাকরি, কেউবা রোগমুক্তি কিংবা প্রিয় মানুষকে কাছে পাওয়ার প্রার্থনা।
উল্লেখ্য, এবার ৪ মাস ১৮ দিন পর খোলা হলো দানবাক্সগুলো। ৩২ বস্তা টাকা, স্বর্ণ-রুপা আর বিদেশি মুদ্রা মিলে চলছে গণনার কাজ। অংশ নিচ্ছেন ৩৪০ জন মাদরাসা শিক্ষার্থী, ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৩৩ জন শিক্ষক-স্টাফ, ৯ জন সেনা সদস্য, ৩০ জন পুলিশ সদস্য, পাঁচজন আনসার ব্যাটালিয়ন ও ১০ জন আনসার সদস্য। পাশাপাশি কাজ করছেন ১০০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী।