চরভদ্রাসন ও সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আকোটেরচর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এমন অবস্থায়ও ওই ভবনেই স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে চরম ঝুঁকি ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সেবা প্রত্যাশী সাধারণ মানুষ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটি অনেক পুরোনো এবং জরাজীর্ণ। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন শঙ্কা রয়েছে। ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে, জানালাগুলো ভাঙা, আর বর্ষার সময় ছাদ দিয়ে পানি চুইয়ে পড়ে। এতে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও ওষুধপত্র নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদেরও প্রাণঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
দায়িত্বরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মনজুরী বলেন, “আমি মাত্র এক মাস হলো এখানে যোগ দিয়েছি। এসে দেখি ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ। ইতোমধ্যে দুইবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমার কক্ষ থেকে একটি ফ্যান, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, বিদ্যুৎ সংযোগের তার ও মিটার চুরি হয়েছে। এছাড়া পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে কাজ করছি।”
স্বাস্থ্যকর্মী হাসনাহেনা পিংকি জানান, “ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মমিনুর রহমান সরকার বলেন, “আমি নিজে গিয়ে আকোটেরচর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছি। এটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। অনুমোদন পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আকোটেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসলাম বেপারী বলেন, “এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে সেবা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। দ্রুত সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বর্ষার সময় ছাদ থেকে পানি পড়ে এবং দেয়ালের প্লাস্টার ভেঙে পড়ে, ফলে নিরাপত্তাহীন পরিবেশ তৈরি হয়। পাশাপাশি সরঞ্জাম সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গার অভাব রয়েছে। ভবন সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মিত হলে সেবার মান বাড়বে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।