আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর): যশোর শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়া এলাকায় আশরাফুল ইসলাম বিপুল (২৬) কে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই আসামী গ্রেফতার হয়েছে।
রোববার(১৩ জুলাই) হত্যার শিকার আশরাফুলের মা মেমেনা বেগম বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে মামলা করলে র ্যাব তাদের গ্রেফতার করে পুলিশে সোপর্দ করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রিয়াজ হোসেন বাপ্পী (২৮) ও রাজীব হোসেন (১৯)। হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত বাপ্পীর বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলা ও একটি মাদক মামলা চলমান রয়েছে। আটকদের কোতোয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার(১২ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে তার স্ত্রীর আগের স্বামী বাপ্পীর বিরুদ্ধে।
নিহত আশরাফুল ইসলাম ওরফে বিপুল যশোর শহরতলির শেখহাটি জামরুলতলা এলাকার আখতার হোসেনের ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানির ডিপোর শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
আশরাফুলের পরিবারের অভিযোগ, আশরাফুল তাঁর বন্ধুর সাবেক স্ত্রীকে বিয়ে করেছিলেন। এর জেরে ওই বন্ধু ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে হত্যা করেছেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়ায় একটি গলি রাস্তার মধ্যে গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে আশরাফুলের ওপর কয়েকজন হামলা করেন। এ সময় তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে তাঁরা চলে যান। স্থানীয় লোকজন আশরাফুলকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর তাঁর মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ শাকিরুল ইসলাম জানান, আশরাফুলের শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাঁকে ভর্তি করে ওয়ার্ডে পাঠানোর পর তিনি মারা যান। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আশরাফুলের বন্ধু বাপ্পী ছিলেন শহরের ষষ্ঠীতলা এলাকার। বাপ্পীর সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সুমাইয়ার বিচ্ছেদ হয়েছিল। এরপর সুমাইয়ার সঙ্গে আশরাফুলের সম্পর্ক হয়। পরে তাঁরা বিয়ে করেন। এ কারণে বাপ্পী ক্ষিপ্ত হন। আশরাফুল ও সুমাইয়াকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন বাপ্পী। গতকাল রাতে কৌশলে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে আশরাফুলকে কুপিয়ে জখম করেন বাপ্পী ও তাঁর সহযোগীরা।
আশরাফুলের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার অভিযোগ করেন, তার আগের স্বামী বাপ্পী খারাপ ছেলে। তাঁর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ডিভোর্স হয়। পরে আশরাফুলের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বাপ্পী ও তাঁর পরিবার বিভিন্ন সময়ে আমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল আশরাফুল। ফোন করে বাজে কথাও বলত। কয়েক মাস আগে আমার স্বামীকে লক্ষ্য করে বোমাও মারে। এনিয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ যদি ব্যবস্থা নিতো, তাহলে আমার স্বামীর প্রাণ দিতে হতো না। আমার পেটের সন্তানের কী হবে? আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বন্ধুর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে করায় আশরাফুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় আশরাফুলের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। আসামীদের ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।