ফরহাদ হোসেন, ভোলা প্রতিনিধি : ভোলা জেলার সাত উপজেলায় ১০৭ জন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার লা পাত্তা হওয়ায় প্রায় ৫৫ হাজার হত দরিদ্র পরিবারের মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরের ৩০ কেজি করে চাল পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। চাল না পেয়ে কষ্টে জীবন কাটছে এসকল হতদরিদ্র পরিবারের। সেপ্টেম্বর মাসের নতুন ডিলার নিয়োগের কাজ শেষ না হওয়ায় এ সকল চাল পাচ্ছে না এসকল সুবিধাভোগীরা। জেলার সাত উপজেলায় ৮২ হাজার ৫৪৭ জন হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ১৮৭ জন ডিলার মধ্যেমে এসকল চাল দেওয়া হতো।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১০৭ জন ডিলার পলাতক রয়েছেন। এতে করে ভোলার সরকারি গুদামগুলোতে হাজার হাজার টন খাদ্যবান্ধবের চাল পরে আছে। ডিলার না থাকায় বিতরণ হচ্ছে না এসকল চাল। সেপ্টেম্বর মাসে এই চাল বিতরণের কথা ছিল এসকল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারী দরিদ্র পরিবারের মাঝে।
ডিলার লাপাত্তা হওয়ায় সেপ্টেম্বর মাসের চাল না পেয়ে এসকল দরিদ্র পরিবারের এখন চালের সংকট চলছে। কারণ শ্রমজীবী দরিদ্র এপরিবারে আশ্বিনের টানাপোড়েন চলছে। কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে, দরিদ্র, অস্বচ্ছল জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে কৃষক শ্রেণির মানুষের কথা চিন্তা করে কম দামে চাল বিক্রির এ কার্যক্রম চালু করে সরকার।
জানা গেছে, জেলায় ১৮৭ জন ডিলারের মধ্যে ১০৭ ডিলার লাপাত্তা থাকায় সাময়িকভাবে তিন মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ভোলা সদর উপজেলার ৩৪ জন ডিলারের মধ্যে ১১ জন ছাড়া বাকী ২৩ জন নতুন নিয়োগ দিতে হবে। মনপুরা উপজেলায় পুরানো ৮ জনের স্থলে নতুন ৮ জন এবং লালমোহন উপজেলায় ৪৫ জন ডিলারের মধ্যে পুরাতন ১৯ জন বাদে নতুন ২৬ জন ডিলারই নিয়োগ দিতে হবে। এছাড়া তজুমদ্দিন উপজেলায় ১৪ জন ডিলারের ৩ জন নতুন বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২১ জনের ৬ জন নতুন ও চরফ্যাশন উপজেলার ৫০ জন ডিলারের সবাই নতুন নিয়োগ। মোট ৯৩ জন ডিলার তিন মাসের জন্য সাময়িক নিয়োগের অপেক্ষায়। এর মধ্যে দৌলতখান উপজেলায় ১৫ জন ডিলারের মধ্যে ১৫ জনই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
জেলায় নতুন করে ১০৭ জন ডিলার না থাকায় এসকল দরিদ্র পরিবারে সেপ্টেম্বর মাসের চাল বিতরণে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। খাদ্য বিভাগ নতুন ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আবেদনও জমা পড়েছে। কিন্তু খাদ্য বান্ধব কমিটির সিদ্ধান্ত কবে বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি।
তবে ডিলারের জন্য যে নতুন আবেদন গুলি পড়েছে সেগুলি সঠিক যাচাই বাছাই, রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও স্থানীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে এমন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে এ দরিদ্র পরিবারগুলো চাল পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
নাজমা, কবীর, আলমগীরসহ একাধীক সুবিধাভোগীরা জানান, ১৫ টাকা দামে ৩০ কেজি চাল কিনে বছরের ৫ মাস মোটামোটি ভালো ভাবে কেটে যেতো তাদেন। কিন্তু খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার পালিয়ে যাওয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে চাল কিনতে পারেনি তারা। বর্তমানে অনেক কষ্ট দিন কাটছে তাদের।
তারা আরো জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে তারা ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ডিলারদের বাড়ি গিয়েও তাদেন পাননি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছেন এখন আগের ডিলার নেই। নতুন করেও কাউকে ডিলার হিসেবর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে সেপ্টেম্বর মাসে চাল পাননি তারা।
ভোলা জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এহসানুল হক বলেন, নতুন করে ১০৭ জন ডিলার নিয়োগের কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব ডিলার নিয়োগের কাজ শেষ হবে। নতুন ডিলাররা সেপ্টেম্বর মাসের চাল অক্টোবরে তুলে বিক্রি করবে দরিদ্র পরিবারের কাছে। এতে করে সমস্যা সমাধান হবে কার্ডধারীদের।
আপনার মতামত লিখুন :