শিরোনাম
◈ অ‌ক্টোব‌রে বাংলাদেশ সফরে ৩‌টি ক‌রে ওয়ান‌ডে ও টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি সি‌রিজ খেল‌বে ও‌য়েস্ট ই‌ন্ডিজ ◈ ভুয়া ফুটবল দল সাজিয়ে জাপান-যাত্রা, ধরা পড়ে ফেরত পাঠিয়েছে ২২ জনকে! ◈ উচ্চশিক্ষার আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডি করার সুযোগ, সাথে আর্থিক সহায়তাও মিলবে ◈ সাতরাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ ◈ আঞ্চলিক হুমকি নিয়ে ভারতের সতর্কবার্তা: বাংলাদেশে মৌলবাদ, চীন সীমান্ত অচলাবস্থা ও পাকিস্তানের ভূমিকা ◈ ইরানে অনুপ্রবেশ করে নারী মোসাদের দুর্ধর্ষ অভিযান (ভিডিও) ◈ চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লিগ, বরুশিয়ার নি‌শ্চিত জয় রুখে দিলো জুভেন্টাস ◈ দূর্গা পুজাতে ভারতে গেল ৮ ট্রাক ইলিশ ◈ এমবাপ্পের দুই পেনাল্টি গোলে চ‌্যা‌ম্পিয়ন্স লি‌গে রিয়াল মাদ্রিদের শুভ সূচনা ◈ যে কারণে শিবির ক্যাম্পাসে জিতছে, সেই কারণেই বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে জিততে পারে: দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিবন্ধ

প্রকাশিত : ১৬ মে, ২০২৪, ০৪:৫৪ দুপুর
আপডেট : ১৬ মে, ২০২৪, ০৪:৫৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নওগাঁয় মুজিব বর্ষের সরকারি ঘর ক্রয়-বিক্রয়ের মহোৎসব

আশরাফুল নয়ন, নওগাঁ: [২] মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকারি বাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের ডাকাহার চৌধুরী পুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য লিখিত অভিযোগ করেন কালিগ্রামন মুনসিপুর গ্রামের মৃত তহির উদ্দীন মোল্লার ছেলে রফিকুল ইসলাম।

[৩] সরেজমিনে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০২১-২২ অর্থ বছরে জেলার রানীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের ডাকাহার চৌধুরী পুকুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে কয়েক দফায় ৫৯ টি ঘর নির্মাণ করেন উপজেলা প্রশাসন। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ঘর ভূমি ও গৃহহীনদের মূজিব বর্ষের উপহার হিসেবে নির্মাণ করলেও এই প্রকল্পের অধিকাংশ ঘরই অনৈতিকভাবে বরাদ্দ পেয়েছেন যাদের জমি ও বাড়ি আছে সেই সব ব্যক্তিরা। বরাদ্দ প্রাপ্তদের নিজের জমি ও বাড়ি থাকায় সেখানে বসবাস না করে উদ্বোধনের কিছুদিন পর হতে শুরু হয় ঘর ক্রয়-বিক্রয়। এই ক্রয়-বিক্রয়ে অনেকে যারা বৈধ্য উপায়ে ঘর পায়নি তারা নিরুপায় হয়ে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ঘর ক্রয় করে বসবাস করছে। আবার অনেকে অল্প দামে ঘর কিনে রাখছে বেশী দামে বিক্রয়ের আশায়।
এ যেন আশ্রয়ন প্রকল্পে শুরু হয়েছে ঘর-ক্রয় বিক্রয়ের মহা উৎসব।

[৪] অভিযোগসূত্রে জানা যায়, আশ্রয়ন প্রকল্পে ১ নং ঘর বিক্রয় করেন মোঃ বেনো হোসেন, ক্রয় করেন আজিজার। ৩৫ নং ঘর মো.ফেকরুল বিক্রয় করেন, ডাকাহার গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে ইউনুছ আলীর কাছে এবং একই ঘর ইউনুছ আলী আবারও বিক্রয় করেন দুলালের নিকট। ৩৭ নং ঘর আলম বিক্রয় করেন শরিফুলের কাছে।

[৫] ডাকাহার গ্রামের ছলিম উদ্দীনের নিজস্ব জমি থাকার পরও বাপ-ছেলে ২টি ঘর বরাদ্দ পেয়েছে, এছাড়াও তারা ২টি ঘর বিক্রয়ের জন্য ক্রয় করে রেখেছে। রহমান কবিরাজ ওই গ্রামের মধ্যে তার ছাঁদ দেওয়া পাঁকা বাড়ি আছে, তবু ২টি ঘর কিনে রেখেছে। আশ্রয়নের সহ-সভাপতি ডাবওয়ালা হাচিন আলীর গ্রামের মধ্যে জমি ও বাড়ি থাকার পরও তার মা হাসিনা বেগমের নামে ১টি ঘর, নিজের নামে ১টি ঘর ও স্ত্রীর নামে ১টি ঘর সহ মোট ৩টি ঘর বরাদ্দ নিয়ে রেখেছেন। মায়ের ঘর বিক্রির জন্য আগ্রহী ক্রেতাদের নিকট দামাদামী চলছে। এই আশ্রয়নের সকল ঘর বিক্রয়ের মূল হোতা তিনি বলে জানান স্থানীয়রা। এই প্রকল্পে ৫৯টি ঘরের মধ্যে ২০টি ঘর ব্যাতিত সকলই ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এতে বঙ্গবন্ধু কন্যার মুজিব বর্ষের মূল উদ্দেশ্য চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। অবিলম্বে তদন্ত সাপেক্ষে প্রযোজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তারা।

[৬] অভিযোগকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি ঘর ভ’মিহীনরা পায় না। যাদের ঘর আছে তারা পায়, তাই প্রশাসনের কাছে আমার দাবী সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ভ’মিহীনদের ঘর গুলো দেওয়া হউক। উপকারভোগী নারগিস এর থেকে ৩০ নং বাড়ি ক্রয় করেন আশরাফুল, যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোন বাড়ি পাইনি তবে নারগিস আমাকে বসবাসের জন্য বাড়িটি থাকতে দিয়েছে। ক্রয় করেছেন কিনা প্রশ্নে বলেন,কাগজ করে নিয়েছি তবে কোন টাকা দেয়নি।

[৭] অসহায় ভ’মিহীন বয়জেষ্ঠ্য মহিলা সেফালী বেগম বলেন, মারা গেলে মাটি দেওয়ার মত জায়গাও আমার নেই, ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম , ধরার কোন লোক নেই, তাই সসরকারি ঘর আমাকে দেওয়া হয়নি। আশ্রয়নে যারা সরকারি বাড়িগুলো পেয়েছে তারা বাড়িটিতে কিছুদিন বসবাস করেন। তারপর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিক্রয় করে চলে যায়।

[৮] এ ব্যাপারে একডালা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আসাদুল আলীম (আপেল) জানান, মুজিব বর্ষের ঘর গুলো নিয়ে আমিসহ চেয়ারম্যান সাহেব অনেক চেষ্টা করেও বিক্রয় করা থেকে আটকানো যাচ্ছে না। তাই প্রশাসনের কাছে আমার দাবী তদন্ত করে প্রকৃত ভূমিহীনদের ঘর গুলো দেওয়া হউক।

[৯] একডালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.শাহজাহান আলী বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার ভূমিহীনদের ঘরগুলো বিক্রয় হচ্ছে। আমি আইনশৃংখলা মাসিক মিটিংএ এবিষয়ে একাধিক বার বলার পরও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ট তদন্তের দাবী করছি। এই আশ্রয়ন কমিটির কয়েকজন নেতা এর সঙ্গে জড়িত।

[১০] এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে তাবাসসুম জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি ঘটনার সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সম্পাদনা: এ আর শাকিল

প্রতিনিধি/এআরএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়