শিরোনাম
◈ নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি ◈ পাকিস্তান যদি পাল্টা আঘাত হানে, তখন তা ঘোষণার কোনও দরকার হবে না: জেনারেল আহমেদ শরিফ ◈ অনিশ্চয়তার মাঝেও পি‌সি‌বি চায় বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে আসুক ◈ এই প্রথম হ‌কি বিশ্বকাপে আম্পায়া‌রিং করবেন  বাংলা‌দে‌শের সে‌লিম ও শাহবাজ  ◈ পারভেজ হত্যায় গ্রেফতার অভিযুক্ত টিনা ◈ রাফালের ধ্বংসাবশেষ সরানোর প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি ভেরিফাই! ◈ যুদ্ধক্ষেত্রের ‘সাইলেন্ট কিলার’ হারোপ ড্রোনের বিশেষত্ব কী? (ভিডিও) ◈ এখানে আরেকটা বেয়াদব আছে, সে শহীদ ফ্যামিলিকে ননসেন্স বলেছে: সংবাদ সম্মেলনেই শহীদ ইয়ামিনের বাবা(ভিডিও) ◈ দুপুরের মধ্যে সব রাজনৈতিক দলকে ডেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি, জানিয়েছেন জামায়াতের ঢাকা দক্ষিণের সেক্রেটারি ◈ ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব, সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ: উপদেষ্টা মাহফুজ

প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ০৫:৪৯ বিকাল
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ০৬:০৩ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দিনব্যাপী চলে খাওয়ার হিরিক

পুরান ঢাকায় বাহারি শরবত-জুসেই স্বস্তি মানুষের

অপূর্ব চৌধুরী: [২] কেউ ফুটপাতের পাশে থাকা আখের দোকানের সামনে, আবার কেউ শরবতের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে রস বা লেবুর শরবত খাওয়ার জন্য। আবার অনেকে অধীর আগ্রহ নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে কখন আম, ড্রাগন বা আনারসের জুস হাতে পাবে সেই অপেক্ষায়।

[৩] পুরান ঢাকার সমগ্র এলাকা জুড়েই এমন চিত্র প্রতিদিন চোখে পড়ে৷ গরমে এক গ্লাস শরবত, জুস বা আখের রসই যেন পরম তৃপ্তি জোগায় মানুষকে। তাই শরবত বা জুসের দোকান ঘিরেই ভিড় লেগে থাকে সাধারণ মানুষের। 

[৪] বাহারি জুসের মধ্যে রয়েছে আপেল ড্রাগন, বেল, পেঁপে, কাঁচা আম, কদবেল, জলপাই, তরমুজ, আঙ্গুর, বাঙ্গি, মাল্টা এবং আনারের জুস। শরবতের মধ্যে লেবুর শরবত ও ট্যাং আর রসের মধ্যে আখের ঠান্ডা রস। এছাড়াও কিটকাট মিল্কশেক, স্ট্রবেরী মিল্কশেক, চকলেট মিল্কশেক এবং কলা মিল্কশেকসহ প্রায় অর্ধশত কোমল পানীয়ের আইটেম তৈরী হয় দোকানে। 

[৫] এর মধ্যে প্রতি গ্লাস আম, আনারস, বেল, জলপাই,কদবেল, বাঙ্গি ও পেঁপের জুসের দাম ৫৫টাকা। কালোজাম ও কমলা জুস ৭০টাকা, মাল্টা জুস ৮৫টাকা, স্পেশাল মিক্স ফ্রুট জুস ৮৫টাকা। প্রতি গ্লাস লেবুর শরবতের দাম ১০ টাকা আর ট্যাং শরবতের দাম ১৫টাকা। অপরদিকে প্রতি গ্লাস আখের রসের দাম ২০টাকা।

[৬] সরেজমিনে দেখা যায়, পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক, লক্ষ্মীবাজার, বাংলাবাজার ফুটওভারব্রিজের নিচে, সদরঘাট, গেন্ডারিয়াসহ অলি গলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে শরবত ও জুসের দোকান। ভাসমান কিংবা স্থায়ী যেই দোকানই হোক না কেন এক গ্লাস শরবত খেতে মানুষের প্রচন্ড আগ্রহ দেখা যায়। ক্লান্তি দূর করতে কিংবা গরমে নিজেকে একটু ঠান্ডা রাখতে এসব শরবত বা জুসকেই বেছে নেয় অধিকাংশ মানুষ। 

[৭] ব্যবসায়ীরা প্রতদিন সকালে উঠেই লেবু ও ফল আনতে যান রাজধানীর শ্যামবাজারে। শরবত ব্যবসায়ীরা এক বস্তা লেবুর পাশাপাশি লবণ ও ট্যাংয়ের প্যাকেট কিনে আনেন। অবস্থা ভালো হলে প্রতদিনই এক বস্তা লেবু শেষ হয়। অপরদিকে আখের রস বিক্রেতারাও সকালে কেরাণীগঞ্জে চলে যান আখ কিনে আনতে৷ দিনের জন্য ৫০-৬০টি আখ কিনে আনেন তারা। প্রতিটি আখের দাম পড়ে ২৫-৩০টাকা।

[৮] প্রতিটি আখ কেটে ২-৩ টুকরা করা হয়। প্রতি টুকরা দিয়ে দেড়-দুই গ্লাস রস হয়। বোতলে করে রস পার্সেল নিয়ে যাওয়ার সুযোগও আছে। সেক্ষেত্রে প্রতি এক লিটার আখের রস বিক্রি হয় ৪০টাকা। 

[৯] চিত্তরঞ্জন এভিনিউয়ে বাদশা জুসবার এন্ড কফিঘরে আমের জুস খেতে এসেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারহানা ইসলাম। তিনি বলেন, প্রায়ই জুস খেতে আসি। গরমে জুস খেলেই শান্তি লাগে। আশেপাশের অনেকেই জুস খেতে এখানে আসে। তাই মোটামুটি বেশকিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এরপর জুস পেতে হয়। দাম কিছুটা বেড়েছে আগের চেয়ে। 

[১০] ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে লেবুর শরবত খাচ্ছেন পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের বাসিন্দা রানা আহমেদ। তিনি বলেন, আশেপাশে অনেক শরবতের দোকান আছে। মন চাইলেই শরবত খেতে পারি৷ এটি মানসিক প্রশান্তিও জোগায়৷ বহুবছর আগে থেকেই পুরান ঢাকায় এমন অনেক শরবত ও জুসের দোকান ছিল।

[১১] বাংলাবাজার ওভারব্রিজের নিচে ভাসমান দোকানে দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে লেবুর শরবত ও ট্যাং বিক্রি করেন ভোলা জেলার বাসিন্দা আব্দুল মোতালেব। শুরুতে কেবল একটি দোকান থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় এখন ভাসমান ৪টি শরবতের দোকান আছে মোতালেবের। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শরবত বিক্রি করেন তিনি।

[১২] তিনি বলেন, ৫-৬ বছর আগে প্রতিদিন শরবত বিক্রি করে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আয় হত৷ এখন সেটা অর্ধেকে নেমে এসেছে। তবে এই ব্যবসা করেই জীবিকা নির্বাহ করছি, কোন সমস্যা হচ্ছেনা। প্রতিদিন ২০০ টাকা খরচ বাদে আয় হয় হাজার টাকা। জীবন চালানো যাচ্ছে মোটামুটি। 

[১৩] জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেইটের পাশেই আখের রস বিক্রি করেন সেন্টু মিয়া। এই ব্যবসার জন্য নিজেই কিনেছেন মেশিন। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আখের রস বিক্রি করেন তিনি। মাঝে মধ্যেই এই ব্যবসায় সহায়তা করার জন্য আসেন তার ভাগিনা মো. ইমরান। ইমরান বরিশালের একটি কলেজে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। 

[১৪] ইমরান বলেন, গরমে লোকজন রস খেতে আসে বেশ৷ তাতে করে আমাদের ব্যবসাও ভালো হয়। এই ব্যবসায় শান্তি আছে,সংসার চলে যায় মোটামুটি ভালোই।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়