শিরোনাম
◈ যেভাবে আটক হন সাবেক এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ (ভিডিও) ◈ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সেনাবাহিনী ক্যাম্পের সহায়তা পেতে যোগাযোগের নাম্বার দেয়া হল ◈ দুই দিন আগে মা মারা গেছেন, কাল মেজবান, আমাকে এখন না ধরেন ভাই” (ভিডিও) ◈ দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজ জন্মভূমিতে যাচ্ছেন কাল প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমাহ ৩ নারীকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ১ ◈ জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে জোরালো দৌড়: বিএনপিতে ফিরতে চান বহিষ্কৃত সাক্কু ও কায়সার ◈ আবারো মামুন লায়লার দ্বন্দ্ব, প্রকাশ্যে এলো ঐশী-মামুনের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ! ভিডিও ◈ পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে কি আটক ? যা জানা গেলো (ভিডিও) ◈ এবার মোদির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ◈ ভুয়া ভিডিও শেয়ার করে দুঃখ প্রকাশ ভারতীয় সাংবাদিকের

প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০২৩, ০৪:২৯ দুপুর
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০২৩, ০৪:৫৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

উত্তরায় হিজড়াদের জ্বালায় অতিষ্ঠ পথচারীরা

চলাচলকারী বাসে টাকা চাচ্ছে দুজন হিজড়া

মো. রফিকুল ইসলাম মিঠু, উত্তরা (ঢাকা): হিজড়াদের টাকা তোলা নতুন কিছু নয়। আগে মানুষ যা দিত, তা নিয়েই খুশি থাকত হিজড়ারা। কিন্তু ইদানীং তাদের আচরণ বদলে গেছে। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট যেখানে-সেখানে টাকার জন্য মানুষকে নাজেহাল করছে তারা। হিজড়াদের কেউ কেউ অভিযোগ করছে, রাজধানীতে অনেক ‘নকল’ হিজড়া আছে, যাদের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিনা পরিশ্রমে অর্থ উপার্জন করা।

ট্রাফিক সংকেতে যানবাহন থামার পর হিজড়ারা সামনে এসে দাঁড়ালে যাত্রীদের কিছু করার থাকে না। তাদের সঙ্গে তর্ক করলে যাত্রীদের আরও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। গতকাল মঙ্গলবার দেখা যায়, হিজড়াদের একটি দল বিমানবন্দরে সিগন্যাল পড়লেই দৌড়ে এসে যাত্রীবাহী যানবাহনে জোর করে ওঠে গাড়িতে থাকা যাত্রীদের কাছে টাকা দাবি করছে, না দিলে যাত্রীদের অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দিচ্ছে।

উত্তরা আব্দুল্লাহপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পথে চলাচলকারী বাসে উঠে পড়ে দুজন হিজড়া। প্রত্যেক যাত্রীর কাছে গিয়ে টাকা চাইতে থাকে। কেউ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেই গায়ে হাত দিচ্ছিল, আজেবাজে কথা বলছিল। তারা বাস থেকে নেমে যেতেই একাধিক যাত্রী বললেন, হিজড়াদের টাকা আদায় এখন রীতিমতো উৎপাতে পরিণত হয়েছে। হিজড়াদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারের এখনই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০০৪ সালে একটি জরিপ করেছিল। ওই জরিপে হিজড়াদের সংখ্যা ১৫ হাজার বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে হিজড়াদের দাবি, শুধু ঢাকা শহরেই কমপক্ষে ৩০ হাজার হিজড়া আছে। ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার হিজড়াদের একটি পৃথক লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

হিজড়ারা বলেন, গ্রামাঞ্চলে কিংবা জেলা শহরগুলোয় হিজড়াদের একঘরে হয়ে থাকতে হয়। সে কারণে তারা মেট্রো শহর গুলোয় চলে আসে। এদিক থেকে ঢাকা তাদের সবচেয়ে পছন্দ। সদ্য জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর খবর পেলেই বাসাবাড়িতে চলে আসছে হিজড়ারা। তাদের দাবির পরিমাণ অর্থ না দিলে বিশৃঙ্খলা শুরু করে। উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এমন ঘটনার খবর জানা যায়। 

এমনই একজন ভুক্তভোগী উত্তরার বাসিন্দা  শামীমা সুলতানা বলেন, ‘বাচ্চার বয়স ২০ দিন না হতেই একদল হিজড়া এসে হাজির। হট্টগোল শুরু করে। ১০ হাজার টাকা না দিলে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করার হুমকি দেয়। পরে তিন হাজার টাকা দিয়ে রেহাই মেলে।’

কয়েক দিন আগে হিজড়াদের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি বলেন টাকা দিতে অস্বীকার করলে শরীরে হাত দিতে শুরু করে পরে  ২০ টাকা দেই। কিন্তু তারা আজেবাজে কথা বলতে শুরু করে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় উত্তরায় দুইটি শক্তিশালী হিজড়া সংগঠন রয়েছে। একটি নিয়ন্ত্রণ করেন আপন, অরেকটি নিয়ন্ত্রণ করেন কচি। আপনের সহকারী হিসেবে কাজ করেন আব্বাসউদ্দিন আশিক নামে একজন এমনই তথ্য মিলে। আপনের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে বন্ধ বলে। কচির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। 

ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে উত্তরার হাউজ বিল্ডিং, রাজলক্ষ্মী, জসিম উদ্দিন, বিমানবন্দর এলাকায় ফুটপাতের দোকান থেকে শুরু করে অফিস আদালতে ঈদ, পূজা-পার্বণ, পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি আনুষ্ঠানিক দিবসগুলোতে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন বলে জানা যায়। বিশেষ করে ফুটপাতের দোকানগুলোতে সাপ্তাহিক হারে চাঁদা উঠান বলে ফুটপাত ব্যবসায়ীরা জানান। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে অশালীন অঙ্গভঙ্গি অপ্রীতিকর বক্তব্য প্রদান করেন তারা। উত্তরা সচেতন সমাজ মনে করেন তাদের টাকা-পয়সার প্রয়োজন আছে কিন্তু তাই বলে জোর করে অর্থ আদায় করা এটা চাঁদাবাজির শামিল। এই ব্যাপারে ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাকিল বলেন, এদের  অত্যাচারে যাত্রীবাহী পরিবহনে চলাটাই দুষ্কর।

বিষয়টি নিয়ে উত্তরা পূর্ব থানা, পশ্চিম থানা, এবং বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা বলেন অভিযোগ পেলে অভিযোগের ভিত্তিতে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কবির নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন ১০ টাকা ২০ টাকা নিলে তো হয় ৫০ টাকার নোট দিলে সেটা নিয়েই চলে যান। মনে হয় তাদের নিজের জমানো টাকা। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২ গ্রুপের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি ও হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটে থাকে।

তবে হিজড়ারা বলছে, টাকা না তুলে তারা নিরুপায়। তাদের আয়-রোজগারের কোনো সুযোগ নেই। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছে। ইদানীং কিছু নকল হিজড়ার কথাও বলছে অনেকে, যারা মূলত পুরুষ কিন্তু হিজড়া সেজে টাকা আদায় করছে।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়