মিনহাজুল আবেদীন: [২] শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চলমান সংকট নিয়ে সভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতি। রোববার (২৩ জানুয়ারি) বেলা আড়াইটায় এই সভা শুরু হয়। পরে রাত সোয়া আটটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের সামনে সমিতির সভাপতি তুলসী কুমার দাস সভার সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরেন। প্রথম আলো
[৩] সভায় চারটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এতে সরাসরি শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কিছু বলা না হলেও, উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি ‘সরকারের এখতিয়ারভুক্ত’ উল্লেখ করে ‘অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ’ করেছে সমিতি। জাগোনিউজ ২৪
[৪] শিক্ষক সমিতির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চারটি সিদ্ধান্ত ক্রমিক নম্বর দিয়ে তুলে দেওয়া হয়। এগুলো হচ্ছে:
* শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর বর্বরোচিত পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দাজ্ঞাপন করা হয়। অবিলম্বে সরকার কর্তৃক নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
* অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে যা দরকার, তা অনতিবিলম্বে করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
* উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। এ ক্ষেত্রে অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
* শিক্ষার্থীদের প্রতি কোনো রকম সহিংসতায় সম্পৃক্ত না হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
[৫] শিক্ষকদের এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীরা উল্লাস প্রকাশ করেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের আমাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ জানালেও, সেটি তারা করেননি। আজ তাঁরা আমাদের দাবির সঙ্গে একধরনের একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।’
[৬] সভায় শিক্ষার্থীদের দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ প্রসঙ্গে একমত প্রকাশ করা হয়েছেন কি না, জানতে চাইলে অধ্যাপক তুলসী কুমার দাস বলেন, ‘সরকারের প্রতি আমরা অনুরোধ করেছি, যেসব পদক্ষেপ নিলে অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব, সে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে।’
[৭] শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। দেশ রূপান্তর
[৮] পরদিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও, শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা পোস্ট