ইমরুল শাহেদ: ‘ত্রিরত্নে’র অন্যতম রত্ন খান জয়নূলের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ঢাকার চলচ্চিত্র জন্মলগ্ন থেকেই মোকাবিলা করেছে উর্দু, হিন্দি ও কলকাতার বাংলা ছবিকে। তার মধ্যেই বেড়ে উঠেছে এদেশের চলচ্চিত্রশিল্প। কিন্তু চলচ্চিত্র বর্তমান সময়ে যেমন পুষ্টিহীনতায় ভুগছে, শুরুতে তেমনটা ছিল না। সকল প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়েই এদেশে নির্মিত হয়েছে অনেক সফল বাণিজ্যিক ছবি। যাদের দিয়ে এই প্রতিকূলতা মোকাবিলা করা হয়েছে তাদের মধ্যে কৌতুকাভিনেতা খান জয়নূলও ছিলেন একজন। তার অনেক গুণ।
তিনি শুধু মানুষকে হাসাতেনই না, কাঁদাতেনও। বেতার, টেলিভিশন ও মঞ্চে কৌতুকাভিনেতা খান জয়নুল ছিলেন একাধারে নাট্যকার, কাহিনীকার, সংলাপ রচয়িতা, সাংবাদিক। এই ক্ষণজন্মা অভিনেতা মাত্র ৪২ বছর বয়সে ১৯৭৮ সালের ১৫ জানুয়ারি মারা যান। তার অভিনীত আলোচিত চলচ্চিত্র ১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন, মধুমালা, ময়নামতি, বেদের মেয়ে, পিচ ঢালা পথ, নীল আকাশের নীচে, সন্তান, মধুমিলন, নাচের পুতুল, অবুঝ মন, ছন্দ হারিয়ে গেল, জীবন তৃষ্ণা, বেইমান, ত্রিরত্ন, বাদি থেকে বেগম, অনেক প্রেম অনেক জ্বালা, পিঞ্জর। তার লেখা শান্তিনিকেতন নাটক নিয়ে ১৯৬৬ সালে ঢাকায় তৈরি হয় বশির হোসেন পরিচালিত প্রথম হাসির চলচ্চিত্র ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’। তার অন্তরের পুরোটাই ছিল রসিকতায় ভরপুর। কিংবদন্তী এই কৌতুকাভিতা কখনো পরিচালক ও প্রযোজক হওয়ার স্বপ্ন দেখেননি। সারাক্ষণই সৃজনশীলতায় নিমগ্ন ছিলেন। দেশের মানুষকে হাস্যরসের মাধ্যমে কিভাবে নিজেদের কৃষ্টি-কালচারে আকৃষ্ট করে রাখা যায় সেই ভাবনাই ছিল পুরো চেতনা জুড়ে।
এদেশের দর্শকের কাছে তার পরিচিতি ছিল ত্রিরত্নের এক রত্ন হিসেবে। ত্রিরত্নের অপর দুই রত্ন ছিলেন জলিল ও আশীষ কুমার লৌহ। সেই সময়ে কৌতুকাভিনেতা হিসেবে আরো জনপ্রিয় ছিলেন সুভাষ দত্ত, আনিস, মতি ও সাইফুদ্দিন। খান জয়নুল ১৯৩৬ সালের ৪ জুলাই বিক্রমপুরের লৌহজং থানার রানাদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৪৮ সালে কলকাতায় কিছু চলচ্চিত্রে মৃণাল কান্তি নামে অভিনয় করেন। তিনি সাপ্তাহিক পূবালী পত্রিকায় কিছুদিন সাংবাদিকতা করেন । ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত সুতরাং চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন ।