তাসলিমা আখ্তার: ভয় পেলে এভাবেই মরতে হবে প্রতিদিন। আপনার ভেতরে কুকড়ে থাকা কিংবা জমাট ঘৃণা, ক্ষোভ যদি শক্তি না হয়, যদি প্রতিরোধে সংগঠিত না হয় ডা. মুরাদরা কখনোই থামবে না। আরো দম্ভ, দাপট এবং শক্তি নিয়ে শেকড় গাড়বে। এই শেকড় শাসনে এবং মননে দুই-ই সয়ে নেবে। আপনার অজান্তেই।
গত কদিন থেকে ফেসবুকে তোলপাড় চলছে। আমরা অনেকে দাবি করছি ডা. মুরাদের বক্তব্যের জবাবদিহিতা ও অপসারণ। অনেকের কানে তালা দিতে কিংবা চোখ বন্ধ রাখতে ইচ্ছে হয়েছে, অনেকে আমার মতো বিক্ষুব্ধ, ক্রোধান্বিত তথ্য প্রতিমন্ত্রীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং নারী বিদ্বেষী বক্তব্যে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রীর ঔদ্ধত্যের প্রাণশক্তি যে ‘প্রধামন্ত্রী’ সেটা ডা. মুরাদ নিজেই বলেছেন। রাষ্ট্রপ্রধান কেউ শারীরিকভাবে নারী হলেই সে নারীর পক্ষে হবে এমনটা তো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে তাঁর সেনাপতিদের নারী বিদ্বেষী, যৌন নিপীড়নমূলক অবস্থান মূলত পুরো শাসন ব্যবস্থারই অবস্থান, এর-ই চিন্তার প্রকাশ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তাঁর নাতনী জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদের বক্তব্য সেই অবস্থানকেই দাম্ভিকতায় প্রকাশ করেছে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে যারা বিক্ষুব্ধ তাঁদের সকলকে বলি আসুন—কেবল গাল না ফুলিয়ে, ক্ষোভ-দুঃখকে এক করে প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধের শক্তি হই। নারী বিদ্বেষী এবং ভোটারবিহীন শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ-সংগ্রাম গড়ি। ব্যক্তি ও নাগরিক হিসাবে নারীদের মর্যাদা দিতে পারে না যে ব্যবস্থা তার বিরুদ্ধে দাঁড়াই। এ ছাড়া এই শাসনে সসম্মানে বাঁচা দায়। যদি না দাঁড়াই তবে যেকোনো প্রতিপক্ষকে সেই পুরনো কায়দায় প্রলেপ দিয়ে ঘায়েল করা হবে। তৈরি হবে নতুন নতুন ঘায়েলাস্ত্র এবং মারণাস্ত্র। আসুন কেবল দুঃখ হা-হুতাশ না করে প্রতিরোধের সংগঠিত শক্তি হই। সসম্মানে বাঁচতে লড়ি। মাঠে ময়দানে পাড়া মহল্লায় ঘরে বাইরে প্রতিরোধ সক্রিয় হই। লড়াইয়ের পথ বন্ধুর-মসৃণ না। কিন্তু সম্মানের। আসুন! পরস্পরের শক্তি হই সকল নারী বিদ্বেষ-অন্যায়-জুলুম-অসম্মানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই আসুন। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :