শিরোনাম
◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর, ২০২১, ০১:৪২ রাত
আপডেট : ১৫ নভেম্বর, ২০২১, ০১:৪২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দেবদুলাল মুন্না: কবীর সুমন হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে যা ভাবতেন

দেবদুলাল মুন্না: হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে আমার একবারই দেখা ও আলাপ হয়েছিলো। বোধহয় ৯৭/৯৮ সালে। ইউএসএ’র কোথায় একটা, হয়তো ফিলাডেলফিয়া, ওইখানে বঙ্গ সম্মেলন হচ্ছে। সম্মেলন মঞ্চের কাছাকাছি একদিন সকালে পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের সঙ্গে দেখা। সাহিত্য বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান হবে, সেজন্য তিনি চলেছেন মঞ্চের দিকে। আমাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এসে কথা বললেন। তাঁর সঙ্গে একজন ভদ্রলোক। সমরেশ বাবু আলাপ করিয়ে দিতে বললেন, ‘তিনি সুমন। আর তিনি বাংলাদেশের বিখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ’। ভদ্রলোক সঙ্গে সঙ্গে হাত জোড় করে বললেন, ‘দাদা, মার্জনা করবেন। আমি কোনো সাহিত্যিকই নই। সাহিত্যিক হলেন সমরেশ দা। আমি বাংলাদেশের নিতান্ত এক বেস্ট সেলার লেখক। সাহিত্য করি না, বেস্ট সেলার লিখি’। কথাগুলো তিনি বেশ স্বাভাবিকভাবে বললেন। কোনো আদিখ্যেতা ছাড়া, কণ্টে কোনো রকম আরোপিত আবেগ বা বিনয়ে গদগদ ভাব না এনে। এ রকম সোজাসাপ্টা কথা বাঙালিদের মুখে শুনি না সচরাচর। আজ এতো বছর পরেও প্রতিটি শব্দ মনে আছে, মনে আছে মানুষটির মুখ। ঢাকার এক তরুণ আমাকে তাঁর লেখা ‘নন্দিত নরকে’ পড়িয়েছিলেন, কোনোদিন ভুলবো না, চমকপ্রদ। আরও পরে হুমায়ূন আহমেদের তৈরি কিছু নাটকের ভিডিও দেখেছি। কী রসবোধ, কী হিউমার। ব্রিলিয়ান্ট। অসামান্য। তাঁর টিভি নাটকের সমতুল্য কোনো কিছু অন্তত পশ্চিমবঙ্গে আমি দেখিনি তেমন। আদ্যন্ত সৃজনশীল এক মানুষ। গত ৫০ বছরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বাঙালি ও উপমহাদেশীয় ব্যক্তিদের অতি সংক্ষিপ্ত তালিকাতেও হুমায়ূন আহমেদ স্থান পেতে বাধ্য।

সাহিত্য ছিলো সিরিয়াস ও হাল্কা দুইই- ধনু শেখ বলছে: আমার বুদ্ধি কেমন সেই বিষয়ে একটা গল্প শুনবেন? শুনবো। জবাব মফিজের। ধনু শেখ বললো, আপনাকে অতি আপনা লোক ভেবে বলছি। আর কাউকে এই ঘটনা বলা যাবে না। যৌবন বয়সে এই বুদ্ধি মাথায় আসলো। কোনো হিন্দু মেয়েকে যদি কোনোরকমে পাটখেতে ঢুকিয়ে ফেলা যায়, তার সঙ্গে কুকর্ম করা যায়, সে এই কথা প্রকাশ করবে না। প্রকাশ করলে তার জাত যাবে। তার গোষ্ঠীর জাত যাবে। কাজেই কুকর্মের কথা কেউ জানবে না। মফিজ বলেন, বুদ্ধিমতো কাজ করেছেন? কয়েকবার করেছি। যা ভেবেছিলাম তাই হয়েছে। কেউ মুখ ফুটে কিছু বলেনি। হিন্দুর কাছে জাত বিরাট জিনিস। ঠিক না? হুঁ। বুঝেছি কাজটা অন্যায়। দুষ্টু বয়সে কিছু অন্যায় সবাই করে। আমিও করেছি। পাপ হয়েছে মানি। সেই পাপ কাটান দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। কী ব্যবস্থা? এই অঞ্চলে মাদ্রাসা দেবো। মাদ্রাসায় তালেবুল এলেমরা আল্লাখোদার নাম নেবে। তারা যে সোয়াব কামাবে তার একটা অংশ আমি পাবো। ভালো বুদ্ধি না? হুঁ। আরও ব্যবস্থা রেখেছি। প্রতি ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে আমি তওবা করি। এতে আগের সব পাপ কাটা যায়। নিষ্পাপ অবস্থা শুরু হয়। বুদ্ধি ঠিক আছে না? যিনি পাপপুণ্য দেন তিনি কি আর আপনার কূটবুদ্ধি বুঝবেন না? তাও ঠিক। তারপরেও চেষ্টা চালিয়ে যাবো। কোনো এক ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যাবো। কনি জাল ফেলার পরে জাল যখন টানা হয়, তখন দেখা যায় কিছু মাছ ফাঁক দিয়ে আরামসে বের হয় না? হয়।
(হুমায়ূন আহমেদের ‘মধ্যাহ্ন’ উপন্যাস): তিনি নন্দিত নরকে, জোছনা ও জননীর গল্পসহ বিশাধিক সিরিয়াস লেখা লিখেছেন। কিন্তু লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নেওয়ায় ফরমায়েশি লেখা বেশি লিখেছেন। ফলে বেশি তার লেখা ভালোগুলো চাপা পড়েছে। তিনি বাংলা সাহিত্যে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো, মানে হেলাফেলার লেখক নন যে সেটা টের পাওয়া যাবে সময়ে। (আমার সঙ্গে আলাপচারিতায় কবীর সুমন, সাল ২০০৯, প্রকাশ অংশবিশেষ, যুগান্তর)। লেখক : সিনিয়র সাংবাকি। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়