শুভদীপ চন্দ: সম্পর্কে যেমন বিষ থাকে তেমনি মধু থাকে । কিছু কিছু স্বামী-স্ত্রী বিষকে উপভোগ করে, মধুর কথা কানে নেয় না। দুইজন বয়স্ক মানুষ আমাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া করছে। বাসায় বিদ্যুৎ নেই, লাইনে কী যেন এক ঝামেলা হইছে। আপনি যদি বিবাহিত না হনÑ এ পৃথিবী আপনার প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। সমস্যা হচ্ছে সহানুভূতি শব্দে যতোই ‘সহ’ থাকুক, তারা কখনো সহকারে হাঁটে না। মালিক পরিবারের দুইজন এ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য একে অপরকে দায়ী করছেন। তাতে আমার বা ফ্রিজে থাকা খাবারের কোনো উপকার হচ্ছে না। বিষয়টিকে সকালে পাত্তা না দেওয়া ঠিক হয়নি এখন বুঝতে পারছি। রেস্টুরেন্টে একা খেতে যাওয়া পাপ। খাবার আসতে দেরি হয়- সে সময় ব্যস্ত ভঙ্গিতে মোবাইল টিপতে হয়। সামনের টেবিলে দুইজন বসে আছে। মুখোমুখি বসে থাকলেও একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে না। এরকম হয় যখন দুইজন পরস্পরের কাছে খুব বেশি ধরা পড়ে যায়। লুকোনোর জায়গা না থাকলে চোখ বড় অস্বস্তিতে পড়ে। কোথায় স্থির হবে বুঝতে না পেরে এলোমেলো চলতে থাকে। প্রেমের সম্পর্কে আঘাতপ্রাপ্তির সুখ অন্যরকম। সংসারে আঘাত দেওয়া সুখ তার সমতুল্য। মানুষ কতো দ্রুত বদলায়। রেস্টুরেন্টের এ জুটিটাই হয়তো বিশ বছর পর ও বাড়ির সে জুটি হয়ে যাবে। মধু ছেড়ে বিষ নিয়ে বাঁচবে। আজকাল আর কিছু গল্প হয় না। ভালো লাগে না লিখতে।
তার চেয়ে রাতের আকাশ দেখতে ভালো লাগে। ওরিয়ন বেল্টের পাশে ব্যাটেলগুজ তারা। এটি নাকি সূর্যের চেয়ে কয়েকগুণ বড়। আমাদের খুব কাছেই এর অবস্থান। ৫৫০ আলোকবর্ষ দূরে। গত বছর কিছুসময় মিটমিট করে জ্বলেছে। তখন বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন এটি বিস্ফোরিত হতে পারে। তারারা বিস্ফোরণে সুপার নোভা হয়ে যায়। সে আলো পৃথিবীতে যখন আসবে রাতের আকাশ দিনের আলোর মতো ঝকঝকে হয়ে যাবে। সে দেখতে বাঁচতে হবে অন্তত হাজার বছর। ‘হাজারখানেক বছর’। ইশ্, বাঁচবো তো না। একটু মন খারাপ হয়। রাস্তার মোড়ে কুকুরগুলো নিরাপদ দূরত্বে ঝগড়া করছে। আমাদের এ হেলথ কমপ্লেক্সের কুকুরগুলো খুব ভিতু। সাধারণত তারা ঝগড়াও করে না। এতো রাতে কে যেন বাসা বদলাচ্ছে। ঠেলাগাড়িতে মাল বেঁধে নিয়ে যাচ্ছে। ঠেলাওয়ালা প্রায় একবার এ পায়ে তারপর ও পায়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্যাডেল চাপছে।
তারার আলো পৃথিবীতে আসতে এতো দেরি করে কেন? মানুষতো দশ বছরেই হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরে চলে যায়। দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যায়। ডায়াল লিস্ট আর রিসিভার লিস্টে প্রয়োরিটির ভিড়। সাম্যবাদ যা আছে সব আকাশে। তাই এক আকাশে এতো তারা। কোনো মান নেই অভিমান নেই প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির হিসেব নিকেশ নেই। থাকে অন্তত, হারায় না। Shuvodip Chanda-র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।
আপনার মতামত লিখুন :