খালিদ খলিল: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের স্ত্রীর পদমর্যাদার নাম ফার্স্ট লেডি। স্বামীর সঙ্গে তারা হোয়াইট হাউসে বাস করেন। শোনা যায়, প্রেসিডেন্ট পদে সুচারুভাবে দায়িত্ব পালনে স্বামীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন তিনি। তবে শুনে আশ্চর্য হবেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্টের সহধর্মিণীকে বিশেষ কোনো নামে ডাকা হতো না। ওই সময়ে নিজস্ব দক্ষতা, যোগ্যতা, সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে তাদের লেডি, মিসেস প্রেসিডেন্ট, মিসেস প্রেসিডেন্ট্রেস বা কুইন অব দ্য হোয়াইট হাউস নামে ডাকা হতো। যেমন- প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের স্ত্রীর পদবি ছিলো লেডি ওয়াশিংটন। প্রচলিত তথ্যমতে, ১৮৪০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফার্স্ট লেডি পদবির প্রচলন হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওই সময়ের প্রেসিডেন্ট জ্যাকারি টেইলরের স্ত্রী ছিলেন ডলি মেডিসন। প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক উদযাপনের সময় তিনি স্বলিখিত ও উচ্চ প্রশংসাযুক্ত কবিতায় তাকে ফার্স্ট লেডি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ১৮৬৩ সালে একটি প্রকাশনাতে সর্বপ্রথম লিখিতভাবে ফার্স্ট লেডি শব্দটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
ফার্স্ট লেডি কোনো নির্বাচিত পদ নয়। তারা কোনো সরকারি দায়িত্ব পালন করেন না। বেতনও পান না। তা সত্তে¡ও নানা সরকারি কাজ ও অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এসব কাজে তাকে সহায়তা করার জন্য স্টাফও থাকে। সব চেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, অতীতে অন্য নারীও ফার্স্ট লেডির মর্যাদা পেয়েছেন। যেমন- প্রেসিডেন্ট কন্যা-মায়ের অনিচ্ছাজ্ঞাপন, অক্ষমতাজনিত কারণে শূন্যস্থান পূরণে বিকল্পভাবে ফার্স্ট লেডির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া প্রেসিডেন্ট বিপতক বা কুমার হলে হোয়াইট হাউসে বসবাসরত অন্য নারী এ দায়িত্ব পালন করতেন। বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট বারাক হোসেন ওবামার স্ত্রী মিশেল ওবামা ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে ফার্স্ট লেডির মর্যাদা উপভোগ করেছেন। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ও সংবাদ সংস্থাগুলো প্রায়ই অন্য দেশের প্রেসিডেন্টের স্ত্রীকে ফার্স্ট লেডি হিসেবে ব্যক্ত করে। তবে কোনো দেশে যদি প্রেসিডেন্টের স্ত্রীর নির্দিষ্ট উপাধি থাকে, তাহলে এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে। আরেকটি মজার তথ্য, বিশ্বের কিছু দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নারীরা এগিয়ে রয়েছেন। সেক্ষেত্রে তাদের স্বামী অর্থাৎ পুরুষদের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈপরীত্য হিসেবে ফার্স্ট জেন্টেলম্যান উপাধি দেওয়া হয়।