সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু: কেরোসিন ও ডিজেলের লেজ আছে, হনুমানের মতো লম্বা লেজ। তবে এই লেজ নানা ধরনের শাখা-প্রশাখা যুক্ত লেজ। এই লেজে আগুন লাগলে সে আগুন বহু পথে, বহুদূর ছড়ায়। কেরোসিন, ডিজেলের সেই লেজে নতুন করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার দাম বেড়েছে এক লাফে, প্রতি লিটারে ১৫ টাকা। পণ্য পরিবহনে ব্যয় বাড়বে, সেই বাড়তি ব্যয়ের হিসাব যোগ হবে চাল, ডাল, আলু, পটোলসহ প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে। যেসব শিল্পপণ্য উৎপাদনে কেরোসিন, ডিজেলচালিত যন্ত্র ব্যবহৃত হয় সেসব পণ্যের বর্তমান মূল্যের সঙ্গে যোগ হবে কেরোসিনের বাড়তি মূল্য। ছোট ছোট সেচ যন্ত্র, চাষের কাজে ব্যবহৃত পাওয়ার টিলার, বিভিন্ন ধরনের মাড়াই কল, মাছধরা, যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, নৌকার খরচ বাড়বে। এই বাড়তি খরচ সরাসরি যোগ হবে কৃষিপণ্যের উৎপাদন, পরিবহন ব্যযের সঙ্গে। একটি পণ্য, মূল উৎপাদকের হাত থেকে ভোক্তার হাতে আসার আগে অনেকগুলো স্তরে কেরোসিন, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির আগুনে পুড়তে পুড়তে লাল টকটকে হয়ে যাবে।
এসবের বাইরে আরও একটি বিশাল ধাপ আছে। তেলের মূল্য বৃদ্ধির জন্য বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যানের মালিকদের খরচ যদি বাড়ে ৫ শতাংশ তারা এই অজুহাতে ভাড়া বাড়াবে ১৫ শতাংশ। উৎপাদকরা,পরিবহনের মালিকরা ডিজেল, কেরোসিনের বাড়তি মূল্য উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে যোগ করে নেবেন, এটাই স্বাভাবিক। ফলে তাতে তাদের খুব একটা দুঃখ-যন্ত্রণা হওয়ার কথা নয়। হনুমানের লেজের এই আগুনটা ভীষণভাবে তাদেরই পোড়াবে যাদের কামাই বান্ধা, কোনো রকমে চলার মতো। আর যাদের চুরির টাকা, ঘুষের টাকা, লুটের টাকার খনি আছে তারা নাকে তেল দিয়ে সহমতের সংগীত গাইবেন। [আচ্ছা বিশ্ববাজারে লিটার প্রতি কতো শতাংশ বাড়লো আর আমরা বাড়ালাম কতো শতাংশ? কম বাড়ালাম নাতো!]
Saifuddin Ahmed Nannu-র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।