শিরোনাম
◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১০ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে ◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির ◈ কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, আইনের শাসনে জীবনযাপন করি: ড. ইউনূস ◈ মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে ঢাকা ফিরছিলেন রফিক, পথে প্রাণ গেল সবার ◈ স্থায়ী জামিন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছি: ড. ইউনূসের আইনজীবী

প্রকাশিত : ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১০:৪৫ দুপুর
আপডেট : ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১০:৪৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডা. মুশতাক হোসেন : এ দেশেও যে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হচ্ছে না, কে বলতে পারে?

সারা পৃথিবী থেকে করোনা নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো দেশ তারা যতোই সাফল্য অর্জন করুক সেখানে আবার করোনা হওয়ার আশঙ্কা আছে। সিঙ্গাপুরে করোনা সংক্রমণ শূন্য হয়েগিয়েছিলো। সেখানে তারা আবার লকডাউন দেবে কিনা চিন্তা করছে। চীন ও নিউজিল্যান্ডে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। তারা তো করোনা নিয়ন্ত্রণে অনেক সফল। করোনা নিয়ন্ত্রণে আমাদের সাফল্য হচ্ছে আমরা আমারিকার মতো এতো ওপরেও না আবার ভিয়েতনাম, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, থাইল্যান্ড ও ভুটানের মতো সফলও না। জনসংখ্যা অনুপাতে করোনাতে মৃত্যুর যে হার সেটা মাঝামাঝি অবস্থান। এ দিকে দিয়ে সাফল্য বিচার করলেও আমরা মধ্যখানে আছি। সামনে সংক্রমণ আবারও বাড়তে পারে। আগামী সংক্রমণের আগে আমরা যতো বেশি টিকা দিয়ে রাখবো এতে করে আমাদের ক্ষয়ক্ষতি কম হবে।

টিকা নির্ভর করে সাপ্লাইয়ের ওপর। সারাবিশে^ টিকা উৎপাদনকারী ধনী দেশগুলো যদি মনে করে থাকে তারা নিরাপদ হয়ে গেছে তাহলে তারা গরিব দেশগুলোতে টিকা সরবরাহ বাড়াতে পারে। গরিব বা অনুৎপাদনকারী দেশগুলোকে টিকা না দিয়ে তারা মারাত্মক ভুল করছে। কারণ যারা কম টিকা প্রদান করছে সেসব দেশগুলোতে নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হয়ে টিকা প্রদানকারী দেশগুলোকেও নতুন করে সংক্রমণ করবে। যেমন: যুক্তরাজ্যে অধিক জনসংখ্যাকে টিকা প্রদান করা হলেও সেখানে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে এবং মৃত্যুও হচ্ছে। কাজেই টিকার বিষয়ে বৈশি^কভাবে যে চরম বৈষম্য হচ্ছে সেটা দূর করে প্রত্যেকটা দেশে জনসংখ্যার অনুপাতে সমানভাবে টিকা দেওয়া উচিত। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা এই বছরের শেষে সকল দেশে জনসংখ্যার শতকরা ৪০ ভাগ টিকা প্রদান করার কথা বলেছে। তাহলেই সুষমভাবে সারা বিশে^ করোনা সংক্রমণ কমে যাবে। বাংলাদেশের ভেতরেও প্রত্যেকটা জেলায় ও শহরে সমানুপাতিক হারে টিকা প্রদান করতে হবে। এক জেলায় প্রদান করে আরেক জেলার মানুষকে না দিলে হবে না। তাহলে সংক্রমণ টিকা প্রদান না করা জেলাতে বেড়ে যাবে। আমাদের দেশেও বণ্টন সুষম হতে হবে।

টিকা প্রদানে চ্যালেঞ্জও আছে। কোনো কোনো টিকা খুব শীতল তাপমাত্রায় রাখতে হয়। বাচ্চাদের যে টিাকা দেওয়া কিছুদিনের মধ্যে সেটাও সেটা ডিপ ফ্রিজে মাইনাস তাপমাত্রায় রাখতে হয়। জনগণ সহযোগিতা করলে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা যাবে। উপজেলা লেভেল পর্যন্ত স্কুলে বাচ্চাদের টিকা দেওয়া যাবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি তাদের নিয়ে আসে উপজেলায়। বাচ্চাদের চেয়েও টিকা জরুরি হচ্ছে বয়স্ক মানুষের জন্য। বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। প্রত্যেকটা বয়স্ক মানুষকে আমরা টিকা নেওয়ার জন্য সহযোগিতা করতে পারি। এগুলো করতে পারলে করোনা সংক্রমণের তৃতীয়/চতুর্থ ঢেউ যখন আসবে তখন মৃত্যুর সংখ্যা কম হবে।

করোনা সংক্রমণ কমে গেলেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের দেশেও যে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হচ্ছে না, এটা কে বলতে পারে? আমাদের হয়তো গবেষণার সেই লজিস্টিক সাপোর্টটা নেই। ভ্যারিয়েন্ট তো আমাদের দেশ থেকেও অন্য জায়গায় চলে যেতে পারে বা যাচ্ছে। আমরা তো সেটা ধরতে পারছি না। সংক্রমণ যদি না ঠেকানো যায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে তো বিপদ অবশ্যই বাড়বে। আন্তঃদেশীয় চলাচল হবেই। সেটা আমরা বন্ধ রাখতে পারি না। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সেক্ষেত্রে বিপদ অবশ্যই বাড়বে। স্বাভাবিক জীবনে আমরা যাবো, স্বাভাবিক জীবনে যেতে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। হাইওয়েতে দ্রæত গাড়ি চলে বলে আমি সে রাস্তা পাড়ি দেবো না? গাড়ি যখন থাকবে না তখন রাস্তা দেখেশুনে পাড়ি দেবে। আমি যদি চোখ বন্ধ করে রাস্তা পাড়ি দিতে যাই তাহলে অ্যাক্সিডেন্ট তো করবোই। কাজেই করোনা ভাইরাস আছে, কীভাবে ছড়ায় সেটা আমরা জানি। কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সুরক্ষায় থাকা যায় সেটাও আমরা জানি। সেটা যেন আমরা সবসময় মেনে চলি, সারা পৃথিবীতে করোনা ভাইরাস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত। সকলে নিরাপদ থাকলে পরিবার ও দেশ নিরাপদ থাকবে।

পরিচিতি : রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে লেখাটি লিখেছেন আমিরুল ইসলাম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়