শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি: কী পাচ্ছে বাংলাদেশ, কী হারাতে পারে? ◈ রাতেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা (ভিডিও) ◈ চাপাতি হাতে ব্যাগ ছিনিয়ে পুলিশের সামনেই হেঁটে গেলো ছিনতাইকারী, ভিডিও ভাইরাল ◈ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা ◈ রাতের আকাশে ভেসে উঠলো ‘নাটক কম করো পিও’ (ভিডিও) ◈ জটিল ভয়ানক যে রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ◈ কুড়িগ্রামে চাঁদা দাবি করা জামায়াতের সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার ◈ বড়াইগ্রামে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে দুই পরীক্ষার্থী ফেল! ◈ টাঙ্গাইলে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু ◈ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ তলিয়ে দেখা দরকার: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর, ২০২১, ০২:০২ দুপুর
আপডেট : ২৩ অক্টোবর, ২০২১, ০৩:১১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বন্দুকের গুলিতে বিজিবি সদস্যের আত্মহত্যা

মহসীন কবির, আল আমীন: [২] সাত বছর মানসিক যন্ত্রণা আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে করতে সত্যি বড় ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। এইবার একটু রেস্ট দরকার। ফেসবুকে নিজের কষ্টের কথা লিখে পোস্ট করে নিজের বন্দুকের গুলিতে এক বিজিবি সদস্য আত্মহত্যা করেছেন। সময় ও ডিবিসি টিভি

[৩] শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৮টা ৩ মিনিটে নিজের টাইমলাইনে একটি সুইসাইড নোট পোস্ট করার পর রাত ৯টায় ময়মনসিংহের খাগডহর এলাকায় অবস্থিত ৩৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পে আত্মহত্যা করেন তিনি। নিহত সিপাহীর নাম সোহরাব হোসাইন চৌধুরী (২৩)। তিনি ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার বাঁশ পাদুয়াগ্রামের আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর ছেলে।

[৪] সে ফেনীর পরশুরাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন বিজিবি ৩৯ ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের সহকারী পরিচালক ইউনুস আলী। নিজের বেতনের টাকায় সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হওয়ায় তিনি ক্ষোভে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসটি সময় টিভির পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

[৫] সুইসাইড নোটে সোহরাব হোসাইন লেখেন, নামে সরকারি চাকরি কিন্তু বেতনটা ঐ নামের ওপরই। ৭ বছর চাকরি, এখনও বাড়িতে গেলে কোথাও যাওয়া হয় না, ছুটির সময়টাও চোরের মতো থাকতে হয়।

[৬] ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের কাছে থাকা বন্দুক দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন সোহরাব হোসাইন চৌধুরী নামে বিজিবির এক সিপাহী। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহে।

[৭] শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাত ৮টা ৩ মিনিটে ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে একটি সুইসাইড নোট পোস্ট করার পর রাত ৯ টার দিকে ময়মনসিংহের খাগডহর এলাকায় অবস্থিত ৩৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পে আত্মহত্যা করেন এই সদস্য।

[৮] শনিবার (২৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টায় আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবি ৩৯ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক ইউনুস আলী।

[৯] নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন, কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ। নিহত সোহরাব ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর ছেলে।

[১০] এর আগে, নিজের বেতনের টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া নিয়ে ক্ষোভে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সোহরাব হোসাইন। সেখানে তিনি লেখেন, মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্ম নিয়ে ভালো কিছু আশা করা মহাপাপ। নামে সরকারি চাকরি কিন্তু বেতনটা ঐ নামের ওপরই। ৭ বছর চাকুরি এখনও বাড়িতে গেলে ঠিক মতো একটু কোথাও যাওয়া হয় না, ছুটির সময়টাও চোরের মতো থাকতে হয়।

[১১] তিনি আরও লেখেন, গত কিছুদিন আগে আম্মু খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো, মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেলাম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মায়ের জন্য ওষুধ কিনবো, কিন্তু সে টাকা আর হাতে নেই। পরে মামার কাছ থেকে ধার নিয়ে মাকে ওষুধ কিনে গাড়ি ভাড়া করে দিলাম। এমনটা প্রতি মাসেই হতে থাকে। না পারি নিজের খুশি মতো একটা জিনিস কিনতে কিংবা একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ভালো কিছু খেতে। না পারি পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে। তার মধ্যে বর্তমান বাজারের যা পরিস্থিতি এতে বাজার করা কিংবা সংসার চালানো কতটা কঠিন বোঝানোর মতো না।

[১২] মানসিক যন্ত্রণা আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে করতে এখন ক্লান্ত উল্লেখ করে সোহরাব হোসাইন আরও লিখেছেন, ছোট ভাইটা শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম। তার জন্য কিছু করবো তার সুযোগ হয়নি এই জীবনে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ প্রশ্ন করে, বিয়ে করি না কেন। কিন্তু মানুষকে তো আমার সরকারি চাকরির ভেতরটা দেখাতে পারি না। আমার বেতন, আমার সুযোগ, সুবিধা, সেভিংস এই সব কিছুতে অন্য একটা মানুষকে আনা আমার জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা। তাই বিয়ে শাদির চিন্তা করিও না। শুধু খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারলে খুশি এমন চাইলাম, তাও আর হয়ে উঠলো না। ৭টা বছর মানসিক যন্ত্রণা আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে করতে সত্যি বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এইবার একটু রেস্ট দরকার।

[১৩] আমার পরিবার, সহকর্মী, সিনিয়র-জুনিয়র, আমার বন্ধুদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এই নিকৃষ্ট কাজের জন্য। পারলে ক্ষমা করবেন এছাড়া বিকল্প কোনো পথ আমার ছিল না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়