তসলিমা নাসরিন: বাংলাদেশের প্রগতিশীল পত্রিকা প্রথম আলো। এই পত্রিকার মালিক সম্পাদক জামাতে বা হেফাজতে ইসলামের সদস্য নন। কিন্তু ইসলামী মৌলবাদি গোষ্ঠী যে ধরনের খবর ছাপায় আমার সম্পর্কে, প্রথম আলো ঠিক সেরকম খবরই ছাপায়। এর নতুন খবর হলো, তসলিমার বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা হয়েছে। মামলা যখন হয়েছে, তখন তো খবর করবেই, মানি। কিন্তু যখন পুরস্কার পাই, তখন খবর করে না কেন? লোকেরা তসলিমাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে, ঠ্যাং ভেংগে দিয়েছে, তসলিমা করোনায় আক্রান্ত, তসলিমা ডেংগুতে আক্রান্ত, তসলিমাকে ইংলিশ ক্রিকেটাররা চাবকেছে--- এইসব ছাপাবে।
কিন্তু ছাপাবে না তসলিমার কোনও লেখা, কাউকে জানাবে না তসলিমার বই প্রকাশ করেছে পেংগুইন, বা হারপার কলিন্স, তসলিমা ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে বক্তৃতা করেছে, তসলিমা ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারবার ডক্টরেট পেয়েছে। তসলিমা হার্ভার্ড থেকে ফেলোশিপ করেছে--- এই খবর করবে? করবে না। তসলিমা নামটির সংগে তারা নেতিবাচক ছাড়া ইতিবাচক কিছু ছাপাবে না -- এই তাদের সিদ্ধান্ত। কোনওদিন প্রশ্ন করবে না তসলিমাকে কেন দেশে ফিরতে দেয় না সরকার, কেন তসলিমার বই নিষিদ্ধ করে সরকার, তসলিমার পাওয়ার অব এটর্নির কাগজ কেন সত্যায়িত করে না দূতাবাস, তসলিমা এ যাবত নারীর অধিকার, মানবতা এবং সমতার জন্য যা লিখেছে, সমাজ তার গুরুত্ব কবে বুঝবে?
প্রগতিশীলেরা যখন মৌলবাদি হয়ে ওঠে, এবং মৌলবাদিরা তথাকথিত প্রগতিশীল --- তখন সমাজ থেকে শুধু দুর্গন্ধ বেরোতে থাকে। ফেসবুক থেকে