সোহেল রহমান: [২] দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬৫ কোটি ডলার ঋণ দেবে ‘এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক’ (এডিবি)। এ লক্ষ্যে সোমবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও-এ বাংলাদেশ সরকার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর মধ্যে দুটি পৃথক চুক্তি সই করা হয়েছে। চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পক বিভাগ (ইআরডি)-এর সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং এডিবি’র পক্ষে সংস্থাটির বিদায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ সই করেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
[৩] অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচী (উপ-কর্মসূচী-১) বাস্তবায়নে ২৫ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) এটি বাস্তবায়ন করবে। এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি মজবুতকরণ এবং সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সেবাসমূহ প্রাপ্তি সহজীকরণ।
[৪] ঋণচুক্তি অনুযায়ী, এ কর্মসূচীর পূর্বশর্তসমূহ গত ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অর্জিত হয়েছে। আগামী অর্থবছরে এই কর্মসূচির পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে উপ-কর্মসূচী-২-এর আওতায় ২৫ কোটি ডলারের আরও একটি নীতি নির্ধারণী ঋণচুক্তি সই হতে পারে বলে আশা করছে সরকার।
[৫] অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, দ্বিতীয় চুক্তিটি হচ্ছে ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়নে ঋণের প্রথম কিস্তির অর্থ প্রদানে ৪০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই। প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান দুই লেন বিশিষ্ট ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়কের (এন-২) উভয় পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য পৃথক সার্ভিস লেনসহ প্রায় ২০৯.৩৩ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণসহ দেশের সড়ক (ঢাকা-সিলেট করিডোর) পরিবহন নেটওয়ার্কের উন্নয়ন করা হবে।
[৬] এ করিডর ও এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক, বিমসটেক করিডোর, সার্ক করিডোরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্তির মাধ্যমে শিল্প ও বাণিজ্যে গতিশীলতা আনয়ন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এর ফলে ঢাকা-সিলেট আন্তর্জাতিক করিডোরের দক্ষতা কানেকটিভিটি ও নিরাপত্তা বাড়বে।
[৭] এছাড়া, এ প্রকল্পের মাধ্যমে মহাসড়কে নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফ্লাই-ওভার, বাঁক সরলীকরণ, রেলওয়ে ওভারপাস, পথচারি পারাপার, নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ, একইসাথে সড়ক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় সড়ক বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের জেলাসমূহের সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে এবং ভ্রমণ সময় প্রায় ২ ঘন্টা হ্রাস পাবে।
[৮] উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প-এর ডিপিপি অনুমোদিত হয়েছে। ডিপিপি অনুযায়ী প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ১৬,৯১৮.৫৯ কোটি টাকা (প্রায় ১৯৯৫.১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
[৯] এর মধ্যে জিওবি ৩,৬৭৩.৯০ কোটি টাকা (প্রায় ৪৩৩.২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ও প্রকল্প সাহায্য ১৩,২৪৪.৬৯ কোটি টাকা (প্রায় ১৫৬১.৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ০১ জানুয়ারি ২০২১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও
আপনার মতামত লিখুন :