শিরোনাম
◈ পারস্পরিক শুল্ক সংকট: চূড়ান্ত দর-কষাকষিতে বাংলাদেশ ◈ আরব আমিরাতের আবুধাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশির ভাগ্যবদল: লটারিতে জিতলেন ৮০ কোটি টাকা ◈ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় নিহত ১১৮, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পর্যালোচনায় হামাস ◈ ‘মব এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে কঠোর পদক্ষেপ নেবে সেনাবাহিনী’ ◈ হোটেলে নারীকে মারধর করা বহিষ্কৃত যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারের চেষ্টায় পুলিশ ◈ বনানীর জাকারিয়া হোটেলে ঢুকে নারীদের ওপর যুবদল নেতার হামলা, ভিডিও ◈ দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহালের গেজেট প্রকাশ ◈ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশ ◈ তিন দিনের ছুটিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, পাবেন না যারা ◈ উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে: সালাহউদ্দিন

প্রকাশিত : ০৩ অক্টোবর, ২০২১, ০৩:১৩ রাত
আপডেট : ০৩ অক্টোবর, ২০২১, ০৩:১৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বড়পুকুরিয়া খনির কয়লার দাম ফের বাড়ছে

নিউজ ডেস্ক: দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনির কয়লার দাম বাড়তে যাচ্ছে। টনপ্রতি কয়লার দাম ৯ ডলার বাড়িয়ে চীনা কনসোর্টিয়াম এক্সএমসি-সিএমসিকে চতুর্থ মেয়াদে কয়লা উত্পাদনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুত্ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনের আওতায় আগামী মাসের শেষ সপ্তাহে রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা পেট্রোবাংলার আওতাধীন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) সঙ্গে এ-সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। উত্তোলিত কয়লার সিংহভাগই ব্যবহূত হয় বড়পুকুরিয়া বিদ্যুেকন্দ্রে। ফলে বিদ্যুত্ উত্পাদন খরচও বাড়বে।

দেশে উত্পাদনরত একমাত্র কয়লাখনি বড়পুকুরিয়া। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয় ২০০৫ সালে। প্রথম থেকেই কয়লা তুলতে চীনা ঠিকাদারি কোম্পানিটির সঙ্গে চুক্তি করা হয়। সর্বশেষ চুক্তিতে প্রতি টন উত্তোলিত কয়লার দাম ছিল ৮১ মার্কিন ডলার। অর্থাত্ তারা এ দামে কয়লা বিসিএমসিএলের কাছে বিক্রি করত। এবারের প্রস্তাবে তা ৯ ডলার বাড়িয়ে ৯০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত ২২ সেপ্টেম্বর তা অনুমোদন করেছে। প্রস্তাবটি চুক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে আগামী মাসের শেষ সপ্তাহে। হতে যাওয়া সেই চুক্তিটির আওতায় আগামী ৬ বছরে সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন কয়লা বিসিএমসিএলের কাছে বিক্রি করবে ঠিকাদার জোট এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়াম। কয়লা কেনা বাবদ ৬ বছরে চীনা ঠিকাদারদের প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সর্বশেষ সভাশেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিদ্যুত্ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনের আওতায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে নতুন রোডওয়ে নির্মাণ এবং কয়লা উত্তোলনের জন্য ঠিকাদার নিয়োগসংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে কর্মরত চীনা কোম্পানি এক্সএমসি-সিএমসি কনসোর্টিয়ামকে চতুর্থ মেয়াদে আরো ছয় বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৯ কোটি ৪৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮২ টাকা।

বড়পুকুরিয়ায় উত্পাদিত কয়লার সিংহভাগই ব্যবহূত হয় খনির পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকা তিনটি বিদ্যুেকন্দ্রে। সে কয়লার সিংহভাগ বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে বিক্রি করা হয়। পিডিবি বিতরণ কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে তা গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছায়। এ প্রসঙ্গে পিডিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কয়লার দাম বাড়লে বিদ্যুতের উত্পাদন খরচও বাড়বে। ফলে গ্রাহক পর্যায়েও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে গ্যাসের এলএনজির-জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। দেশীয় গ্যাসের উত্পাদন কমে যাওয়ায় এলএনজি ও জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়ছে। এখন দেশীয় কয়লার দামও বাড়ল। এমন প্রেক্ষাপটে কয়েক মাসের মধ্যেই বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বিদ্যুত্ বিভাগ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। সব মিলিয়ে আগামী বছরের প্রথম ভাগেই বিদ্যুতের দাম ফের বাড়তে পারে। সর্বশেষ গত বছরের মার্চে বিদ্যুতের দাম বেড়েছিল।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, আগের চুক্তির সময় আর এখনকার সময়ের মধ্যে বাজার দর বেড়েছে। যন্ত্রপাতি আমদানি, বেতন বৃদ্ধিসহ নানা কারণে কয়লা উত্পাদন খরচ বাড়ায় দাম বাড়ল এ জ্বালানির। দরকষাকষির মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব দাম কম রাখা হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে কয়লা উত্পাদন বন্ধ রয়েছে। তবে বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কাজ চলমান রয়েছে। যে কয়লা মজুত রয়েছে তা দিয়ে পরবর্তী ধাপের উত্পাদন শুরুর পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যুেকন্দ্রে প্রয়োজনীয় কয়লা সরবরাহ করা যাবে।

২০০৫ সালে প্রথম এক্সএমসি-সিএমসির সঙ্গে চুক্তি হয় পাঁচ বছর মেয়াদে। এরপর ২০১১-২০১৭ সাল মেয়াদের সাত বছরের চুক্তি হয়। ২০১৭ সালে সম্পাদিত চার বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় গত ১০ আগস্টে। কিন্তু গত ২৫ জুলাইতে কয়লা উত্পাদন বন্ধ করে চীনা কনসোর্টিয়ামটি।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, এখন খনির ১৩১০ স্তর (ফেইজ) থেকে কয়লা উত্পাদন করা হচ্ছে। সেখানে আরো ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টনের মতো উত্তোলনযোগ্য কয়লা আছে। পরে নতুন স্তর ১৩০৬ থেকে কয়লা উত্পাদন করা হবে।

বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি) ১৯৮৫ সালে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া এলাকায় ৬ দশমিক ৬৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১১৮ থেকে ৫০৯ মিটার গভীরতায় উন্নতমানের বিটুমিনাস কয়লার সন্ধান পায়। বড়পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম লং ওয়াল মাইনিং পদ্ধতি থেকে পরিবর্তন করে ২০১৩ সাল থেকে লং ওয়াল টপ কোল কেভিং (এলটিসিসি) পদ্ধতিতে উত্পাদন শুরু হয়। এই পদ্ধতির ফলে খনির কয়লা উত্পাদন ক্ষমতা বাড়ে। সর্বশেষ দৈনিক গড়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা উত্পাদিত হয়। সূত্র: ইত্তেফাক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়