শিরোনাম
◈ আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে ইসরা‌য়েল‌কে বহিষ্কারের দাবি জানা‌লেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ◈ কূটনৈতিক সংকট ছাপিয়ে বাণিজ্যে ভারত–বাংলাদেশের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বাড়ছে ◈ বিএনপিকে চাপে রাখতে জামায়াতের যুগপৎ আন্দোলন ◈ এই সরকারও পুরোনো পথে, প্রশাসনে পদ ছাড়াই পদোন্নতি ◈ এ‌শিয়া কাপ, রা‌তে আফগানিস্তা‌নের মু‌খোমু‌খি বাংলাদেশ ◈ ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম: হিজাব–নন-হিজাব, সবার পোশাক ও পরিচয়ের সমান অধিকার নিশ্চিত হবে ◈ সঙ্কটে এশিয়া কাপ! দা‌বি না মান‌লে, প‌রের ম‌্যাচ আরব আ‌মিরা‌তের বিরু‌দ্ধে খেল‌বে না পাকিস্তান ◈ হ্যান্ডশেক বিতর্কে এবার মুখ খুললেন সৌরভ গাঙ্গু‌লি ◈ নেতানিয়াহুর পাশে আমেরিকা, লক্ষ্য হামাস ধ্বংস: রুবিও ◈ বিনা পাসপোর্টে ভারতে যাওয়া ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ

প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর, ২০২১, ০২:৩৯ রাত
আপডেট : ০১ অক্টোবর, ২০২১, ০২:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

খালিদ খলিল: রাজশাহী শিক্ষা নগরী হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনে রাজশাহী কলেজের গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা

খালিদ খলিল : শিক্ষানগরী হিসেবে রাজশাহী মহানগরীর গোড়াপত্তন হয় ১৮২৮ সালে বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। প্রতিষ্ঠানটি তদানিন্তন পূর্ববাংলায় আধুনিক শিক্ষার ইতিহাসে পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছিল। মূলত ইংরেজি শিক্ষার প্রতিস্থাপনা ও প্রসারকল্পে সে সময় রাজশাহীতে কর্মরত ইংরেজ কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল। সেদিনের সে ক্ষুদ্র ‘বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল’ ১৮৩৬ সালে প্রাদেশিক সরকার জাতীয়করণ করলে এ স্কুলটি রাজশাহী জিলা স্কুল নামে যা পরবর্তী সময়ে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল নামে পরিচিতি পায়।

রাজশাহী জিলা স্কুলের ছাত্রদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের অধিকাংশ বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৮৭৩ সালে জিলা স্কুলকে উচ্চমাধ্যমিক কলেজের মর্যাদা দেওয়া হয় এবং একই বছর ৫ জন হিন্দু ও ১ জন মুসলমান ছাত্রসহ মাত্র ছয়জন ছাত্র নিয়ে কলেজিয়েট স্কুলের সঙ্গে চালু হয় উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির সমমানের এফ. এ ফার্স্ট আর্টস কোর্স। ১৮৭৮ সালে এই কলেজকে প্রথম গ্রেড মর্যাদা দেওয়া এবং ‘রাজশাহী কলেজ’ নামে নামকরণ করার সঙ্গে সঙ্গে একে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত করে এখানে বিএ কোর্স চালু করা হলে উত্তরবঙ্গের সর্বপ্রথম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী কলেজ। ১৮৮১ সালে এই কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণির উদ্বোধন করা হয় এবং ১৮৮৩ সালে যোগ হয় বি.এল কোর্স। ১৯০৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন আইনে কলেজ তার চাহিদা মেটাতে না পারলে মাস্টার্স কোর্স ও বি.এল. কোর্সের অধিভুক্তি বাতিল করা হয়।

সে সময়েই রাজশাহীতে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজন অনুভুত হয়। রাজশাহীতে এ সময় স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্দোলন শুরু হয়। ভাষা আন্দোলনের কিছুদিন আগ থেকেই মূলত রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু হয়। মূলত রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য সর্বপ্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী শহরের ভুবন মোহন পার্কে। প্রথম দাবি অবশ্য ওঠে রাজশাহী কলেজেই। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গণে সমবেত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ পাস করার দাবি তোলে। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলো,মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হলো। এভাবে রাজশাহী গড়ে উঠলো শিক্ষা নগরী হিসেবে। রাজশাহী শহরে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ভূস্বামী রাজা, জমিদার এবং বিত্তশালীদের ভূমিকা ছিলো উল্লেখযোগ্য। তাদের মধ্যে দুবলাহাটির জমিদার হরনাথ রায় চৌধুরী,দীঘাপতিয়ার রাজা প্রমথনাথ রায়, রাজা প্রমোদ রায় ও বসন্ত রায়, পুঠিয়ার রাণী শরৎসুন্দরী দেবী ও হেমন্ত কুমারী দেবী, বলিহারীর কুমার শরবিন্দু রায়, খান বাহাদুর এমাদ উদ্দীন আহমেদ, কিমিয়া-ই-সাদাত এর অনুবাদক মীর্জা মো. ইউসুফ আলী, হাজী লাল মোহাম্মদ, নাটোরের জমিদার পরিবারের খান বাহাদুর রশীদ খান চৌধুরী, খান বাহাদুর এরশাদ আল খান চৌধুরী ও বঙ্গীয় আইন পরিষদের ডেপুটি স্পিকার ব্যারিস্টার আশরাফ আলী খান চৌধুরী ছিলেন অগ্রগণ্য। এছাড়া নাটোরের খান চৌধুরী জমিদার পরিবার রাজশাহী শহরের হেতেম খাঁ এলাকায় তাদের পারিবারিক বাসস্থান চৌধুরী লজ এ রাজশাহী কলেজে অধ্যয়নরত প্রায় বিশজন গরিব মুসলমান ছাত্রের জন্য বিনা ভাড়ায় থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তদানিন্তন পশ্চাৎপদ মুসলমান সমাজের শিক্ষার উন্নয়নে তাদের এই ভূমিকা ছিলো তাৎপর্যপূর্ণ।

রাজশাহী কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন হরগোবিন্দ সেন, যিনি রাজশাহী জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আর রাজশাহী কলেজই প্রথম কলেজ যেখান থেকে এদেশে প্রথম মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদান করা হয়। রাজশাহী কলেজে লেখাপড়া করেছেন-এমন কয়েকজন হলেনÑমোহাম্মদ খাদেমুল বাশার, মো. গোলাম কবির,স্যার যদুনাথ সরকার, কাজী মোতাহার হোসেন, রমাপ্রসাদ চন্দ,অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, শ্রী রাধিকা মোহন মৈত্র, প্রমথনাথ বিশী, কবি রজনীকান্ত সেন, খান বাহাদুর এমাদউদ্দীন আহমদ, মির্জা গোলাম হাফিজ, ড. কাজী আব্দুল মান্নান, ড. মযহারুল ইসলাম, ডা. গোলাম মওলা, বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী, বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, ড. মুহাম্মদ এনামুল হক, ঋত্বিক ঘটক,আনোয়ার পাশা, ড. এবনে গোলাম সামাদ, ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, ড. ওয়াজেদ আলী মিয়া, নাজমা জেসমিন চৌধুরী, অরুন কুমার বসাক, মাদার বক্স, জ্যোতি বসু প্রমুখ। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়