শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৩:৫৬ রাত
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৩:৫৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: বিভাগ উঠিয়ে দিয়ে আগে যতোটুকু স্বাধীনতা ছিলো সেটাও ছিনিয়ে নেওয়া হলো

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: সেলওয়া হোসাইন (Selwa Hussain) নামের এই ব্রিটিশ নাগরিক সবসময় ৬ কিলোগ্রাম ওজনের একটি রুকস্যাক বা ব্যাকপ্যাক পিঠে করে বহন করে চলেন। এই ব্যাকপ্যাকেই আছে তার প্রাণভ্রমরা। এইটা হাতছাড়া হলেই মৃত্যু অবধারিত। ২০১৭ সালে হঠাৎ করে তিনি শ্বাসকষ্ট জনিত অসুস্থতা বোধ করেন এবং এই কষ্টটা এক সময় life threatening হয়ে দাঁড়ায়। দ্রুত তাকে জিপি থেকে এক্সপার্ট এবং তারপরে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এই ট্রান্সফারগুলো খুব দ্রুত হচ্ছিলো কারণ তার অবস্থা দ্রুতই তাকে জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে নিয়ে যায়। এক সময় দেখা যায় তার হৃদযন্ত্র আর পাম্প করতে পারছিলো না। তাকে তখন কৃত্রিম হার্ট দেওয়া হয় এবং সেই থেকে সে ওই ব্যাকপ্যাক কাঁধে করে চলেন। তার এই ব্যাকপ্যাকে আছে একটি ব্যাটারী, একটি ইলেকট্রিক মোটর এবং একটি পাম্প যা বাহিরের বাতাসকে ঠেলে শরীরের ভেতরে থাকা প্লাষ্টিক চেম্বারে যেটা কৃত্রিম হার্ট এর কাজ করে। কল্পনা করুন সে যদি ইংল্যান্ডের নাগরিক বা পশ্চিমা কোনো উন্নত দেশের নাগরিক না হতো? আমাদের দেশে রাস্তার ট্রাফিক জ্যামের যেই অবস্থা তাতে প্রাথমিকভাবে বাসা থেকে হাসপাতালে নিতে নিতেই হয়ত জীবন শেষ হয়ে যেত। অথবা সে যদি এই সময়ের না হয়ে ১০০ বছর আগে জন্মাতো? বিজ্ঞানের অগ্রগতি আজ কোন পর্যায়ে কল্পনা করা যায়? সেই বিজ্ঞানকে আমাদের দেশ অবহেলা করছে।

মেডিকাল সাইন্সের অভূতপূর্ব অগ্রগতির পেছনের ভীত রচনা করে তত্বীয় পদার্থবিজ্ঞান তারপর এক্সপেরিমেন্টাল পদার্থবিজ্ঞান এবং শেষে ইঞ্জিনিয়ারিং। সেই বিজ্ঞানকে আমাদের সরকার প্রতিনিয়ত অবহেলা করছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে আজ ৫০ বছর হলো অথচ এখন পর্যন্ত একটি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা ইনস্টিটিউট গড়তে পারেনি। এই ব্যর্থতা স্বাধীনতার পর যত সরকার এসেছে সবার তবে যারা যত পরে ক্ষমতায় এসেছে তাদের দায়ের মাত্রাও ততো বেশি বেড়েছে। আর এখনতো আমরা উল্টো পথে হাঁটছি। স্কুল কলেজের নতুন কারিকুলাম করছে সরকার। সেখানে যেই পরিবর্তনগুলো আনা হচ্ছে সেগুলো যদি বাস্তবায়ন হয় তাহলে এই দেশে আর কোনদিন ভালো মানের বিজ্ঞানী বিশেষকরে পদার্থবিদ পাওয়া যাবে না। কি সেই পরিবর্তন? নতুন নিয়মে সবাইকে ১০টি বিষয় পড়তে হবে। ১০টি বিষয়ের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও রসায়ন এই তিনটি বিষয়কে এক করে একটি বিষয় অর্থাৎ বিজ্ঞান হিসাবে পড়ানো হবে। নতুন প্রস্তাবিত কারিকুলামে উচ্চতর গণিত বলতে কিছু থাকবে না।

থাকবে কেবল সাধারণ বিজ্ঞান এবং সাধারণ গণিত। এই সাধারণ বিজ্ঞান এবং সাধারণ গণিত পড়ে এই শিক্ষার্থীরা যখন উচ্চ মাধ্যমিকে সাইন্স নিয়ে পড়তে যাবে তার অবস্থা বুঝতে পারছেন? কারিগরি বোর্ড থাকা সত্বেও কারিগরি বিষয় থাকা ভুল না? ১০টি বিষয় থাকলেও পরীক্ষা হবে কেবল ৫টি বিষয়ে সেটা ভুল না? বাঙালি পরীক্ষা না থাকলে কিছু পড়বে? ইনফ্যাক্ট, স্ট্রাকচারাল এডুকেশনে সারা পৃথিবীতেই পরীক্ষা আছে। নতুন পদ্ধতির আরেক বড় ভুল হলো বিজ্ঞান শেখানোর আগে প্রযুক্তি শেখানো। জোর দেওয়া হয়েছে স্কিল এবং কিছু করে খেতে পাড়ার শিক্ষা। মূল ধারার শিক্ষাকে কি আমরা ভোকেশনাল বা টেকনিক্যাল কিংবা কারিশিক্ষায় নামিয়ে নিয়ে আনবো? বিভাগ উঠিয়ে দিয়ে সব কম্পালসরি করে আগে যতোটুকু স্বাধীনতা ছিলো সেটাও ছিনিয়ে নেওয়া হলো। পৃথিবীর কোথায় আছে নবম থেকে সবাইকে একই বিষয় পড়ানোর বাধ্যবাদকতা? এই জ্ঞান নিয়ে যেই শিক্ষার্থীরা একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান পড়তে যাবে সেতো কাপুত (kaputt) হয়ে যাবে। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়