মো. মশিউর রহমান: [২] পিরোজপুরের নাজিরপুর, গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া, বাগেরহাটের মোল্লাহাট চিতলমারী এবং ফরিদপুর মাগুরার বেশ কটি উপজেলার বুক চিড়ে বয়ে চলা মধুমতি নদীর করাল গ্রাসে বিলীন বিস্তীর্ণ জনপদ। নদী তীরের অসংখ্য গ্রাম আর জনপদ গ্রাস করেছে এই নিষ্ঠুর মধুমতি। বিরাণ ভূমিতে পরিণত করেছে বহু নগর সভ্যতা। আবার উর্বর পলির যোগান দিয়ে সুজলা সুফলাও করেছে এই মধুমতি।
[৩] মধুমতি নদীর দৈর্ঘ্য ১৭৭ কি. মি. আর গড় প্রশস্ততা এক হাজার মিটার। নদীটি জোয়ার ভাটা দ্বারা প্রভাবিত এবং ভাঙনকবলিত। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকা মতে এই নদীর আইডি নং ২৪১।
[৪] খরস্রোতা মধুমতির তীব্র ভাঙ্গনে নাজিরপুরে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সহ ভিটেমাটি হারিয়েছে সহস্রাধিক পরিবার। মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে পলিথিনের তাবু বানিয়ে বসবাস করছে অসংখ্য বনী আদম।
[৫] সরেজমিনে মধুমতির তীরবর্তী ঝনঝনিয়া মিঠারকুল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রাচীন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মিঠারকুল এতিমখানা ও মাদরাসার মসজিদ সহ কয়েক কাঠা স্থাবর সম্পত্তি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে টিনের বেড়া দিয়ে মসজিদ নির্মাণ করে নামায আদায় করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, ভাঙ্গনের যে অবস্থা তাতে অচিরেই হয়তোবা প্রতিষ্ঠানটির অবশিষ্ট নাম-নিশানা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
[৬] স্থানীয় বাসিন্দা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী জোহরা বেগম আহাজারি করে বলেন, তিনবার আমি ভাঙ্গনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। বর্তমানে কবরের উপর কোনোমতে ঘর তুলে থাকি। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন ধরনের সরকারি সহযোগিতা পাইনি।
[৭] মো. আলমগীর হোসেন নামে একজন জানান, মধুমতির ভাঙ্গনে সহায় সম্বল হারিয়ে পলিথিন দিয়ে তাবু বানিয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। ভাঙ্গনরোধে অতি দ্রুত কংক্রিটের স্লাব দিয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
[৮] এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, ইতিমধ্যে আমরা অনুমতি পেয়েছি এবং বর্তমানে বাঁধ নির্মাণের প্রস্তুুতি চলমান রয়েছে।সম্পাদনা: সঞ্চয় বিশ্বাস