গোলাম সারোয়ার: [২] কৃষি শ্রমিকের সর্বস্ব লুটে নেওয়ার ঘটনায় আল আমিন (৩৫) নামে এক ছিনতাইকারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ মালামালও। এছাড়া ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি সিএজি চালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে পুলিশ।
[৩] রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোর সোয়া ৪টার দিকে উপজেলার চরচারতলা গ্রামের ডেঙ্গাহাটি থেকে আল আমিনকে আটক করা হয়। সে ডেঙ্গাহাটির মৃত দুর্বাজ মিয়ার ছেলে।
[৪] এর আগে শনিবার দিবাগত রাত পোনে ১টার দিকে উপজেলার সোনারামপুর-তালশহর রাস্তার কালভার্টের উপরে মো. বদরুল আলম (২২) নামে এক কৃষি শ্রমিকের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায় ছিনতাইকারিরা। ছিনতাইকারির কবলে পড়া এ কৃষি শ্রমিকের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলায়।
[৫] পুলিশ জানায়, বদরুল প্রায়ই আশুগঞ্জের শরীফপুরে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে আসেন। শনিবার রাত ১১টায় তিনি সিলেট থেকে বাসে এসে আশুগঞ্জ গোলচত্তরে নামেন। তারপর শরীফপুর যাবার উদ্দেশ্যে একটি সিএনজির সাথে একশ টাকায় চুক্তি করেন। এসময় সিএনজিটিতে আরো একজন যাত্রী বসা ছিল। কিন্তু তিনি উঠার পর সিএনজির চালক আড়াইসিধার রাস্তা দিয়ে না গিয়ে মহাসড়ক হয়ে পূর্ব দিকে সোনারামপুর-তালশহর রাস্তা দিয়ে চালাতে শুরু করে।
[৬] তিনি উল্টো রাস্তায় আসার কারণ জানতে চাইলে সিএনজি চালক জানান, আড়াইসিধা রাস্তার ব্রিজ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, তাই ঘুরে তালশহর হয়ে শরীফপুর যেতে হবে। পরে উক্ত রাস্তার নির্জন এলাকার কালভার্টের উপরে নিয়ে সিএনজিটি থামিয়ে রাত পোনে ১টায় যাত্রীবেশী ছিনতাইকারি ও চালক মিলে বদরুলের গলায় ছুরি ধরে তার সাথে থাকা নগদ ৭ হাজার টাকা ও ১টি ১৫ হাজার টাকা মূল্যের এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনসহ সর্বস্ব ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ছিনতাইকারিরা তাকে রাস্তায় একা ফেলে সিএনজি ঘুরিয়ে আশুগঞ্জের দিকে চলে আসে। পরে বদরুল সেখান থেকে হাটতে হাটতে আবার গোলচত্তরে আসেন।
[৭] এসময় তিনি টহলরত পুলিশের নিকট ঘটনার বর্ণনা দেন। বর্ণনা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে আশুগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক ধর্মজিত সিনহার নেতৃত্বে সন্দেহভাজন আল আমিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করলে বদরুল তাকে শনাক্ত করেন। পরে তার নিকট থেকে ছিনতাই করা ৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
[৮] আল আমিনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সিএনজি চালক চরচারতলা গ্রামের তাত্তারীপাড়ার মৃত লাল মিয়া ছেলে মনিরের (৩০) বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ছিনতাই হওয়া মালামালসহ ব্যাগটি উদ্ধার করা হয়। তবে মনিরকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
[৯] আল আমিন জানায়, ছিনতাই করা ৭ হাজার টাকার বাকী ২ হাজার মনির নিয়েছে। পরে রোববার সকাল পোনে ৯টার দিকে রেইলগেইট এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে মনিরের নম্বরবিহীন সিএনজিটি জব্দ করা হয়।
[১০] এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আজাদ রহমান বলেন, ঘটনার পর তাৎক্ষণিভাবে অভিযান চালানো হয় এবং কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে ছিনতাইকারি আটকসহ মালামাল উদ্ধার করতে পুলিশ সক্ষম হয়েছে। তিনি জানান, ছিনতাইয়ের শিকার বদরুল আলম বাদী হয়ে আটক আল আমিন ও সিএনজি চালক মনিরসহ (পালাতক) অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্পাদনা: সঞ্চয় বিশ্বাস