শিরোনাম
◈ যুদ্ধ বন্ধের শর্তেই ইসরায়েলি জিম্মিদের ছাড়বে হামাস ◈ হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়  ◈ বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী ◈ থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে  প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা ◈ যে কোনো ভিসাধারী পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারবেন  ◈ পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফে'র গুলিতে বাংলাদেশি নিহত ◈  কমবে তাপমাত্রা, মে মাসেই কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা ◈ বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া মে মাসে, নজর রাখবে ভারত ◈ দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু: চুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, যান চলাচল শুরু ◈ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ভারত, চীন বা রাশিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত নয়: মার্কিন কর্মকর্তা

প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:২৭ রাত
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১০:২৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধে এপিজি’র মূল্যায়ন বাস্তবায়নে গুরুত্বারোপ

সোহেল রহমান: [২] মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ পরিপালন ব্যবস্থা জোরদার করতে এ-সংক্রান্ত মামলা পরিচালনায় পৃথক ‘এটর্নি সাভিস’ কিংবা ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রসিকিউশন সার্ভিস’ চালুসহ পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ’।

[৩] অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছেÑ মানি লন্ডারিং সংশ্লিষ্ট মামলায় নিম্ন আদালত থেকে যেসব আসামীরা জামিন বা খালাস পায়, সেসব মামলার আপিলের বিষয়ে দ্রুত অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে অবহিত করা ও এসব মামলার নথি চলাচল ডিজিটালাইজড করা; অবরুদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ/ব্যবস্থাপনার বিদ্যমান পদ্ধতি পর্যালোচনা-পূর্বক আধুনিকায়ন করা; মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের বিধান মোতাবেক বর্ণিত অপরাধের বিচারের জন্য বিশেষ জজ নিয়োগ প্রদান এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯-এর বিধান মোতাবেক ওই আইনে বর্ণিত অপরাধের বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা।

[৪] সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রালয়ের ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ’-এ অনুষ্ঠিত ‘মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা এবং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত ওয়ার্কিং কমিটি’র ১৯তম সভায় ‘বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’ (বিএফআইইউ)-এর পক্ষ থেকে ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ’-এর এসব সুপারিশের বিষয়ে সভাকে অবহিত করা হয়।

[৫] বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সভায় ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, অপরাধ সম্পর্কিত পারস্পরিক সহায়তা আইনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ হিসাবে ইতোপূর্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-কে নির্ধারণ করা হয়েছিল।

[৬] পরবর্তীতে এ কাজে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকেও সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া অপরাধ সম্পর্কিত পারস্পরিক সহায়তা বিষয়ক গাইড-লাইন প্রণয়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ও বিএফআইইউ-এর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনেরও সুপারিশ করা হয় বৈঠকে।

[৭] জানা যায়, বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ-এর একজন কর্মকর্তা বলেন যে, মানি-লন্ডারিং মামলাগুলো মনিটরিং করার জন্য কোনো কমিটি নেই। ফলে চাহিদা মোতাবেক মামলার তথ্যসমূহ উপস্থাপন করা যায় না। মামলা সংক্রান্ত বেশকিছু তথ্য আপ-ডেট থাকা দরকার।

[৮] যেমন মোট মামলার সংখ্যা, গুরুত্বপূর্ণ মামলাসমূহ, মামলার মোট আসামীর সংখ্যা এবং গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীর সংখ্যা, মামলার তদন্তের অগ্রগতি, বিচারকার্যের অবস্থান, বিচার বিলম্বের প্রকৃত কারণ, সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মামলাসমূহের দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নে প্রতিবেদন তৈরিকরণ ইত্যাদি।

[৯] মামলা সংক্রান্ত উল্লিখিত বিষয় সম্পাদনে একটি ‘কেইস কন্ডাক্টিং অফিস’ থাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে সে দায়িত্ব পালন বিএফআইইউ-এর ওপরই ন্যস্ত করা উচিত বলে বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া মামলা তদন্দকারী সংস্থার সঙ্গে উচ্চ আদালতের সমন্বয় সাধন এবং মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য মামলার তথ্য সংক্রান্ত একটি ‘ডিজিটাল ডাটাবেইস’ প্রণয়নেরও সুপারিশ করা হয় বৈঠকে।

[১০] সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশে মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ পরিপালন ব্যবস্থা মূল্যায়নে ‘এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি-লন্ডারিং’ (এপিজি)-এর সুপারিশমালা বাস্তবায়নে ‘জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ কর্তৃক অনুমোদিত ‘অ্যাকশন আইটেম’গুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং এ-সংক্রান্ত একটি লিখিত প্রতিবেদন ‘বিএফআইইউ’ বরাবর পাঠানোর জন্য ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ’-কে বলা হয়েছে।

[১১] ‘জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ কর্তৃক অনুমোদিত ‘অ্যাকশন আইটেম’-এর বিষয়ে সভায় ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ’-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘অ্যাকশন আইটেম’গুলোর মধ্যে কিছু বিষয় আইন ও বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট। বিষয়গুলো নিয়ে ইতোমধ্যে আইনমন্ত্রী, আইন ও বিচার বিভাগ সচিব এবং ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ’-এর সচিব আলোচনা করেছেন। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য আইনমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে চিঠি পাঠানো হবে।

[১২] জানা যায়, এপিজি’র বিভিন্ন সুপারিশের মধ্যে ‘রিস্ক এসেসমেন্ট অন লিগ্যাল পারসন অ্যান্ড লিগ্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ কার্যক্রম অন্যতম। এ বিষয়ে বৈঠকে বলা হয়, ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কর্তৃক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কমিটির দুটি সভায় ঝুঁকি নিরূপণ কার্যক্রমের রোডম্যাপ অনুযায়ী একটি খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে, সদস্যদের মতামত নিয়ে শিগগিরই এটি চূড়ান্ত করা হবে।

[১৩] সভায় ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন’ (বিএসইসি)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, মানি-লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে গত ৭ মার্চ একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বাধীন স্বয়ংসম্পূর্ণ বিভাগ গঠন করেছে বিএসইসি। সংস্থাটি এ পর্যন্ত ৮টি অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন করেছে এবং তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলেই মামলা দায়েরের উদ্যোগ নেবে কমিশন।

[১৪] সভায় বিএফআইইউ জানায়, এছাড়া সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঝুঁকি নিরূপণ, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে আন্তর্জাতিক যোগসূত্র উদঘাটনের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ-এর অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক)-কে ফোকাল পয়েন্ট করে ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

[১৫] সূত্র জানায়, কোম্পানি আইনে ‘প্রকৃত সুবিধাভোগী’-এর সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস’ (আরজেসি)-এর সক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে এপিজি’র সুপারিশের বিষয়ে বৈঠকে বিএফআইইউ-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘কোম্পানি আইন ১৯৯৪’-এর সংশোধনীতে অন্তর্ভূক্তির জন্য বিএফআইইউ কর্তৃক প্রণীত সুপারিশ ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ’-এর মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ’-এ পাঠানো হয়েছে এবং আরজেসি-ও কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত বিষয়গুলো ‘কোম্পানি আইন ১৯৯৪’-এ অন্তর্ভূক্তির প্রস্তাব করেছে। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়