এ.এইচ.সবুজ: [২] মহামারি করোনাভাইরাসের পূর্ববর্তী সময়ের মতো চিরচেনা ব্যস্ততা নেই গাজীপুরের বইয়ের মার্কেটে। জেলা শহরের জয়দেবপুর রাজবাড়ি রোডের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের বইয়ের দোকানগুলোতেও বর্তমানে নিস্তব্ধ ও নিরবতা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকান খুলে বসে থেকেও দেখা মিলছেনা প্রত্যাশিত ক্রেতার।
[৩] আঠারো (১৮) মাস আগেও যেখানে ছিলো প্রত্যাশিত ক্রেতা ও ব্যবসা ছিলো জমজমাট। সেই ব্যবসায় করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়ায় পুঁজি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে গাজীপুরের লাইব্রেরী ব্যবসায়ীদের। গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে করোনার কারণে এ দীর্ঘসময় পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এমন দুর্বিসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ঋন ও দোকানের সকল ধরণের খরচ মেটাতে না পারায় অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার চিন্তা করছেন। যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুতই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খুলে দেয়, তাহলে ব্যবসায়ীদের এমন পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না বলে মনে করেন তারা।
[৪] এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয়দেবপুর শহরের রাজবাড়ি রোডের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের অনার্স মাষ্টার্স লাইব্রেরীর পরিচালক মো. সানি জানান, করোনার কারণে আমাদের এই ব্যবসা নিয়ে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। স্কুল, কিন্ডারগার্টেন, কলেজ, মাদরাসা গুলো খোলা থাকলে আমাদের ব্যবসা সচল থাকতো।
[৫] এন.আই.ভূঞাঁ স্টোরসহ শহরের জোড়পুকুর পাড় এলাকার অক্ষর লাইব্রেরী, সোনার বাংলা লাইব্রেরী, আফনান লাইব্রেরী ও বই জগত লাইব্রেরীর মালিকরা জানান, এই মহামারি করোনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ব্যবসা। দ্রুতই স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাসহ অন্যান্য শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে এবং পথে বসার উপক্রম হবে। এই খারাপ সময়ে আমাদের পাশে কেউ নেই।
[৬] গাজীপুর চৌরাস্তা ইকরা লাইব্রেরীর পরিচালক ও বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির গাজীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন জানান, আমাদের সমিতির অধিনে প্রায় ৪ শতাধিক পুস্তক ব্যবসায়ী রয়েছেন। করোনা মহামারিতে আমাদের ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুবই সঙ্কটাপন্ন। এর মধ্যে প্রায় শতাধিক লাইব্রেরী বন্ধের পথে।
[৭] করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সমিতির পক্ষ থেকে কোনও ধরনের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে কিনা-এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো জানান, আমাদের কেন্দ্রীয় সংগঠন থেকে আমরা কোনও ধরণের প্রনোদনা বা সহযোগিতা পাইনি। তবে আমরা আমাদের জেলা শাখা থেকে গত বছর করোনাকালীন সময়ে প্রায় ১’শ জন পুস্তক ব্যবসায়ীদের মধ্যে নিত্য-প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। সম্পাদনা: সঞ্চয় বিশ্বাস