শিরোনাম
◈ আদানির বকেয়ার সব টাকা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ◈ মাঠে ছড়িয়ে থাকা লেবু ও  ডিম দে‌খে ম্যাচ খেলতে আসা ‌ক্রিকেটাররা ভয়ে পালালেন ◈ ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আপত্তি মোদি সরকারের! ◈ উনি ক্লাসে বাজে ঈঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করেন ◈ এবার নিউ ইয়র্ক মেয়রপ্রার্থী মামদানিকে গ্রেপ্তারের হুমকি ট্রাম্পের!, তীব্র প্রতিক্রিয়া ◈ বউ পেটানোয় শীর্ষে খুলনা ও বরিশালের মানুষ: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (ভিডিও) ◈ ক‌ষ্টের জ‌য়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনা‌লে রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ দুপু‌রে এ‌শিয়ান কাপ বাছাই‌য়ে স্বাগ‌তিক মিয়ানমা‌রের বিরু‌দ্ধে লড়‌বে বাংলাদেশ নারী দল ◈ প্রথম ওয়ান‌ডে ম‌্যা‌চে মুশফিক-রিয়াদের জায়গায় খেলবেন লিটন দাস ও মিরাজ ◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়?

প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট, ২০২১, ০১:৪৩ রাত
আপডেট : ২৯ আগস্ট, ২০২১, ০১:৪৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী: তালেবান এখন ঘরে বাইরে সংকটে

দীপক চৌধুরী: আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বোমা হামলায় মার্কিন সেনা হতাহতের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের তোপের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সারাবিশে^র গণমাধ্যম ও টেলিভিশনগুলোর চোখ এখন কাবুলের দিকে। সিএনএনসহ বিভিন্ন খ্যাতিমান টিভি খবরে প্রতিমুহূর্তে আফগানিস্তানের খবর। রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের কেউ বাইডেনের পদত্যাগ দাবি করেছেন। কেউ বলেছেন, তাকে অভিশংসন করা উচিত। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বাইডেনের সমালোচনা করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া বোমা হামলা হয়। এই হামলায় অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন। আহত দেড় শতাধিক। হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১৩ সেনা নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন। হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। কাবুলে জোড়া বোমা হামলাকারীদের ধরার অঙ্গীকার করেছেন জো বাইডেন। বিশ^বাসী এই নৃশংস ঘটনায় অবাক ও ক্ষুব্ধ। ইসলামী স্টেটের ভয়ংকর সন্ত্রাস সম্পর্কে দুনিয়াবাসী জ্ঞাত। এদিকে, ইতোমধ্যেই আফগানিস্তান ছেড়ে গেছে নিউজিল্যাণ্ড, স্পেন ও অস্ট্রেলিয়া।

কাবুলের বিমানবন্দরে হামলার ঘটনায় দুই রকম তথ্য দিয়েছে তালেবান। কিন্তু অনেকেই তালেবানের তথ্য নিয়ে বিভ্রান্ত ও সন্দিগ্ধ। কোনটি সত্য? সশস্ত্র সংগঠনটির এক সদস্য বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে প্রথমে বলেছিলেন, তাদের ২৮ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন হামলায়। কিন্তু তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলছেন, তাদের কেউ হতাহত হননি। বিশ্বাসী জানেন, সন্ত্রাসবাদের ওপর ভিত্তি করে যে দেশ গড়ে ওঠে তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। তারা কখনোই মানবাধিকার নিশ্চিত করতে পারবে না এবং শাসন ব্যবস্থা হয়ে থাকে অস্থায়ী। তালেবানের ইতিহাস তাই বলছে। ২০ বছর আগের তালেবান আর এখনকার তালেবান একরকম নয়- একথাটি খোদ আফগান নাগরিকেরাই বিশ্বাস করে না।

চরম অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা পুরো আফগানিস্তান ঘিরে। আর এর প্রথম স্বীকার হচ্ছেন নারীরা। তাদের নানারকম আশঙ্কা ও উদ্বেগ। কদিন আগেও কাবুল শহরে যে প্রাণ ছিল, এখন সেখানে আতঙ্কের জনপদ! খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। কিছু সময়ের জন্য প্রতিদিন দোকানপাট খোলে। দরকারি কেনাকাটা করে আবার যে যার ঘরে। এর মধ্যে জিনিসপত্রের দামও আকাশছোঁয়া। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি, রয়টার্স, দ্য ইকোনমিস্ট, গান্ধারা, হাইপার অ্যালার্জিক ও আওয়া ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য থেকে জানা যায়, বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীতে বিভক্ত আফগানিস্তান। তালেবান মূলত একটি পশতু জাতীয়তাবাদী আন্দোলন। এর বাইরে তাজিক, উজবেক, হাজারাসহ নানা জাতিগোষ্ঠী রয়েছে এবং এসব জাতিগোষ্ঠীর অঞ্চলভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। ফলে সবার সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা ছাড়া তালেবানের পক্ষে আফগানিস্তানের ওপর পুরো নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করা অসম্ভব। তালেবানরা সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। নারীর জন্য বিপদ সেখানে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সব ছবি সরিয়ে ফেলেছে নারী ফুটবলাররা। নারী ফুটবলাররা হতাশ। খেলার বুট, জার্সি পুড়িয়ে ফেলেছে। তালেবান নৃশংসতার উদ্বেগে নারীরা। নারী রাজনীতিক, সংস্কৃতকর্মী, নারী শিল্পী, নায়িকা, নারী ফুটবলার, সাধারণ নারী, শিশু ও সংখ্যালঘুরা জানেন না কী ভয়ংকর পরিণতি অপেক্ষা করছে সামনে। আতঙ্ক আর উদ্বেগ সর্বত্র। আফগান নারী ও কিশোরীদের নিয়ে; তাদের শিক্ষা, চাকরি ও চলাচলের স্বাধীনতা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বিশে^র বিভিন্ন দেশ। বিশে^র বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে, আফগানিস্তানে প্রতিবাদী এক নারীর নাম জারিফা গাফারি।

২৯ বছর বয়সী এই নারী আফগানিস্তানের প্রথম নারী মেয়রদের একজন। তিনি নারী অধিকারকর্মী হিসেবেও বেশ সুপরিচিত। তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর গাফারিকে বাড়ি ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ, তালেবান যোদ্ধারা তার বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করেছে এবং তার বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে তালেবানদের। এ ঘটনার পর তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। এর কয়েক দিন পরই তিনি পরিবারের সঙ্গে জার্মানিতে পালিয়ে যান। সেখানে বিবিসিকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার নেপথ্যকথা বলেন তিনি। আফগানিস্তানজুড়ে নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের ও কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ঊনিশটি দেশ। দুনিয়াবাসী জানে, তালেবানরা বর্বর ও পশ্চাৎপদ হিসেবে অভিযুক্ত। আধুনিক চিন্তার দুনিয়ায় ও আধুনিক বিজ্ঞানের এ সময়ে তালেবানের এমন উত্থানে বিশে^র নেতারাও চিন্তিত। তালিকা ধরে ধরে আফগানদের খোঁজা হচ্ছে। তালেবানযোদ্ধাদের এমন আচরণে আফগানরা বিস্মিত নন। অতীতে এমনটি দেখেছেন।
লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়