শিরোনাম
◈ আমরা তীব্র মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছি: যুবদল সভাপতি (ভিডিওি) ◈ পরকীয়া ঠেকাতে ছেলের কাঠমান্ডুগামী ফ্লাইটে ‘বোমা’ আতঙ্ক ছড়ানোয় মা-সহ গ্রেপ্তার ৩: র‍্যাব ◈ মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার: যৌথ তদন্তে কাজ করবে ঢাকা-কুয়ালালামপুর ◈ “বাংলা মাতৃভাষা বললে বিদেশি”, আসামে আসন্ন আদমশুমারি ঘিরে হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্তব্যে তোলপাড় ◈ চান্দিনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ ◈ ঘোড়াশালে এক কেজি কাঁচামরিচের দাম ৬০০ টাকা”ক্রেতারা দিশেহারা ◈ ‘আমরা মানুষ হবো কবে?’:মিটফোর্ডে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘিরে আজহারীর হৃদয়বিদারক প্রতিক্রিয়া ◈ মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: “নরপিশাচদের সামলান” — তারেক রহমানকে এনসিপি নেতা সারজিস আলমের কড়া বার্তা ◈ সেনাবাহিনী-পুলিশের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে: আইএসপিআর ◈ মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আশ্বাস আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের

প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট, ২০২১, ০৩:২৬ রাত
আপডেট : ২৮ আগস্ট, ২০২১, ০৩:২৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গৌতম চক্রবর্তী: এক অদ্ভুত প্রতিরোধের মুখে গোটা তালেবান বাহিনী, নিজেদের দখলীকৃত এলাকায়

গৌতম চক্রবর্তী: আহমেদ শাহ মাসুদ, যাকে বাগে না আনতে পেরে সুইসাইড বম্বার দিয়ে কাপুরুষের মতো হত্যা করে আলকায়দা আর মোল্লা ওমরের নেতৃত্বাধীন তালেবান। সেই পাঞ্জশিরের সিংহের ভূত আজও তাড়া করে বেড়াচ্ছে তালেবানকে। তাঁর ছেলে আহমেদ মাসুদ ও প্রাক্তন আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ ফের তালেবানবিরোধী গোষ্ঠীদের একত্রীত করছেন। শুরু হয়েছে নর্দান এলায়েন্স ০.২-এর প্রতিরোধ। তালেবান আগ্রাসনে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও ভাইস প্রেসিডেন্ট কথা দিয়েছিলেন তিনি পালাবেন না। নিজেকে কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে সালেহ পাল্টা লড়াই শুরু করেছেন তালেবানদের বিরুদ্ধে, সকল তালিবান বিরোধীদের সাথে নিয়ে। হ্যাঁ, আফগান ভূখণ্ডে দাঁড়িয়েই। না, এখনো দেশের এই অংশের দখল পায়নি তালিবান। তবে লড়াই চলছে।

এরই মধ্যে এক অদ্ভুত প্রতিরোধের মুখে গোটা তালেবান বাহিনী, নিজেদের দখলীকৃত এলাকায়। তালেবানেরা ক্ষমতায় এসেই দেশের নাম আর পতাকা বদলে দিয়েছে। নিজেদের সাদার ওপর কালো হরফে লেখা পতাকা দেশের পতাকা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। চেষ্টা বললাম, কারণ এই নিয়ে গোটা আফগানিস্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যার সম্মুখে রয়েছেন আফগান মহিলারা।

আফগান জাতীয়তাবাদ কখনো সেই অর্থে দানা বেঁধে ওঠেনি। গোটা আফগানিস্থান পরিচালিত হয়ে এসেছে আলাদা আলাদা গোষ্ঠী আর ওয়ার লর্ডদের হাত ধরে। ইতিহাস অন্তত তাই বলে। বহিঃশত্রুদের বিরুদ্ধে এরা কখনো কখনো একত্রীত হয়েছে ধর্মের নামে, কিন্তু গোষ্ঠীপরিচয় সবার আগে প্রাধান্য পেয়েছে। এই প্রথম, হ্যাঁ; ইতিহাসে এই প্রথম আফগানিস্থান দেশ হিসাবে জাতি হিসাবে একটু একটু করে আত্মপ্রকাশ করছে।

বিগত কয়েকদিন ধরেই দেশের বিভিন্ন রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিল, আফগানিস্থানের পতাকা নিয়ে। না, তালিব পতাকা নয়; আগের সেই ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা। মানুষ কোথাও কোথাও নতুন পতাকা ছিঁড়েও ফেলছে। তালেবানেরা নিরস্ত্র মানুষের মিছিলে গুলি চালাচ্ছে। তীব্র আঘাত করছে। মানুষ মরছে। তাও ইতিউতি আফগান পতাকা উড়ছে। উড়ছে তালিবানদের সামনেই। পতাকা গায়ে মানুষ রাস্তায় হাঁটছে, কখনো একা; কখনো বা মিছিলে। আফগান জাতীয়তাবাদ একটু একটু করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে। নর্দান এলায়েন্সের প্রতিরোধের থেকেও যা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার চোখে।

ইতিহাসের নিজের গতিপথ আছে, যা হাজার চেষ্টাতেও বদল করা যায় না। উগ্র জাতীয়তাবাদ আধুনিক মানুষ এড়িয়ে চলেন বটে, কিন্তু ধর্মকে ডিফেন্ড করতে এর জুড়ি নেই। ইতিহাসের রাস্তায় এই মাইলস্টোন পড়বেই। মানব সভ্যতার ইতিহাস সাক্ষী, এর প্রতিটি ধাপ প্রতিটি দেশ প্রতিটি জাতিকে টপকাতে হয়। আমার বাংলাদেশের কথা মনে পড়ছে। যে ইসলামিক ব্রাদারহুড থেকে পাকিস্তানের জন্ম, সেখানে বাঙালি জাতীয়তাবাদ পুরো ইসলামিক ব্রাদারহুডের কঙ্কাল বের করে দিয়েছিল। পৃথিবীর মানচিত্র বদলে গিয়েছিল, জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশের। এবার আফগানিস্তানের সেই রাস্তায় যাত্রা শুরু হলো।

সামান্য প্রতিরোধ। হয়তো লাঠি বন্দুক গুলির সামনে ভেঙে যাবে। কিন্তু আফগানিস্তানের মানুষের হৃদয়ে এই প্রতিরোধ রয়ে যাবে। বীজের অঙ্কুরোদ্গম হয়ে গেছে। শিকড়ও মাটি পেয়ে গেছে। এবার মহীরুহ হবার অপেক্ষায়। আম আফগান তালিবানদের পাকিস্তানি দালাল বলছে, আরও স্পেসিফিকালি বললে পাঞ্জাবীদের দালাল বলছে। গোটা আফগানিস্তানে পাকিস্তানিদের সামান্য গ্রহণযোগ্যতা নেই। আর গোটা তালেবান রেজিমটাই পাকিস্তানের মদতপুষ্ট। ফলে তালেবানদের বিরুদ্ধে জমি তৈরি। এখন দেখার, তালিবান সত্যিই নিজেদের বদলায়; নাকি আফগান জনগন তালিবান সরকারটাই বদলে দেয়।

আমার ইতিহাসের পাঠ বলছে, একটু একটু করে মানুষের প্রতিরোধ বাড়বে। সময়ের সাথে সাথে এই প্রতিরোধ তীব্র হবে। মানবাধিকার নারীর অধিকার গণতন্ত্র, সময়ের সাথে সাথে সব দাবি উঠে আসবে। তালেবানদের এবারের সরকার সামান্য স্বস্তি পাবে না। প্রতিরোধ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আর এভাবেই নানা জাতি নিয়ে তৈরি আফগানিস্তান একটু একটু করে সত্যিকারের দেশ হয়ে উঠবে এই তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করে। অনেক রক্ত অনেক ত্যাগ আগামীর আফগানিস্তানের ভিত্তি। যার যাত্রা শুরু এই ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকাটির হাত ধরে। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়