শিরোনাম
◈ কেউ গাছ কাটলে তার হাত কেটে দেব-এটা আমার ম্যাসেজ: মেয়র আতিক ◈ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত  ◈ বিশ্ব দরবারে বিএনপি দেশ ও জনগণের মান ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে: ওবায়দুল কাদের ◈ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক ◈ কারাগারে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের ◈ অভিযোগের জবাব দিতে দুদকে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর ◈ গরম আরো বাড়বে, তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪৫ ডিগ্রিতে ◈ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় সরকারি অর্থ বরাদ্দ বাড়ছে: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী ◈ ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১০১ রোগী ◈ মাধ্যমিক স্কুলের প্রাথমিক শাখারও ক্লাস বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশিত : ০৮ আগস্ট, ২০২১, ০৩:২৫ দুপুর
আপডেট : ০৮ আগস্ট, ২০২১, ০৪:৫৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] গরীব মানুষদের জন্য ২০২১-২২ সাল একটি অন্ধকার সময়: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বিশ্বজিৎ দত্ত: [২] রেমিটেন্সের ম্যাজিক এই বছরেই শেষ হয়ে যাবে। ২০২১-২২ সাল দেশের গরীব মানুষের জন্য একটি অন্ধকার সময় হিসাবে ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে থাকবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বাজেটে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সুফল প্রাপ্তি নিয়ে এক ওয়েবিনারে তিনি এ কথা বলেন।

[৩] নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়েজিত ওয়েবিনারে ড. দেবপ্রিয় একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি দেখান কোভিডে মানুষের আয়, কর্মসংস্থান, মজুরি সবকিছু কমেছে। বেড়েছে মুল্যস্ফীতি। সেই তুলনায় বাড়েনি সরকারি প্রণোদনা ও মানুষের টিকাকরণ। আর এই দুঃসময়ে উচ্চ বিত্তের মানুষ ও রাজনৈতিক দল যাদের সাধারণ মানুষের পাশে থাকার কথা তারা কেউ থাকেনি। সহায়তার হাত প্রসারিত করেনি। প্রত্যেকেই তাদের যথাযথ ভূমিকা সমাজে রাখতে পারেন নি। আর এই কারণেই আগামী দিনের ইতিহাসে ২০২১ সাল কৃষ্ণ সময় হয়ে থাকবে।

[৪] নিবন্ধে দেখানো হয় ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে দেশে আমদানি কমেছে, রপ্তানি কমেছে এমনকি রেমিটেন্সও কমেছে। তিনি মনে করেন চলতি বছর থেকেই রেমিটেন্সের যাদু আর থাকবে না। এর প্রভাবে দেশের জিডিপির হার ৮.২ শতাংশ থেকে কমে ৫.২ শতাংশ হয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগ গত ৫ বছর ধরেই ২১.২৫ শতাংশে রয়েছে। এক সময় ব্যবসায়ীরা বলেছিলেন সুদের হার কমালে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে এটি বাড়েনি। রাষ্ট্রিয় বিনিয়োগও বিশেষ করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তাবায়ণ হয়েছে মাত্র ৫৮ শতাংশ। বৈদেশিক সাহায্যও কমে এসেছে। এতে গরীব মানুষর শিক্ষা, স্বাস্থ্যেও বিরুপ প্রভাব পরেছে।

[৫] তিনি বিবিএসের তথ্য দিয়ে বলেন, দেশে পুজিগঠনের হার ১.৯৯ শতাংশ থেকে কমে ১.৭৭ শতাংশ হয়েছে। ভোগ কমে ৫.২৩ শতাংশ থেকে কমে ৫,০২ হয়েছে যার ফলে আয় বৈষম্যবৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের মজুরি কমে গেছে। কর্মস্থান হচ্ছে না। বৈদেশিক কর্মসংস্থান যেখানে ২০২০ সালে হয়েছিল ৫৯ হাজার এবারে তা কমে ২১ হাজার হয়েছে ।এই সময়ে রপ্তানি কমেছে ১১.২ শতাংশ। রেমিটেন্স জুলাইতে কমেছে ২৮ শতাংশ। করোনার সময়ে রেমিটেন্সে নানা ধরণের প্রণোদনা ও অন্যান্য কারণে যে রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছিল সেটি আগামীতে আর থাকবে না।

[৬] দেশে করোনা পরিস্থিতিতে ৮০ শতাংশ মানুষ তাদের খাদ্য ব্যায় কমিয়ে দিয়েছে। ৪৭ শতাংশ মানুষ প্রোটিন গ্রহণ কমিয়ে দিয়েছে। ৬০ শতাংশ মানুষ ঋণ করে খাচ্ছেন। ২৭ শতাংশ মানুষ তাদের সঞ্চয় ভেংগে খাচ্ছেন। এই অবস্থায় সরকারের প্রণোদনার সমালোচনা করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, সরকার এই পর্যন্ত ৩০টি প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। এর বেশির ভাগই ঋণ। ২০. ৫ শতাংশ গরীব মানুষ এই প্রণোদনার প্রত্যক্ষ সহায়তা পাচ্ছেন। কোভিড প্রণোদনায় গরীব মানুষের হিস্যা আসলে ১ শতাংশ।

[৭] সরকার কৃষি সহায়তা দিচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী ঘর বানিয়ে দিচ্ছেন বা খাদ্য শস্য ক্রয় করা হচ্ছে। এগুলিকে তিনি সরকারের কোভিডকালীন প্রণোদনা নয় বলে মনে করেন। তিনি বলেন এগুলো সরকার সব সময়ই করছে। তিনি সরকারের এই ধরণের প্রণোদনাকে বলেছেন হাইব্রিড প্রণোদনা। তিনি গরীবদের প্রত্যক্ষ খাদ্য সহায়তা ও নগদ অর্থ প্রদানের জন্য বলেন। তিনি গরীবের খাদ্য ১০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ টাকা ও অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধিরও সমালোচনা করেন।

[৮] তিনি সরকারের ৩৩৩ নম্বরে জরুরি খাদ্য সহায়তার মাত্রা বৃদ্ধির কথাও বলেন। কোভিড টিকা প্রদানে বৈষম্যের কথাও তুলে ধরা হয় নিবন্ধে। ড. দেবপ্রিয় বলেন, টিকার ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে গরীবেরা। এটি তাদের সচেতনতার অভাব। আবার সরকারের টিকা প্রদানের পদ্ধতির সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এই কাজে তিনি দ্রুত বেসরকারিখাতকে সম্পৃক্ত করার জন্য প্রস্তাব করেন। তিনি জানান বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে সংক্রমিত ২৬টি দেশের মধ্যে রয়েছে। প্রতি ১০ লাখে ১৩২ জন মারা যাচ্ছেন। এই মৃত্যুর মিছিল কখন কমবে এখনো অনিশ্চিত। সরকারের উচিৎ টিকার সরবরাহ বৃদ্ধি ও দ্রুত টিকাদান করা।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়