বিনোদন ডেস্ক : রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীর বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে বাস করা চিত্রনায়িকা পরীমনির ভিন্ন রকম দিন কাটল। বুধবার রাতে আটক হওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার রাতে আদালতে হাজির করার আগপর্যন্ত ২০ ঘণ্টার মতো র্যাব সদর দপ্তরে কাটাতে হয়েছে তাঁকে। প্রথম আলো
রাত সাড়ে আটটার দিকে আদালতে হাজির করে মাদকের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরীমনিকে সাত দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ। আদালত তাঁর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার বিকেলে বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে মদ ও বিভিন্ন মাদক উদ্ধার করে র্যাব। অভিযান শেষে মধ্যরাতে তাঁকে র্যাব সদর দপ্তরে নেওয়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সেখানে ছিলেন তিনি।
র্যাব সূত্র জানায়, পরীমনিকে র্যাব সদর দপ্তরের জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে রাখা হয়। সেখানে আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতে সদর দপ্তর পৌঁছানোর পর পছন্দমতো পরীমনি দুটি সেদ্ধ ডিম, ভাত ও চায়নিজ সবজি খান। এ ছাড়া তাঁকে লেমন জুস দেওয়া হয়। সকালে পরীমনিকে দেওয়া হয় পরোটা, সেদ্ধ ডিম ও গরুর মাংস। পরীমনি দুপুরে খেয়েছেন ভাত, মুরগির মাংস ও সবজি-ডাল।
একাধিক র্যাব কর্মকর্তা বলেন, পরীমনি যতক্ষণ র্যাব সদর দপ্তরে ছিলেন, একটু পরপরই তিনি লেমন জুস চেয়ে খেয়েছেন। র্যাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর আচরণ ছিল স্বাভাবিক।
র্যাব হেফাজতে পরীমনি কেমন ছিলেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. খাইরুল ইসলামের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, র্যাব সদর দপ্তরের জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে রাখা হয়েছিল পরীমনিকে। তাঁর আচরণ ছিল স্বাভাবিক। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি র্যাব কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করেছেন।
গত জুনে রাজধানীর অদূরে বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে তাঁকে হত্যাচেষ্টা ও ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে বলে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আলোচনায় আসেন পরীমনি। পরে তাঁর মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী ওরফে অমিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন এখন জামিনে মুক্ত।
গতকাল বিকালে পরীমনির বাসায় যায় র্যাবের একটি দল। এ সময় পরীমনি ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন। এ সময় তিনি থানা-পুলিশ, ডিবির কর্মকর্তা ও পরিচিতজনদের কাছে ফোন করে তাঁকে রক্ষার আকুতি জানান। র্যাবের সদস্যরা বারবার পরিচয় দিলেও ভেতর থেকে দরজা খুলছিলেন না পরীমনি।
একপর্যায়ে দরজা খুলে দেওয়া হলে র্যাবের সদস্যরা ভেতরে ঢোকেন। এরপর শুরু হয় তল্লাশি। একপর্যায়ের পরীমনিকে আটক করা হয়। অভিযান শেষ র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, পরীমনির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ ওয়াইন, আইস, এলএসডি ও মাদক সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
পরীমনিকে আটকের পর রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার নজরুল ইসলাম রাজকে আটক করে র্যাব। পরে র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, পরীমনি ও নজরুল রাজসহ এই চক্র ডিজে পার্টির আয়োজনের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করত। এসব অর্থ তারা বিভিন্ন ব্যবসার কাজে লাগাত।
এদিকে রাতে পরীমনির মামলা তদন্তের দায়িত্বভার গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :