শিরোনাম
◈ বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপের মিথ্যাচার, নতুন সংকটে স্টারমার: ডেইলি এক্সপ্রেসের রিপোর্ট ◈ শুধু অতীতের নয়, বর্তমানের দুর্নীতি থামাতেও নজর দিতে হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশ ও চীন সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে একসাথে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সাফ চ‌্যা‌ম্পিয়নশী‌পে নেপালকে ৪-০ গো‌লে হারা‌লো বাংলাদেশ ◈ শ্রীলঙ্কার প্রতি বাংলা‌দে‌শের সমর্থন, চোখ এড়ায়নি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের ◈ আফগানিস্তান-শ্রীলংকা ম্যাচের ফল যেমন হলে লাভ বাংলাদেশের ◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয় বিএনপি : সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল ◈ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সাত দল

প্রকাশিত : ০৪ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৯ রাত
আপডেট : ০৪ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] বোয়ালমারীতে আরও এক মানসিক ভারসাম্যহীন ১০ বছর ধরে শিকলবন্দী

সনতচক্রবর্ত্তী: [২] ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় শাহিন ফকির (২৬) নামের নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের সন্ধান পাওয়া গেছে। বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কলিমাঝি গ্রামের আমিন ফকিরের দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ের মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন শাহিন সবার বড়। সে গত ১০ বছর ধরে শিকলবন্দি জীবনযাপন করছেন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে বর্তমানে বিনা চিকিৎসায় মানবিকভাবে জীবন যাপন করছে । তার শারীরিক অবস্থাও দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে।

[৩] পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছোটবেলায় রেললাইনে পাটিতে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান শাহিন। পরে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর পাবনার একটি মাদরাসায় তাকে আরবি পড়তে পাঠানো হয়। সেখান থেকে কোরআনের ১৫ পারা পর্যন্ত মুখস্ত করেন শাহিন। হঠাৎ তার শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। পরে তিনি বাড়ি চলে আসেন।

[৪] শাহিনের মা সাজেদা বেগম আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, ‘বড় আশা নিয়ে ছেলেকে মাদরাসায় ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু বাগের নির্মম পরিহাস তাকে আজ আমরা ঘরের বারান্দায় শিকলে ১০ বছর বেঁধে রেখেছি। তাকে ছেড়ে দিলে সে বাড়ির সবাইকে মারধর করে। বাড়িঘর ভাঙচুর করে। আগে শরীরে জামা-কাপড় রাখলেও এখন রাখতে চায় না। তিনি আরও বলেন, তাকে সুস্থ করার জন্য লোকের মুখে যা শুনেছি তাই করেছি। তার চিকিৎসা করতে গিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব। থাকার জায়গায়টুকু ছাড়া আর কিছুই নেই।

[৫] আক্ষেপ করে সাজেদা বেগম বলেন, ‘শাহিনের নামে একটা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড আছে। এছাড়া আমরা আর কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাই না। ছোট ছেলে তুহিন ফকির (১৮) ইলেকট্রনিক্সের কাজ করে যা পায় তা দিয়েই আমরা কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি।’শাহিনের বাবা আমিন ফকির বলেন, ‘আমি একজন দিনমজুর। এখন বয়স হয়েছে। কাজকর্ম করতে পারি না। আমার ৩০ শতাংশ জায়গা বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করেছি। এখন আর কিছু নেই। তাই বিনা চিকিৎসায় শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি।’

[৬] ছেলে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মা সাজেদা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন । ‘আল্লাহ আমার কোরআনের পাখিকে নিয়ে গেলে কাইন্দে কাইটে মাটি দিয়ে থুইতাম। আল্লাহ তায়ালার কাছে বলতাম, হে প্রভু, আমি গরিব মানুষ। আমার সংসারের বড় ছেলের কী অপরাধ ছিল? তুমি আমাদের এত কষ্ট কেন দিচ্ছ?’ শাহিনের সুস্থতায় সমাজের বিত্তবান, প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেছে তার পরিবার।

[৭] স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজকর্মী সৈয়দ তারেক মো. আব্দুল্লাহ আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, শাহিন সত্যিই মানসিক ভারসাম্যহীন। তার পরিবারের বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। অমানবিক জীবনযাপন করছে শাহিন। পরিবারটির পাশে স্থানীয় প্রশাসন ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত। রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চার নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ঝন্টু বিশ্বাস বলেন, আমরা পরিবারটিকে সহযোগিতা করার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করি। প্রতিবন্ধীর ভাতার কার্ড আমি নিজ উদ্যোগে করে দিয়েছি।

[৮] এ ব্যাপারে সরেজমিনে খোঁজ-খবর নিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রকাশ কুমার বিশ্বাস।

[৯] বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঝোটন চন্দ্ আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়