মনিরুল ইসলাম: [২] চামড়ার উপযুক্ত দাম না পাওয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সরকারি ঘোষণার কারণে অনেক মাদ্রাসাই এবার চামড়া সংগ্রহে মাঠে নামেনি। বিগত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে চামড়া সংগ্রহে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।
[৩] গত কয়েক বছর ধরেই কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করে উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় চামড়া রাস্তায়, ডাস্টবিন, নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কওমি মাদ্রাসাগুলোর চামড়া থেকে আয়ের বদলে চামড়া সংগ্রহে খরচ হয়েছে বেশি। ফলে সংকটের মুখে পড়ে কওমি মাদ্রাসাগুলো। এবার অনেক মাদ্রাসাই চামড়া সংগ্রহ করতে মাঠে নামেনি বলে জানা যায়।
[৪] অন্যদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার লক্ষ্যে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কওমি মাদ্রাসাসহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছে সরকার। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাড়িতে চলে যাওয়ায় অনেক মাদ্রাসা চামড়া সংগ্রহে তাদের মাঠে নামাতে পারেনি।
[৫] কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু কিছু মাদ্রাসা অল্প মানুষ দিয়ে চামড়া সংগ্রহের চেষ্টা করেছে। চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় এবার অনেকে চামড়া সংগ্রহ করছে না।
[৬] মিরপুর, মোহাম্মদপুর, আজিমপুর, কলাবাগান,রামপুরা, বাড্ডা, চৌধুরী পাড়া, পুরনো ঢাকা, নিউ পল্টন লাইন এলাকা ঘুরে অল্প সংখ্যক মাদ্রাসা ছাত্রকে চামড়া সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। মাদ্রাসা ছাত্রদের চেয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল বেশি।
[৭] মোহাম্মদপুর মীনার মসজিদের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র আবুল কালাম আজাদ বলেন, এবার কোরবানির ঈদে মাদ্রাসা বন্ধ। আমাদের মাদ্রাসার সিনিয়র ক্লাসের কেউ কেউ চামড়া সংগ্রহে করছেন। দাম কম হওয়ায় আমরা বুঝেশুনে চামড়া নিচ্ছি।
[৮] উল্লেখ্য, গত বছর ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হলে ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। তবে মাঝে কওমি মাদ্রাসাগুলো খোলার অনুমতি দিয়েছিল সরকার। যদিও পরবর্তীকালে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবার বন্ধের নির্দেশ দেয় সরকার। বেশিরভাগ মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় চামড়া সংগ্রহের জনবল না থাকায় অনেকে এবার বিরতি দিয়েছে চামড়া সংগ্রহে।
[৯] কওমি মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, কওমি মাদ্রাসা পরিচালিত হয় দান-অনুদানে। জাকাত, চামড়ার টাকা ব্যবহার করা হয় এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ব্যয় বহন করতে। আর এই শিক্ষার্থীদের থাকা, খাওয়া ও পড়ানোর খরচ নেয় না মাদ্রাসাগুলো। চামড়ার আয় থেকে কোনও কোনও মাদ্রাসা ৬ মাস পর্যন্ত এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ব্যয় বহন করতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :