শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ১৬ জুলাই, ২০২১, ০৫:২১ সকাল
আপডেট : ১৬ জুলাই, ২০২১, ০৫:২১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাকন রেজা: ভাতের দাবি, পাথরে মাথা ঠোকা

কাকন রেজা: অনেকে বলেন, ‘লকডাউনে ভাত দিতে না পারলে, গ্রেপ্তার করা হোক। জেলখানায় অন্তত দু’বেলা ভাত পাওয়া যাবে।’ সামাজিকম ধ্যমে অনেককেই এমন কথা লিখতে দেখেছি। তাদের সে আশাতেও গুড়েবালি মনে হচ্ছে। যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে পালিয়েছে তিন বন্দী। তার আগে দিনভর আন্দোলন করেছে শিশু-কিশোর বন্দিরা। তাদের অভিযোগ তাদের পেটপুরে খেতে দেওয়া হয় না। দুপুরে হাফ প্লেট ভাত, রাতে এক পিস রুটি দেওয়া হয়। এতে তাদের ক্ষুধা নিবারণ হয় না।

বন্দীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে যশোরের জেলা প্রশাসকের কথায়। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানকে উদ্ধৃত করে দৈনিক মানবজমিন জানাচ্ছে, দেড়শজনের ধারণ ক্ষমতার কেন্দ্রটিতে আড়াইশজন বন্দী রয়েছে। বেশ কিছু দাবিতে তাদের অসন্তোষ রয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেছেন, ‘আমি নিজেও গিয়েছিলাম। তাদের কথা শুনেছি। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি।’ অর্থাৎ সমস্যা রয়েছে। ঘটনাটি ১১ জুলাই শনিবার রাতের। রাত থেকে শুরু। এরপর পালিয়ে যায় তিন কিশোর বন্দী।

দেশের কারগারগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দি রয়েছেন, এটা গণমাধ্যম জানিয়েছে অনেক আগেই। বন্দি বৃদ্ধির কারণ বিষয়েও ধারণা দেওয়া হয়েছে গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবর বা প্রবন্ধ-নিবন্ধে। সে বিষয়ে আর না যাই। এটা রাজনীতির বিষয়। সে বিষয়ে বলুক রাজনৈতিক বিরোধী-বিশ্লেষকরা, সঙ্গে বুদ্ধিজীবীরাও।

ফিরি সেই সামাজিকমাধ্যমে। যে বিপ্লবীরা কারাগারে যাওয়ার কথা বলেন। যারা আশা করেন কারাগারে গেলে দু’বেলা ভাত পাওয়া যাবে, তাদের কথায়। কারাগারে যাওয়ার ইচ্ছাটা কোনো কাজের কথা নয়। কেন কাজের কথা নয়, তার ব্যাখ্যা করতে গেলে রাজনীতি টেনে আনতে হবে। আর রাজনীতি টানাটা সমকালে বিপজ্জনক। যে বিপদ এড়াতে বিপ্লবীরা কারাগারে ভাত নিশ্চিত করার কথা বলেছেন।

কী অদ্ভুত চিন্তা। কারাগারে গেলে ভাত পাওয়া যাবে। এই চিন্তা স্যাটায়ারিক হলেও পরিত্যায্য, খল-পণ্ডিতের মতন। এটা ভুল মেসেজ দেয়। ভাতের জন্য কারাগার মেনে নেয়াটা রাজনীতির জন্যও ভুল মেসেজ, সমাজের জন্যও। এতে আপোসকামিতা বাড়ে। মানুষের নিজ মৌলিক অধিকার শুধু অন্নতেই সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। পেটে-ভাতে হয়ে পড়ে। বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা সকল মৌলিক অধিকার ঠাট্টার ছলে হলেও হয়ে ওঠে গৌণ। সম্ভবত লক্ষ্যটাও তাই, হাসতে হাসতে মেনে নেওয়া। অভ্যস্ত হবার চর্চা। আর কৌশলটা হলো ঠাট্টা। যেমন, ঠাট্টার ছলে আমরা রাষ্ট্রের কাছে জবাব চাই। রাষ্ট্র কি জীবন্ত কিছু, রাষ্ট্রের নিজস্ব চিন্তা আছে! অথচ আমাদের জবাব চাওয়া সেই রাষ্ট্রেরই কাছে। পাথরে মাথা ঠোকা যাকে বলে। আমাদের মাথা বোধহয় পাথরে ঠোকার জন্যই। লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়