শাহীন খন্দকার ও মহসীন কবির: [২] বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড-১৯ এর আইসিইউ সম্প্রসারণ এবং ওপিডি শেড উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত চলমান কঠোর লকডাউন শিথিল করা হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
[৩] স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদের যে আনন্দ, সে আনন্দ মানুষ করতে পারবে না। আমরা এমনভাবে যাতে ঘোরাফেরা না করি, ঈদের আনন্দ যেন দুঃখে বা ট্র্যাজেডিতে পরিণত না হয়ে যায়। সংক্রমিত হয়ে মানুষ মারা গেলে ঈদ আর ঈদ থাকবে না, তখন আমাদের মাতম করতে হবে।’ বাংলাদেশের করোনাভাইরাস প্রায় সব বিভাগে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। কিছু কিছু বিভাগে স্থিতিশীল আছে, কিছু কিছু বিভাগে ঊর্ধ্বমুখী।
[৪] মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ১৫ হাজার বেড রয়েছে, এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ বেডে রোগি ভর্তি আছে। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণের হার কমাতে হবে। সংক্রমণের হার কমাতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সংক্রমণের হার বাড়লে রোগির সংখ্যা বাড়তে থাকবে, স্বাস্থ্য সেবায় বিরাট চাপ পড়বে। আমাদের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে। মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হবে। যেসব কারণে সংক্রমণ বাড়ে, আপনাদের অনুরোধ করবো সেসব কারণ আপনারা বুঝে চলবেন।
[৫] খুলনা এবং রাজশাহী বিভাগে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে গিয়েছিলো। আশার কথা হলো বর্তমান সময়ে কিছু কিছু জেলায় সংক্রমণ ও মৃত্যু কমেছে। অর্থাৎ লকডাউনের সুফল আমরা পেয়েছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে আইসিইউ ছিল মাত্র ২০টি, আমরা সেটিকে ৩০ এ উন্নীত করেছি। আমরা লক্ষ করেছি, এবার সংক্রমণ গ্রামে-গঞ্জে বেশি, শহরে কম।
[৬] গ্রাামের মানুষ মনে করে, সাধারণ সর্দি-কাশি যে কারণে চিকিৎসা নিতে দেরি করে। যারা বয়স্ক আছেন তারা বেশি মারা যাচ্ছেন। আমরা ফিল্ড হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা দেয়া ও তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাবেন, দেখবেন কোনো কোনো লোকজন অসুস্থ হয়েছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে টেম্পারেচার ও অক্সিজেন লেভেল মাপবেন।
[৭] প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেবেন। এর মাধ্যমে রোগির সংখ্যা ও মৃত্যুর হার কমবে বলে আমরা মনে করি। স্টক থেকে ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে। আমরা আরো ভ্যাকসিন পাবো। ভ্যাকসিন নিতে যদি সমস্যা হয়, গ্রামের মানুষদের যদি নিবন্ধন করতে কষ্ট হয় তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েও আমরা ভ্যাকসিন দেয়া চেষ্টা করবো এটা পরের বিষয়।
[৮] টিকার বিষয়ে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণের বয়সসীমা কমিয়ে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা ছেলে-মেয়েদের তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজে পাঠাতে চাই। শিক্ষকদের আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি এবং ১৮ বছর ও এর বেশি বয়সী ছেলে-মেয়েদের আমরা ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসবো। তাদের স্কুল-কলেজে যাওয়ার সুযোগ করে দেবো। তাদের জীবনের একটা বছর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা একটা দেশের জন্য বিরাট ক্ষতি। সম্পাদনা: মেহেদী হাসান