মোজাফ্ফর হোসেন: ‘মহানগর’ দেখার পর ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’ দেখলাম। মহানগর বাংলাদেশের হিসেবে ভালো। বেশ ভালো। অভিনয় নির্মাণ স্ক্রিপ্ট সব মিলিয়ে এটি ভালো। ভালো মানে আমার দেখা থেকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশটি ওয়েবসিরিজের মধ্যে রাখবো ব্যাপারটি তাও না, দেশি সেন্টিমেন্ট সরিয়ে বলছি। মূল প্রসঙ্গে আসি, মহানগর দেখে আমার যে তৃপ্তি সেটা মাটি করে দিলো ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’। এমনিতেই আমাদের আন্তর্জাতিকভাবে কিছুটা পরিচিত পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর কাজের ভক্ত আমি না। আয়োজন যতো বড়, ততো মানসম্মত স্ক্রিপ্ট হয় না। এই ওয়েব সিরিজেও টিপিক্যাল ফারুকীকে পাওয়া যায়। বড় বড় অভিনেতা, কিন্তু অভিনয় করার মতো স্ক্রিপ্ট তৈরি করেননি। অকারণ তারকাদের ভিড়, ইরেশের জন্য কোনো স্ক্রিপ্টই ছিলো না।
চঞ্চলের কথা ধরছিই না। বক্তব্য ঠাসতে গিয়ে চিত্রনাট্যের পা পিছলে গেছে। নারীর লড়াকু চরিত্রটিও শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সেটা যে সবসময় হতেও হবে, তা বলছি না। কিন্তু স্টোরির মনে হয়েছে কোনো মোটিফ নেই। ওভারঅল অর্ডিনারি। জোর করে থ্রিল আনার চেষ্টা করতে অকারণে ছুটিয়ে নেওয়া হয়েছে পার্থকে। দুর্বল ইনভেস্টিগেশন। প্রথম অংশটা নারীদের কর্মজীবনে যৌননির্যাতনের ডকুফিকশন হিসেবে ঠিক আছে, কিন্তু পরে ওয়েবফিকশনের মেজাজ ধরতে গিয়ে খেই হারিয়ে গেছে। তাছাড়া ফারুকীর সিনেমাটোগ্রাফি ভালো। আমি তার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের ভক্ত না হলেও এখানে চলনসই। তার কাজের সবচেয়ে যেটা উপভোগ্য সেটা হলো সেন্স অব হিউমার। উইট। স্যাটায়ার। এইখানে তার সঙ্গে তুল্য বাংলাদেশে খুব বেশি নির্মাতা নেই। হাতে গুণে দুয়েকজন থাকতে পারে। আমার ব্যক্তিগত মত জানালাম। জানি অধিকাংশ মানুষের সঙ্গে আমার মত মিললো না। হয় আমার প্রত্যাশা বেশি, নয়তো বুঝি কম। লেখক : কথাসাহিত্যিক। ফেসবুক থেকে