খান আসাদ: প্রান্তিক পুঁজিবাদে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত তরুণেরা উচ্চবিত্ত হতে চায়। সে ব্যক্তি হিসেবে ‘মালিক’ হওয়ার স্বপ্ন দেখে। অনেক টাকা হবে। বড়লোকের সিল্কি চুলের শাদা মেয়ে বিয়ে করবে। পাজেরো গাড়িতে চড়বে। বিদেশে একটি বাড়ি থাকবে। সে, ‘ব্যক্তি মালিকানা’ ভালো মনে করে, কারণ ‘সামাজিক মালিকানা’, ‘রাষ্ট্রীয় মালিকানা’ বা ‘সমবায় মালিকানায়’ তার এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হবে না। আত্মসর্বস্ব ব্যক্তিস্বার্থবোধের কারণে সে পুঁজিবাদী ব্যক্তিমালিকানার পক্ষে দাঁড়ায়। এই সমাজে বিজ্ঞানচিন্তা বা আধ্যাত্মিকশিক্ষা কোনটিই সে ভালো ভাবে পায়নি। ফলে সে নিশ্চিত নয় হুরসমেত বেহেশত আছে কী নেই। কিন্তু যদি থেকে থাকে, তাহলে সে সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না। ফলে সে শুক্রবারে মসজিদে যায়। পর্নোভিডিও দেখে এসে, ফেসবুকে ‘ইসলাম নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান, আলহামদুলিল্লাহ্’ স্ট্যাটাস দেয়। ধর্ম তার কাছে ওই অনন্তকাল ব্যক্তিগত ভোগের ব্যাপারই। সে ধর্মের সমালোচনায় ক্ষিপ্ত হয়, আল্লাকে ভালোবেসে নয়, তার ভোগের স্বপ্ন ‘মিথ্যে’, এই কথা সে সহ্য করতে পারে না। এই আত্মসর্বস্ব, ভোগবাদী, চরম স্বার্থপর মানসিকতার কারণে, সে পুঁজিবাদ সমর্থন করে, সমাজতন্ত্রের বিরোধিতা করে, বউকে হিজাব পরায়, ‘গণতন্ত্র’ নিয়ে গলা ফাটায় কারণ এই ‘গণতন্ত্র’ থাকলে পুঁজিবাদী ব্যবস্থাটি আরও ভালো চলবে এবং ভবিষ্যতে সে সুযোগ পাবে বড়লোক হওয়ার। এখন যা কেবল সরকারি দলের দখলে। ব্যক্তিমালিকানাধিন পুঁজিবাদী ব্যবস্থার শ্রমিক শোষণ, হত্যা, নিপীড়ন তার কাছে ‘রিস্ক না নিলে বড়লোক হওয়া যায় না’, ধরনের সমস্যা। সকলে মিলে ভালো থাকার, সহভাগিতার, সুষমবণ্টনের, প্রত্যেক মানুষের মানবিক বিকাশের জন্য যে মূল্যবোধ, জ্ঞান, সংবেদনশীলতা ও সহমর্মিতার আবেগ দরকার, এগুলো আকাশ থেকে আসে না। সমাজ থেকে, সাম্যবাদী রাজনীতির ক্লাস থেকে তরুণেরা এই শিক্ষা পেতে পারতো। বাংলাদেশের শ্রমিক পুড়িয়ে মারা, নিপীড়ন, বেকারত্ব, ইত্যাদি পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সংকট। একই সঙ্গে, সাম্যবাদী রাজনীতির ব্যর্থতাও প্রকাশ করে। ফেসবুক থেকে